দীর্ঘদিন বাণিজ্য যুদ্ধের পর এ বছরের জানুয়ারিতে প্রথম দফার একটি বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছায় যুক্তরাষ্ট্র এবং চীন। ওই চুক্তির শর্ত অনুযায়ী দ্বিতীয় দফার চুক্তির ব্যাপারে আলোচনার কথা ছিল গত ১৫ আগস্ট। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ওই আলোচনা স্থগতি করে দেয়। কিন্তু গেল সোমবার দু’দেশের প্রতিনিধিদের ওই স্থগিত আলোচনাটি সম্পন্ন হয়েছে। তবে এ আলোচনা গঠনমূলক হয়েছে বলে জানিয়েছে অংশ নেওয়া প্রতিনিধিরা।
জানা গেছে, প্রতিশ্রুত এ আলোচনা সম্পন্ন হয় ফোনকলের মাধ্যমে। এতে অংশ নেন মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি রবার্ট লাইথিজার এবং অর্থমন্ত্রী স্টিভেন মুচিন। অপরদিকে চীনের ভাইস প্রিমিয়ার লিউ হি। আলোচনা শেষে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি অফিস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, উভয় পক্ষই উন্নতি দেখছে এবং দ্বিতীয় দফার চুক্তি করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে নিশ্চিত করেছে।
দেড় বছরের বেশি সময় বাণিজ্য যুদ্ধের পর প্রাথমিক বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করল যুক্তরাষ্ট্র এবং চীন। নতুন বাণিজ্য চুক্তি অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র থেকে পণ্য আমদানি বাড়িয়ে ২০ হাজার কোটি ডলারের ওপরে নিয়ে যাবে চীন। এর মধ্যে কৃষিপণ্য আমদানি বাড়াবে তিন হাজার ২০০ কোটি ডলারের। পাশাপাশি শিল্পপণ্য সাত হাজার কোটি ডলার, বৈদ্যুতিক সামগ্রী পাঁচ হাজার ২০০ কোটি ডলার এবং সেবা খাতে তিন হাজার ৮০০ কোটি ডলারের আমদানি বৃদ্ধি করবে চীন। পাশাপাশি বুদ্ধিবৃত্তিক পণ্য চুরির যে অভিযোগ রয়েছে, সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে সম্মত হয়েছে চীন। এজন্য আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া সহজ করা হবে।
নির্বাচনী প্রচারণার জন্য ট্রাম্প বলেন, এখন চীনের সাথে আলোচনা সম্ভব নয়। এতে দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তির ব্যাপারে আবার অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। সেই সাথে এই অনিশ্চয়তাকে আরও বাড়িয়ে দেয় চীনা অ্যাপ নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে ট্রাম্পের দেওয়া নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু দেরিতে হলেও প্রতিশ্রুত আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়াকে ইতিবাচক হিসেবেই নিচ্ছেন বিশ্লেষকরা।
কিন্তু বিশ্বের শীর্ষ দুই অর্থনীতির মধ্যকার এ আলোচনা প্রথম পর্বের তুলনায় আরও জটিল হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। তাই যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চুক্তি হলেও বিশ্ব অর্থনীতিতে বিদ্যমান আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বাণিজ্যযুদ্ধের প্রকৃত প্রভাব বুঝতে কয়েক বছর সময় লেগে যেতে পারে। এমনকি এ বছর যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের প্রবৃদ্ধি কমারও পূর্বাভাস রয়েছে। অনেক ব্যাপারে এখনও সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেনি দু’দেশ।
আনন্দবাজার/এইচ এস কে