ঢাকা | শনিবার
১৪ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
৩১শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফসলের পাশাপাশি বন্যায় ডুবেছে কৃষকের স্বপ্নও

উত্তরাঞ্চলে সবজি ক্ষেত বলতে আর কিছু অবশিষ্ট নেই। দ্বিতীয় দফার বন্যায় ডুবে গেছে নিম্নাঞ্চলের সবজি ক্ষেত। এছাড়া টানা বৃষ্টির কারণে সবজি ক্ষেতের গোড়া থেকে মাটি সরে যাওয়ায় উঁচু জমির সবজি ক্ষেতও নষ্ট হয়ে গেছে। এ বিষয়ে বগুড়া মহাস্থান বাজারের আড়তদার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, আগামী এক দেড় সপ্তাহের ভেতরে উত্তরাঞ্চলে সবজির দাম দ্বিগুণ হয়ে যাবে। কারণ উত্তরাঞ্চলে সব সবজি বাগানই প্রায় নষ্ট হয়ে গেছে। এতদিন বগুড়া থেকে সারাদেশে সবজি যেত, এখন যে সব জেলায় বন্যা হয়নি সেসব জায়গা থেকে সবজি আনতে হবে।

জানা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে দ্বিতীয় দফার বন্যায় উত্তরাঞ্চলের সিরাজগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, বগুড়া, নওগাঁ, লালমনিরহাট ও রংপুরের বিভিন্ন উপজেলার প্রায় ৪২ হাজার ১৮১ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে সিরাজগঞ্জে ২০ হাজার ৭৩৭ হেক্টর, কুড়িগ্রামে ১০ হাজার, বগুড়ায় ৮ হাজার ৭৫৪, নওগাঁয় ২ হাজার ২৩৪, লালমনিরহাটে ৩৮৭ এবং রংপুরে ৬২ হেক্টর জমির ফসল বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বগুড়ার স্থানীয়রা জানান, উত্তরাঞ্চলের সব হাট-বাজারেই এখন তরকারি খুব সস্তায় পাওয়া যাচ্ছে। কারণ সবজির ক্ষেত নষ্ট হওয়া এবং ডুবে যাওয়ায় সবাই শেষবারের মতো সবজি তুলে বাজারে বিক্রি করতে নিয়ে আসছে। সপ্তাহ খানেক পরেই বাজারে আর সবজি পাওয়া যাবে না। যা পাওয়া যাবে তার দাম অনেক বেশি হবে। নতুন করে সবজি বাগান না করা পর্যন্ত সবজির অভাব চলমান থাকবে।

বগুড়ার জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা আজহার মন্ডল বলেন, এখন পর্যন্ত এ জেলায় ফসলের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৮ হাজার ৭৫৪ হেক্টর জমির সবজি। আর ৩০ হাজার ৬২২ পরিবারের ১ লাখ ২২ হাজার ৩২০ জন মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় আছে।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ তিন সপ্তাহব্যাপী বন্যায় চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চলের বীজতলা, আউশ ধানক্ষেত, পটল, ঢ্যাঁড়সসহ বিভিন্ন শাক-সবজি ক্ষেত, ভুট্টা, চীনাবাদাম, কাউন, তিল, মরিচ ও পাট পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে সাত হাজার হেক্টর জমির ফসল সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। আর বাকি তিন হাজার হেক্টর জমির ফসলের আংশিক ক্ষতি হয়েছে।

আনন্দবাজার/তা.তা

সংবাদটি শেয়ার করুন