ঢাকা | শুক্রবার
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গরুর হাটে দাম কম বলছে বিক্রেতা, বেশির অভিযোগ ক্রেতার

ক্রেতা বিক্রেতা আর পশুতে ভরে গেছে পঞ্চগড় জেলার কোরবানির পশুর হাট। পঞ্চগড় জেলার ১৩টি কোরবানির পশুর হাটের একই অবস্থা। শেষ মুহুর্তে কোরবানির পশুর কেনাকাটা জমে উঠেছে। প্রচুর পরিমাণে গরু-ছাগল উঠেছে হাটগুলোতে। গরুর পাশাপাশি ছাগলও প্রচুর বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার গরুর দাম কিছুটা কম বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা। আর বিক্রেতারা বলছেন লাভ নয় গরু বিক্রি করে আসলই উঠছে না।

করোনা আর গরুর ল্যাম্পি স্কিন রোগের কারণে শুরুর দিকে পশুর হাটগুলোতে তেমন একটা ক্রেতা সমাগম না হলেও শেষ সময়ে সেই চিত্র বদলেছে। হাটে গরু ছাগলের আমদানী যেমন বাড়ছে তেমনি শেষ সময়ে ক্রেতাদের ভিড়ও বাড়ছে। এদিকে করোনা পরিস্থিতিতে পশুর হাট গুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানাসহ বিভিন্ন সরকারি নির্দেশনা থাকলেও তার কোনটিই মানা হচ্ছে না।

বুধবার জেলার বোদা উপজেলার বৃহৎ নগরকুমারী হাটে গিয়ে দেখা গেছে ভিড়ের ঠেলায় হাটাই যাচ্ছে না। ছোট বড় সবধরণের গরু ছাগলে ভরে গেছে হাট। হাটের জায়গায় স্থান সংকুলান না হওয়ায় সড়কের ওপর উঠে এসেছে পশুর হাট। এটাই এ এলাকার মানুষের জন্য শেষ হাট। ৪০ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকার মধ্যে গরু বিক্রি হচ্ছে বেশি। অন্যদিকে ৬ হাজার টাকা থেকে ১৫ হাজার টাকার মধ্যে ছাগল বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতারা সন্তুষ্ট হলেও বিক্রেতারা নাখোশ। জেলার বাইরে থেকেও এই হাটে গরু নিয়ে এসেছেন অনেকেই।

এবার ভারতীয় গরু নেই বললেই চলে। সব দেশি খামারিদের পালন করা গরু। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কিংবা পশুর হাটের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাউকেই এসব বিষয়ে কোন প্রদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। পশুর হাট থেকে কারো মাধ্যমে করোনা ছড়িয়ে পড়লে তা ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে সেই শঙ্কা রয়েছে।
জেলার বোদা উপজেলার সাতখামার গ্রামের দাইমুল ইসলাম নামে এক ক্রেতা জানান, গরুর দাম অন্যান্য বারের তুলনায় একটু কম আছে। এবার কোরবানির জন্য ৫৬ হাজার টাকা দাম দিয়ে একটি গরু কিনেছি।


বোদা পৌরসভা এলাকার মিজানুর রহমান নামে এক ক্রেতা জানান ১৫ হাজার টাকা দিয়ে দুটি ছাগল কিনেছি। দাম কম আছে। জেলার বোদা উপজেলার চন্দনবাড়ি ইউনিয়নের গোমস্তাপুর এলাকার পশু বিক্রেতা হানিফ আলী জানান, ভাই প্রচুর গরু আমদানি হয়েছে। এবার গরু বিক্রি করে লাভ হবে না আসলই উঠছে না। যে গরু বিক্রি করেছি ৬৫ হাজার টাকায়। গতবছর ওইরকম গরু বিক্রি হয়েছিল ৮০ হাজার টাকায়।

বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের বেতবাড়ী এলাকার আব্দুল খালেক জানান, এবার গরু বিক্রি করে আসলই উঠবে না। পশু খাদ্য আর পরিচযার্র খরচই উঠছে না। গরুর দাম অনেক কম। আমাদের অনেক লস হবে।

এদিকে জেলার কোন পশুহাটেই স্বাস্থ্য বিধি মানা হচ্ছে না। গাঁদাগাঁদি করে চলাচল করলেও অনেকের মুখেই মাস্ক নেই। কারো মাস্ক থাকলেও তা লাগানো আছে গলায়। এখানে সামাজিক দুরত্ব মানারও কোন সুযোগ নেই।

বোদা নগরকুমারী পশু হাটের ইজারাদার আব্দুর রহমান জানান, আজকের হাটই শেষ হাট। তাই ক্রেতা বিক্রেতার সংখ্যা বেশি। শেষ হাট হওয়ায় সন্ধ্যা পর্যন্ত কেনাকাটা চলবে। স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দুরত্ব মেনে কেনাকাটা করার কথা বলা হলেও কেউই তা মানছেন না।

পঞ্চগড় জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুল মজিদ জানান, আসন্ন কোরবানির জন্য জেলায় ৫০ হাজার পশু চাহিদা রয়েছে। এখানে চাহিদার কোন ঘাটতি হবে না। সাধারণ মানুষ যেন পশুর হাট থেকে সুস্থ্য পশু কিনতে পারে সেজন্য আমাদের ভেটেনারি মেডিকেল টিম বসানো হয়েছে।

পঞ্চগড় জেলায় এবার অনলাইনে কোন পশু বিক্রি হচ্ছে না। জেলা প্রশাসন অনলাইন হাট চালুর উদ্যোগ নিলেও তা বাস্তবায়ন করতে পারেনি।

আনন্দবাজার/শাহী/রায়হান

সংবাদটি শেয়ার করুন