ঢাকা | বুধবার
৪ঠা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
১৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাড়ে তিনশ হাতির রহস্যজনক মৃত্যু

বতসোয়ানায় গত দুই মাসে রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয়েছে শত শত হাতির। হাতির মৃত্যুর এই ঘটনার কারণ সম্পর্কে এখন পর্যন্ত পরিষ্কার করে তেমন কিছুই জানা যায়নি।

আফ্রিকায় অবস্থানরত সহকর্মীদের বরাত দিয়ে ডক্টর নিয়াল ম্যাককান বলেন, মে মাসের শুরুতে দক্ষিণ আফ্রিকার দেশটি ওকাভাঙ্গো ব-দ্বীপে প্রায় সাড়ে ৩০০ এর বেশি হাতির মরদেহ দেখা গেছে।

হাতিগুলো কেন মারা যাচ্ছে, সে বিষয়ে কেউ কোন ধারণা দিতে পারছে না। দেশটির সরকার বলছে হাতিগুলোর মৃত্যুর কারণ খুঁজতে ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা চলছে, যার রিপোর্ট আরো সপ্তাহখানেক পরে পাওয়া যাবে।

আফ্রিকার মোট হাতির প্রায় এক-তৃতীয়াংশ রয়েছে বতসোয়ানায়।

যুক্তরাজ্য ভিত্তিক দাতব্য প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল পার্ক রেসকিউর কর্মকর্তা নিয়াল ম্যাককান জানান, স্থানীয় পরিবেশ সংরক্ষণবাদীরা গত মে মাসের শুরুর দিকে ব-দ্বীপের ওপর দিয়ে বিমান ভ্রমণকালে কিছু হাতির মরদেহ চোখে পড়লে বসতোয়ানার সরকারকে বিষয়টি জানায়।

তিনি বলেন, তারা ঐ এলাকার ওপর দিয়ে তিন ঘণ্টার একটি ফ্লাইটে যাওয়ার সময় ১৬৯টি হাতির মরদেহ দেখতে পায়। সাধারণ দৃষ্টিতে তিন ঘণ্টার ফ্লাইটে ঐ পরিমাণ হাতির মরদেহ দেখতে পাওয়া খুবই অস্বাভাবিক।

ঐ ঘটনার এক মাস পর তদন্ত চালিয়ে তারা আরো অনেকগুলো হাতির মরদেহ দেখতে পান। মোট মৃতদেহর সংখ্যা ৩৫০ এর ওপর।

মি. ম্যাককান জানান, যেই বিপুল সংখ্যক হাতি মারা গেছে, তা একেবারেই অস্বাভাবিক। খরা বাদে কোন একটি একক কারণে এত বিপুল সংখ্যক প্রাণী মারা যাওয়ার ঘটনা দেখা যায় না।

বিজ্ঞান বিষয়ক পত্রিকা ফিস’এর খবর অনুযায়ী, এই হাতিগুলোর মৃত্যুর পেছনে চোরাশিকারিদের হাত থাকার সম্ভাবনা আগেই নাকচ করে দিয়েছে বতসোয়ানার সরকার কারণ মৃত্যুর পর হাতিগুলোর দাঁত কেটে নেয়া হয়নি।

ড. ম্যাককান জানান, সেখানে শুধু হাতিই মারা যাচ্ছে, অন্য কোন প্রাণী মারা যাচ্ছেনা। যদি চোরাশিকারিদের দেয়া সায়ানাইডে হাতিগুলো মারা যেতো, সেক্ষেত্রে হাতি বাদে অন্য আরো পশুও মারা যেতো।

সাধারণ প্রক্রিয়ায় অ্যানথ্রাক্স বিষক্রিয়ার সম্ভাবনাও নাকচ করে দিয়েছে ড. ম্যাককান। গত বছর অ্যানথ্রাক্স বিষক্রিয়ায় বতসোয়ানায় ১০০’র বেশি হাতি মারা গিয়েছিল।

তবে বিষক্রিয়া বা কোন রোগের উপস্থিতির সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দিতে পারছেন না তারা।

ড. ম্যাককানের মতে যেভাবে প্রাণীগুলো মারা যাচ্ছে – অধিকাংশ হাতিকেই মুখ থুবড়ে পড়ে থাকতে দেখা গেছে – এবং বাকি হাতিগুলোকে চক্রাকারে ঘুরতে দেখা যাচ্ছে, তাদের স্নায়ুবিক প্রক্রিয়া কোন ধরণের আক্রমণের শিকার হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।

করোনা ভাইরাসের জীবাণু এখন প্রাণীদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে – এই বিষয়টিরও উল্লেখ করেছেন ড. ম্যাককান।

তিনি বলেন, এটি পরিবেশগত বিপর্যয় – তবে জনস্বাস্থ্য বিষয়ক দুর্যোগেও পরিণত হতে পারে।

আনন্দবাজার/তা.তা

সংবাদটি শেয়ার করুন