করোনায় আক্রান্ত হলে শরীরে যে অ্যান্টিবডি তৈরি হয় তা কেবল দুই থেকে তিন মাস পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। উপসর্গ প্রকাশ না পাওয়া আক্রান্ত ব্যক্তিদের উপর চালানো এক গবেষণায় এমনটাই উঠে এসেছে। নেচার মেডিসিনে গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত একটি গবেষণা নিবন্ধে এমনটাই বলা হয়েছে।
তবে এর মানে এই নয় যে এই মানুষগুলো দ্বিতীয়বারের মতো আক্রান্ত হতে পারেন। কারণ বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞ বলেছেন, স্বল্প মাত্রার শক্তিশালী অ্যান্টিবডি তৈরি হলেও তা ভবিষ্যতে সুরক্ষা দিতে পারে। অ্যান্টিবডি ছাড়াও ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়ার জন্য মানুষের শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থায় আছে ‘টি সেল’ ও ‘বি সেল’।
নিবন্ধের লেখকরা সতর্ক করে বলেছেন, কোভিড-১৯ থেকে সেরে উঠলেই কেউ ‘ইমিউনিটি সার্টিফিকেট’ পেয়ে যাবেন, তা ভাবাটা ঠিক হবে না।
সার্স ও মার্স রোগের ভাইরাসসহ অন্যান্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে দেহে তৈরি অ্যান্টিবডিগুলো প্রায় এক বছর পর্যন্ত স্থায়ী হয় বলে মনে করা হয়। বিজ্ঞানীরা আশা করেছিলেন কোভিড-১৯ রোগের জন্য দায়ী নতুন করোনাভাইরাসের অ্যান্টিবডিগুলোও অন্তত একই সময় স্থায়ী হতে পারে।
এদিকে আগের গবেষণাগুলোয় দেখা গেছে উপসর্গ প্রকাশ পেয়েছে এমন কোভিড-১৯ রোগীদের বেশিরভাগের শরীরেই অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। তবে এই অ্যান্টিবডিগুলো কতদিন পর্যন্ত স্থায়ী হয় তা স্পষ্ট নয়।
নতুন গবেষণাটি হয়েছে আক্রান্ত কিন্তু উপসর্গ প্রকাশ পায়নি এমন মানুষদের দেহে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতার প্রতিক্রিয়া দেখতে। গবেষকরা চীনের ওয়াংজু অঞ্চলের উপসর্গ ছাড়া আক্রান্ত ৩৭ জনের সঙ্গে উপসর্গসহ সমসংখ্যক আক্রান্তের তুলনা করেছেন। তারা দেখেছেন যে যাদের উপসর্গ ছিল না তাদের দেহে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার প্রতিক্রিয়া উপসর্গসহ আক্রান্তদের চেয়ে দুর্বল।
করোনাভাইরাসের অ্যান্টিবডিগুলো নিয়ে বেশ কয়েকটি গবেষণা চালানো মাউন্ট সিনাইয়ের আইকান স্কুল অফ মেডিসিনের ভাইরোলজিস্ট ফ্লোরিয়ান ক্র্যামার বলেন, যদি ‘বি সেল’ আবার ভাইরাসের উপস্থিতি টের পায় তবে তারা তাদের স্মৃতি থেকে খুব দ্রুত অ্যান্টিবডিগুলো তৈরি করতে শুরু করে।
আনন্দবাজার/ডব্লিউ এস