বিশ্ববাজারে দর বৃদ্ধির অজুহাতে দেশের বাজারে ক্রমাগত বেড়েই চলেছে ভোজ্যতেল ও চিনির দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি বাজারে পাম অয়েলের দাম বেড়েছে মণে ১০০ টাকা। একই সময়ে মণপ্রতি ৫০ টাকা করে দর বেড়েছে চিনির।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বুকিং দরের সঙ্গে সমন্বয় করে দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে কোনো স্বচ্ছতা না থাকায় পণ্য দুটি নিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে সাধারণ ক্রেতাদের।
দেশে বৃহত্তম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জ ঘুরে জানা গেছে, বর্তমানে প্রতি মণ পাম অয়েল বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৮৫০ টাকায়। অথচ মাত্র এক সপ্তাহ আগে যা বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকা কম অর্থাৎ ২ হাজার ৭৫০ টাকায়। ছয় মাস আগে পণ্যটির মণপ্রতি সর্বোচ্চ দাম ছিল ২ হাজার ৩০০ টাকা। সে হিসেবে ছয় মাসে পণ্যটির দাম বেড়েছে মণে ৫৫০ টাকা। সপ্তাহে ১০০ টাকা বেড়ে সুপার পাম অয়েলের (অধিক পরিশোধিত পাম অয়েল) মণপ্রতি মূল্য দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ১০ টাকায়। ছয় মাস আগে সুপার পাম অয়েলের দাম ছিল সর্বোচ্চ ২ হাজার ৫০০ টাকা। সে হিসেবে এ সময় পণ্যটির দাম বেড়েছে মণে ৫১০ টাকা। এছাড়া সয়াবিন দীর্ঘদিন প্রতি মণ ৩ হাজার ১০০ টাকায় কেনাবেচা হলেও এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ২৮০ টাকা থেকে ৩ হাজার ৩০০ টাকায়।
সাধারণ পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, ছয় মাসের মধ্যে ভোজ্যতেলের এ অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি আন্তর্জাতিক বাজারের মূল্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন।
এদিকে ভোজ্যতেলের পাশাপাশি ক্রমাগত বাড়ছে চিনির দামও। গতকাল পাইকারি বাজারে প্রতি মণ চিনি কেনাবেচা হয়েছে ২ হাজার ৫০ টাকায়। এক সপ্তাহের ব্যবধানে পণ্যটির দাম বেড়েছে মণে ৫০ টাকা।
এ বিষয়ে খাতুনগঞ্জের ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী অসীম কুমার দাশ বলেন, অনেক দিন ডিও লেনদেন বন্ধ থাকলেও দুই মাস ধরে বাজারে লেনদেন বেড়েছে। নতুন নতুন ক্রেতা-বিক্রেতার আবির্ভাব হওয়ায় ডিওর বিপরীতে স্লিপ বাণিজ্য এখন রমরমা। এ কারণে মিলগেটে পণ্যের চাহিদা অনুপাতে সরবরাহ না থাকার পাশাপাশি বিশ্ববাজারে বুকিং দর বেড়ে যাওয়ায় ভোজ্যতেলের দাম প্রতিদিনই বাড়ছে।
খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জামাল হোসেন বলেন, সরকারি বাণিজ্যসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে ভোগ্যপণ্যসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর সমন্বয়হীনতার কারণে দেশের ভোগ্যপণ্যের দামের অস্থিরতা কমছে না। চাহিদা, আমদানি, মজুদ ও সরবরাহের সঠিক পরিসংখ্যান না থাকার কারণে অতি চাহিদাসম্পন্ন পণ্যগুলোর দাম নিয়ে কারসাজির সুযোগ থাকে। সরকারের উচিত নিত্যপণ্যের বাজারকে স্থিতিশীল রাখতে একটি সেল গঠনের মাধ্যমে নিরবচ্ছিন্ন তদারকি বজায় রাখা।
আনন্দবাজার/ডব্লিউ এস