ঢাকা | শনিবার
২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বেনাপোল বন্দরে আমদানি রফতানি অচল হওয়ার শঙ্কা

বেনাপোল স্থলবন্দরে পাঁচটি পাঁচ টন ফর্কলিফটের মধ্যে চারটিই অচল হয়ে গেছে। পাশাপাশি বন্দরের সবচেয়ে বড় ২৫ টনের ফর্কলিফটটি অকেজো থাকায় মালামাল খালাসে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটছে। অধিকাংশ ক্রেন বেশির ভাগ সময় অকেজো থাকায় দেখা দিয়েছে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যাওয়ার শঙ্কা।

বন্দর কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বেনাপোল বন্দরে ২৫ টন ধারণক্ষমতার ফর্কলিফট রয়েছে একটি ও পাঁচ টনের ফর্কলিফট রয়েছে পাঁচটি। এর মধ্যে চারটি দীর্ঘদিন ধরে অচল। ৪০ টন, ৩৫ টন ও ১৯ টনের ক্রেন আছে একটি করে। আর ১০ টনের ক্রেন আছে দুটি।

বন্দর ব্যবহারকারীরা বলছেন, বন্দরের গুদামে জায়গার অভাবে পণ্য বের করার পর নতুন পণ্য ঢোকাতে হচ্ছে। খালাসের অভাবে পণ্যবোঝাই ট্রাক বন্দরের ভেতর দাঁড়িয়ে থাকছে দিনের পর দিন। ট্রাক থেকে পণ্য নামানোর অনুমতি মিললেও ক্রেন বা ফর্কলিফট মিলছে না। ফলে জায়গা ও ক্রেন সংকটে বিপাকে পড়েছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা।

বন্দর ব্যবহারকারীদের অভিযোগ, কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী বন্দরের ড্রাইভার ও ইঞ্জিনিয়ারদের যোগসাজশে এসব ফর্কলিফট ও ক্রেন ইচ্ছাকৃতভাবে অচল করে রাখেন। মেরামতের জন্য যেসব যন্ত্রাংশ কেনা হয় তার অধিকাংশই থাকে পুরনো। যেকারণে মাস না ঘুরতেই ফের অচল হয়ে পড়ে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ-ভারত চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক মতিয়ার রহমান জানান, এ বন্দর দিয়ে দেশের সিংহভাগ শিল্প-কলকারখানা, গার্মেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজ ও বিভিন্ন প্রকল্পের মেশিনারিজ আমদানি করা হয়। আধুনিক ক্রেন ও ফর্কলিফট ছাড়া এ-জাতীয় পণ্য বন্দরে খালাস করা সম্ভব না। বন্দরটিতে এখন পণ্যজট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ৩৬ হাজার টন ধারণক্ষমতার বন্দরে প্রতিদিন এক-দেড় লাখ টন পণ্য ওঠানামা করা হয়।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, ধারণক্ষমতার চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ পরিমাণ মালামাল বন্দরে ঝুঁকি নিয়ে রাখা হচ্ছে। মালামাল রাখার জায়গা না থাকায় প্রতিদিন কয়েকশ ট্রাক মালামাল নিয়ে বন্দরের পাশের সড়কে বিভিন্ন স্থানে দাঁড়িয়ে থাকছে দিনের পর দিন। এ কারণে কমে যাচ্ছে রাজস্ব আদায়।

যশোর চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি ও আমদানিকারক মিজানুর রহমান খান জানান, বেনাপোল দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর। অথচ এখানে কোনো আধুনিকতার ছোঁয়া নেই। অর্ধশত বছরের পুরনো মেশিনারিজ দিয়ে পণ্য ওঠানামা করানো হচ্ছে। এতে অনেক সময় পণ্য খালাসে ধীরগতিসহ আমদানীকৃত পণ্যের ক্ষতি হচ্ছে।

এ ব্যাপারে বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক আবদুল জলিল মেশিনারিজ সমস্যার কথা স্বীকার করে বলেন, বারবার তাগাদা দেয়ার পরও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সাড়া দিচ্ছে না। বিষয়টি জানিয়ে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে একটি চিঠি দিয়েছি। আশা করছি, খুব তাড়াতাড়ি সমস্যার সমাধান হবে।

আনন্দবাজার/ডব্লিউ এস

সংবাদটি শেয়ার করুন