সাদা এবং স্বচ্ছ প্লাস্টিকের বোতল মধ্যে ক্লোরিন মেশানো পানি দিয়ে টিনের চাল ফুটো করে বোতলটি স্থাপন করলেই আলোকিত হয় ঘর। যে সব ঘরে দিনের বেলাতেও থাকে অন্ধকার। বিদ্যুৎ, ব্যাটারি—কিছুরই প্রয়োজন হয়না এই বাতির জন্য। তারপরও আলোকিত করে তোলে অন্ধকার ঘরকে। এটিকে বলা হয় ‘বোতল বাতি’।
কয়েক বছর আগে প্রাকৃতিক আলোর এই ব্যবহার ব্যাপক সাড়া পায়। এতে দেশের গরিব এবং বিদ্যুৎহীন মানুষের ঘর আলোকিত হয়ে উঠেছে চমৎকার এই উদ্যোগে। এছাড়া টাকা-পয়সার সংকট থাকার পরও দিনের বেলায় বাধ্য হয়ে যারা ঘরে বিদ্যুৎ জ্বালান, এটি তাদের খুব উপকারে এসেছে। এক বোতল থেকে ৬০ ওয়াটের বাল্বের সমপরিমাণ আলো পাওয়া যায়।
বাংলাদেশের ঢাকা, চট্টগ্রাম ছাড়াও পাহাড়ি অঞ্চলগুলোতে ‘বোতল বাতি’ বেশ ভালো সাড়া পেয়েছে। চট্টগ্রামের বিশ্ববিদ্যালয় পড়া ছাত্রদের সামাজিক সংগঠন ‘লাইটস ফাউন্ডেশন’ বোতল বাতি জনপ্রিয় করতে ফটিকছড়ি উপজেলায় প্রকল্প হাতে নেয়। এবং উপজেলার অনেক পরিবারকে বিনামূল্যে এই বাতি সরবরাহও করেছে সংগঠনটি।
এই ব্যাপারে প্রকল্পের পরিচালক মুহাম্মদ সানজিদুল আলম বলেন, এ বাতি ব্যবহার করলে প্রতি মাসে ১০০ থেকে ২০০ টাকার বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে। একবার লাগালে চার-পাঁচ বছর পর্যন্ত আর কোনো খরচ লাগে না। একটি বাতি স্থাপনে খরচ পড়ে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা।
জানা গেছে, বর্তমানে ‘লিটার অব লাইট বাংলাদেশ’ নামের একটি সংগঠন বিভিন্ন আন্তর্জাতিক এনজিওর সাথে যুক্ত হয়েছে প্রকল্পটিসচল রাখতে। ইতোমধ্যে এই বাতি নির্মাণে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার ২৫ জন তরুণ-তরূণীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। প্রশিক্ষণ শেষে তারা ক্ষুদ্র আকারে ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য প্রকল্প থেকে অর্থও পাচ্ছেন। এবং তাদের তৈরি লাইট যাচ্ছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে, স্থানীয় লোকজনের কাছে।
আনন্দবাজার/এইচ এস কে