ঢাকা | শুক্রবার
১৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
২রা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা

ডিপ্রেশন নতু কিছু নয়। বর্তমানে এই রোগের সংক্রমণ বাড়ছে হুহু করে। কোলকাতার রিজেন্ট পার্ক থানা এলাকায় মঙ্গলবারের (১৬ জুন) দুটি ঘটনা দুই ধরনের অভিজ্ঞতা। একটি ঘটনা বড়ুয়াপাড়া, অন্যটি মাণিক বন্দোপাধ্যায় সরণির। দুই ব্যাক্তির মধ্যে ২ কিলোমিটার দুরত্ব হলেও রোগ একটাই, আদতে ফল হল ভিন্ন।

বড়ুয়াপাড়ায় টলিউডের এক স্ক্রিপ্টরাইটারের আত্মহত্যার পরিকল্পনা নষ্ট করে দিল কলকাতা পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন টলিউডের সেই ব্যক্তি। তার ফেসবুকে লেখা “when i quit”। এই লেখা দেখার সাথে অবাক হয়ে যায় অনেকেই। হাজার প্রশ্ন আর উদ্বেগ উঠে আসে এই লেখায়।

সম্প্রতি কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ)-এর এই পোস্ট নজরে আসতেই তাড়াতাড়ি করে স্থানীয় থানা রিজেন্ট পার্কের কাছে খবর যায়। বিভিন্ন মাধ্যম দিয়ে স্ক্রিপ্টরাইটারের বাড়ির ঠিকানা পেলেও হদিস মেলেনি যুবকের। বাড়ির লোকের থেকে বিভিন্ন সূত্র পেয়ে ওই যুবকের খোঁজ পাওয়া যায় মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন দেখে। বাড়ি থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে একটি দোকান-সহ গ্যারাজে মেলে ওই যুবককে।

অচৈতন্য অবস্থায় তাকে পাওয়া গেলেও একটি সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে সুস্থ বলে জানান। আত্মীয় পরিজনের চিন্তা দূর করে বড়ুয়াপাড়ার বাড়িতে চলে আসেন টলিউডের স্ক্রিপ্ট রাইটার। মানসিক অবসাদের কারণ হিসাবে ব্যক্তিগত একটি সম্পর্কের কথাই প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে। যদিও তার পরিবারের তরফে তার ভাই জানায়, সাম্প্রতিককালে এক জনপ্রিয় অভিনেতার পরিণতির পরে দাদার এই ধরনের পোস্ট অনেকটাই চিন্তা তৈরি করেছিল।

পুলিশের মধ্যস্থতায় ও দ্রুত কাজে ভালোই আছেন দাদা। এই ঘটনার সকালে যখন ঘটল, ঠিক তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মানসিক অবসাদে চলে গেল ১৯ বছরের একটি প্রাণ। মাণিক বন্দোপাধ্যায় সরণিতে মামার বাড়িতে থাকতেন রোহিত গুপ্তা নামে পড়ুয়া। বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের পড়ুয়ার বন্ধ ছিল ক্লাস। অনলাইন ক্লাসের জেরে বন্ধ ছিল বন্ধুদের সঙ্গে মেলামেশা। ঘরে বসে ল্যাপটপ ও মোবাইল হয়েছিল সর্বক্ষণের সাথে।

পুলিশ সূত্রের খবর মামির একটু বকাবকিতেই অভিমান করে রোহিত। তার পরে ঘরে গিয়ে দেখা যায় আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে রোহিত। তার বাড়ির তরফে জানানো হয়, বাড়ির একঘেয়ে জীবন অনেকটাই বিরক্তকর হয়ে উঠেছিল তার কাছে। মানসিক অবসাদের একটি কারন তো অবশ্যই। থানা একই, দূরত্ব মাত্র ২ কিলোমিটার, পরিণতি ভিন্ন।সসাম্প্রতিককালের একটি ঘটনা যেন বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছে ভাল শিক্ষা বা প্রযুক্তি নয়, ভাল সমাজটারই অভাব।

আনন্দবাজার/শাহী

সংবাদটি শেয়ার করুন