আর্থিক সংকট কাটাতে কিংবা ভালো বিনিয়োগের সুযোগ নিতে সারাবছরই স্বর্ণের অলঙ্কার বিক্রি করে থাকেন ব্যবহারকারীরা (ক্রেতা)। কিন্তু, করোনামহামারিতে ব্যবহারকারীদের স্বর্ণের অলঙ্কার বিক্রির পরিমাণ অনেক বেড়েছে।
জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, অন্য সময়ের তুলনায় বর্তমানে ২০ শতাংশ বেড়ে গেছে ক্রেতাদের স্বর্ণালঙ্কার বিক্রির পরিমাণ। অবশ্য এর আরও একটা বড় কারণ হচ্ছে স্বর্ণের মূল্য বৃদ্ধি। এর ফলে বেশি দামে স্বর্ণালঙ্কার বিক্রি করছে ব্যবহারকারীরা।
করোনার কারণে স্থবির অর্থনীতির উৎপাদনসহ বিভিন্ন খাত বিপর্যয়ের মুখে পড়লে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা সোনার পিছনে ছুটতে শুরু করেন, এমনকি বিনিয়োগও করতে থাকেন। আর এই কারণেই ধাতুটির দাম বিশ্ববাজারে বাড়তে থাকে। দাম বৃদ্ধির ধারায় বর্তমানে দেশের বাজারে প্রতিভরি ২২ ক্যারেট সোনা বিক্রি হচ্ছে ৭৬ হাজার ৪৫৭ টাকায়। ২১ ক্যারেটের দাম ৭৩ হাজার ৩০৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের দাম ৬৪ হাজার ৫৬০ টাকা। এছাড়াও এক ভরি সনাতন সোনার দাম পড়ছে ৫৪ হাজার ২৩৮ টাকা।
রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মার্কেটের ব্যবসায়ীরা, মানুষের আয় কমে যাওয়া ও সোনার দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন স্বর্ণের বিক্রি একদম নেই বললেই চলে। খুব প্রয়োজন হলে অল্প পরিমাণ স্বর্ণের অলঙ্কার কিনছেন গ্রাহকরা। যারা দোকানে আসছেন তাদের আবার বেশিরভাগই আসছেন আগে কেনা অলঙ্কার বিক্রি করতে।
সোনা ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাজুসের প্রচলতি নির্দেশনা অনুযায়ী, যে দোকান থেকে গ্রাহক অলঙ্কার কিনেছিলেন সেই দোকানে বিক্রি করতে এলে বিক্রিমূল্যের চেয়ে ২০ শতাংশ কম দামে তারা কিনে নিচ্ছেন। আর তা পরিবর্তন করে অন্য কোন অলঙ্কার কিনলে বিক্রি করতে আসা অলঙ্কারের দাম ১০ শতাংশ কম হিসাব করে তা পরিবর্তন করে দিচ্ছেন তারা।
এ প্রসঙ্গে বাজুসের সহ-সভাপতি ডা. দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহিন বলেন, মানুষের আর্থিক অবস্থা এখন ভালো নেই। তাই তাদের স্বর্ণের অলঙ্কারের বিক্রি কমে গেছে। উল্টো ক্রেতাদের অলঙ্কার বিক্রির পরিমাণ বেড়ে গেছে। করোনামহামারি শুরু থেকেই এই পরিমাণ বাড়ছিল। বর্তমানে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ক্রেতাদের স্বর্ণের অলঙ্কারের বিক্রির পরিমাণ ২০ শতাংশ বেড়ে গেছে।
করোনার ধাক্কা কমে এলে হয়তো আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বর-জানুয়ারি মৌসুমে সোনার বিক্রি বাড়তে পারে। এমন আশার কথাও জানান তিনি।
আনন্দবাজার/এফআইবি