সকল খাতে ঋণের সর্বোচ্চ সুদ ৯ শতাংশে নামিয়ে আনা হলেও ক্রেডিট কার্ডে এখনো ইচ্ছেমতো সুদ আদায় করছে ব্যাংকগুলো। বর্তমানে ক্রেডিট কার্ডে সর্বোচ্চ ২৭ শতাংশ পর্যন্ত সুদ নেয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আবু ফরাহ মো. নাছের বলেন, ক্রেডিট কার্ড ব্যবসায় ব্যাংকের খরচ বেশি। তাই ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকে ক্রেডিট কার্ডের সুদ পুনর্নির্ধারণের দাবি উঠেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছে। আশা করছি, শিগগিরই এ বিষয়ে নতুন নির্দেশনা দেওয়া সম্ভব হবে।
২০১৭ সালের ১১ মে ক্রেডিট কার্ডের ব্যবসা পরিচালনা নিয়ে নীতিমালা জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই নীতিমালায় বলা হয়, বিদ্যমান ভোক্তা ঋণের সর্বোচ্চ সুদের অতিরিক্ত ৫ শতাংশ বেশি সুদ হবে ক্রেডিট কার্ডে। এই বিষয়ে ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকে তখনই আপত্তি তোলার পর একই বছরের ৩ আগস্ট সংশোধনী এনে বলা হয়, অন্য যেকোনো ঋণের সর্বোচ্চ সুদের তুলনায় ক্রেডিট কার্ডে অতিরিক্ত ৫ শতাংশ বেশি সুদ নিতে পারবে ব্যাংকগুলো। ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে এটা কার্যকর হওয়ার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু গত আড়াই বছরেও নীতিমালা অনুযায়ী সুদহার কার্যকর করেনি ব্যাংকগুলো।
নীতিমালা কার্যকর হলে বর্তমানে ক্রেডিট কার্ডে সর্বোচ্চ সুদ হতো ১৪ শতাংশ। গত ১ এপ্রিল থেকে ক্রেডিট কার্ড ছাড়া অন্য সব ঋণের সর্বোচ্চ সুদ ৯ শতাংশ ঠিক করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ফলে ১ এপ্রিল থেকে ক্রেডিট কার্ডে সর্বোচ্চ সুদ হওয়ার কথা ১৪ শতাংশ। তবে এই নির্দেশনা অমান্য করে ক্রেডিট কার্ডে ব্যাংকগুলো আগের মতোই ২৭ শতাংশ পর্যন্ত সুদ নিচ্ছে।
এ বিষয়ে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক চেয়ারম্যান ও বেসরকারি মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, অন্য সব খাতে ঋণের সুদ ৯ শতাংশ হওয়ায় নীতিমালা অনুযায়ী ক্রেডিট কার্ডের সর্বোচ্চ সুদ হয় ১৪ শতাংশ। কিন্তু এই ১৪ শতাংশ সুদে ক্রেডিট কার্ডের ব্যবসা করা সম্ভব নয়। কারণ ক্রেডিট কার্ড ব্যবসা পরিচালনার খরচ অনেক বেশি।
তিনি আরও বলেন, ক্রেডিট কার্ড লাইফস্টাইল প্রডাক্ট। পৃথিবীর সব জায়গায় এর সুদের হার ২২-২৩ শতাংশ। তাই আমরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে এই সেবার সুদের হার পুনর্নির্ধারণের দাবি জানিয়েছি। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পুনর্বিবেচনার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
আনন্দবাজার/ডব্লিউ এস