ঢাকা | শুক্রবার
২৪শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
১০ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লাদাখে টানা আট ঘণ্টার লড়াই, বেড়েছে মৃত্যুর সংখ্যা

লাদাখের সুউচ্চ পর্বতমালায় গালওয়ান নদীর পূর্ব পার ধরে পেট্রোলিংয়ে বের হয়েছিল ভারতীয় সেনার বিহার রেজিমেন্টের একটি পেট্রোলপার্টি। তাদের সাথেই চীনা সেনার তীব্র সংঘাত হয়। ঘটনাটি সোমবার (১৬ জুন) গভীর রাতের।

 গত প্রায় এক মাস যাবত এই অঞ্চলটি নিয়ে বিতর্ক চলছে ভারত এবং চীনের মধ্যে। ভারতের অভিযোগ, লাইন অফ কন্ট্রোল পার করে ভারতে ঢুকে পড়েছে চীনের সেনা। চীনের পাল্টা অভিযোগও এক। বিষয়টি নিয়ে সীমান্তে ভারত এবং চীনের সেনা একাধিকবার হাতাহাতিতে জড়িয়েছে। দুই পক্ষই সেনা এবং অস্ত্র মজুত করে রেখেছিল সীমান্তের খুব কাছে। তারই জেরে গত সপ্তাহে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকও করা হয় সীমান্তে। কিন্তু সোমবার রাতের ঘটনা সেই পুরো প্রক্রিয়াতেই জল ঢেলে দিয়েছে।

ভারতীয় সেনার এক আহত জওয়ানের ভাষ্য অনুযায়ী, মাঝ রাতে পেট্রোলিংয়ের সময় বিহার রেজিমেন্ট দেখতে পায় গালওয়ান নদীর পশ্চিম প্রান্তে লাইন অফ কন্ট্রোল পার করে পেট্রোল পয়েন্ট ১৪ তে টেন্ট তৈরি করেছে চীনের আর্মি। ভারতের দাবি, ওই এলাকা ভারতের। ফলে পেট্রোলপার্টি দ্রুত সেখানে পৌঁছয় এবং হাতাহাতির পর্যায়ে চলে যায়। আহত সেনাদের বক্তব্য, সামান্য হাতাহাতি শুরু হতেই চীনের সেনারা রডে কাঁটাতার জড়িয়ে আক্রমণ শুরু করে। পাল্টা আঘাত করে ভারতীয় সেনারাও। ওই উচ্চতায় অত রাতে ঠান্ডার সাথে মানিয়ে নেওয়াই কঠিন। তাপমাত্রা হিমাঙ্কের অনেক নীচে। সাথে অক্সিজেনের সমস্যা। তার মধ্যে দুই পক্ষের সংঘর্ষ চরমে পৌঁছে যায়।

আহত ভারতীয় সেনা জওয়ানরা নদীতে পড়ে যায়। মঙ্গলবার (১৬ জুন) সকালে বহু সেনার মৃতদেহ নদী থেকে উদ্ধার করা হয়। প্রায় আট ঘণ্টা ধরে দুই পক্ষের মধ্যে লড়াই চলে।

ভারতের অভিযোগ, চীন বেশ কিছু ভারতীয় সেনাকে আটক করে নিজেদের ক্যাম্পে নিয়ে গেছে। সেখানে তাঁদের উপর অত্যাচার চালানো হয়েছে। পরে মঙ্গলবার সকালে দুই পক্ষ বৈঠকে বসলে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

মঙ্গলবার দুপুরে প্রথম সংঘাতের কথা স্বীকার করে বিবৃতি প্রকাশ করেছিল ভারতীয় সেনারা। মঙ্গলবার গভীর রাতে ফের তারা একটি বিবৃতি প্রকাশ করে। সেখানে বলা হয়, অন্তত ২০ জন ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছেন এ লড়াইয়ে। তার মধ্যে একজন অফিসার সহ আহত আরও অনেক।

ডয়চে ভেলেকে ভারতীয় সেনা সূত্র জানায়, বুধবার সকালে নিহতের সংখ্যা আরও বেড়েছে। অন্তত ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং প্রায় ১১০ জন গুরুতর আহত। তাই নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

চীনের সেনা বাহিনীর পক্ষ থেকে অবশ্য এখনও কোনও বিবৃতি প্রকাশ করা হয়নি। সরকারি ভাবে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়েও জানানো হয়নি। তবে চীনের সরকারি সংবাদমাধ্যম জানায়, সে দেশেও বেশ কিছু সেনার মৃত্যু হয়।

আনন্দবাজার/তা.তা

সংবাদটি শেয়ার করুন