রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়ে রফতানি আয় কমার পরেও প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৬ বিলিয়ন ডলারের সর্বোচ্চ রেকর্ড করলো। বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) নতুন এ রেকর্ড হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক কাজী সাইদুর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ ৩ হাজার ৬১৪ কোটি (৩৬.১৪) ডলারে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, রিজার্ভ বাড়ার পেছনে বড় অবদান রয়েছে প্রবাসীদের। তারা কোনও একক মাস হিসেবে বিদায়ী জুন মাসে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে। গত জুন মাসে প্রবাসীরা প্রায় ১৮৩ কোটি মার্কিন ডলার পাঠিয়েছেন।
এর আগে গত ২৩ জুন মাসে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সর্বোচ্চ রেকর্ড ৩৫ বিলিয়ন ডলারে গিয়ে দাঁড়ায়। গত ৩ জুন তা ছিল ৩৪ বিলিয়ন হয়। অর্থাৎ জুন মাসেই রিজার্ভে তিন বিলিয়ন ডলার যুক্ত হয়। অবশ্য বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সর্বোচ্চ রেকর্ড ৩৩ বিলিয়ন ডলার উচ্চতায় ওঠেছিল ২০১৭ সালের ২১ জুন। সেদিন বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৩ হাজার ৩০১ কোটি ডলার। এরপর ২০১৭ সালের ৩১ অক্টোবর, ২ নভেম্বর ও ২৮ ডিসেম্বরে ৩৩ বিলিয়ন ডলারে যায়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, ২০০১ সালে প্রথমবারের মতো এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) আমদানি বিল বাকি রাখতে হয়েছিল বাংলাদেশকে। তবে ১৬ বছর পর ২০১৭ সালে সেই রিজার্ভ গিয়ে ঠেকে ৩৩ বিলিয়ন ডলারে।
জানা যায়, আওয়ামী লীগের ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদের শেষ দিকে বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ ১ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি নেমে এসেছিল। এরপর বিচারপতি লতিফুর রহমানের তত্ত্বাবধায়ক সরকার যখন দায়িত্বে আসে, তখন রিজার্ভে ছিল ১ বিলিয়ন ডলারের কিছুটা বেশি।
এদিকে মহামারি করোনার মধ্যেও প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়ে রেকর্ড গড়েছেন। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১৮ বিলিয়ন (এক হাজার ৮২০ কোটি) ডলারের বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে প্রবাসীরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, স্বাধীনতার পর কোনও অর্থবছরে এতবেশি রেমিট্যান্স আসেনি। এই পরিমাণ রেমিট্যান্সকে তারা এযাবৎকালের মধ্যে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স প্রবাহ বলে দাবি করছেন।
আনন্দবাজার/তা.তা