ঈদের পর থেকে এখন পর্যন্ত পুঁজিবাজারে চার কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে। এতে প্রায় আট হাজার কোটি টাকা ফিরে পেয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। ঈদের আগের শেষ সপ্তাহেও মোটা অঙ্কের অর্থ ফিরে আসে পুঁজিবাজারে। এর কারণে দুই সপ্তাহে পুজিবাজারে ফিরেছে প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা। তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে এ অর্থ পুঁজিবাজারে ফিরেছে।
ঈদের পরে বৃদ্ধি পেয়েছে সবকটি মূল্য সূচক। একই সঙ্গে লেনদেনের পরিমাণ বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। পাশাপাশি লেনদেনে অংশ নেয়া অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ২৬০ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। আর কমেছে ৪২টির। অন্যদিকে ৫৭টির দাম অপরিবর্তিত আছে।
এতে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৩৩ হাজার ৬৮৫ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল তিন লাখ ২৫ হাজার ৭৩২ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বৃদ্ধি পেয়েছে সাত হাজার ৯৫৩ কোটি টাকা।
তার আগের সপ্তাহে বাজার মূলধন বাড়ে আট হাজার ২০৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ দুই সপ্তাহে টানা উত্থানে বাজার মূলধন বাড়ল ১৬ হাজার কোটি টাকার ওপরে। বাজার মূলধন বাড়ার অর্থ তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের পরিমাণ সম্মিলিতভাবে ওই পরিমাণ বেড়েছে।
অপরদিকে গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১৫০ দশমিক ৪০ পয়েন্ট। এতে টানা সাত সপ্তাহ সূচক বেড়েছে। আগের ছয় সপ্তাহে ১৩৩ দশমিক ৪৯ পয়েন্ট, ১১ দশমিক ৮৩ পয়েন্ট, ৭ দশমিক ৫৫ পয়েন্ট, ৭৪ দশমিক ৮৩ পয়েন্ট, ১৭ দশমিক ৪৫ পয়েন্ট এবং ৬ দশমিক ৭৩ পয়েন্ট বাড়ে সূচকটি। অর্থাৎ টানা সাত সপ্তাহের উত্থানে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক বৃদ্ধি পেয়েছে ৪০২ পয়েন্ট।
প্রধান মূল্য সূচকের সঙ্গে গত সপ্তাহে বেড়েছে ডিএসইর শরিয়াহ্ সূচক। শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত এ সূচকটি গত সপ্তাহে বেড়েছে ৩৪ দশমিক ৬১ পয়েন্ট। এ সূচকটিও টানা সাত সপ্তাহ বাড়ল। আগের ছয় সপ্তাহে এ সূচকটি ৩০ দশমিক শূন্য ৮ পয়েন্ট, দশমিক ৬১ পয়েন্ট, ৬ দশমিক ৮৫ পয়েন্ট, ১৬ দশমিক ৮৫ পয়েন্ট, ২ দশমিক ৬১ পয়েন্ট এবং দশমিক ৯৪ পয়েন্ট বাড়ে।
বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইর আর একটি সূচক হচ্ছে ডিএসই-৩০। এ সূচকটি গত সপ্তাহে বেড়েছে ৫৫ দশমিক ২৪ পয়েন্ট। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৪৬ দশমিক শূন্য ৫ পয়েন্ট ও তার আগের সপ্তাহে বাড়ে ৫ দশমিক ৮৩ পয়েন্ট। কিন্তু এর আগের সপ্তাহে দশমিক ৬১ পয়েন্ট কমে সূচকটি।
অপরদিকে আগের সপ্তাহের তুলনায় গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৭২৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৪৪৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বৃদ্ধি পেয়েছে ২৭৯ কোটি ২২ লাখ টাকা বা ৬২ দশমিক ৫০ শতাংশ।
আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে দুই হাজার ৯০৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় দুই হাজার ২৩৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। সেই হিসাবে মোট লেনদেন পরিমাণ বেড়েছে ৬৭০ কোটি ১৪ লাখ টাকা।
গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনে ‘এ’ গ্রুপ বা ভালো কোম্পানির অবদান ছিল ৮৪ দশমিক ৩৩ শতাংশ। তাছাড়া ‘বি’ গ্রুপের অবদান ১৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ, ‘জেড’ গ্রুপের ১ দশমিক ২৫ শতাংশ এবং ‘এন’ গ্রুপের দশমিক ৫৯ শতাংশ অবদান ছিল।
আনন্দবাজার/এফআইবি