ভোক্তার সাথে প্রতারণার করায় থাইল্যান্ডে এক রেস্তোরাঁর দুই মালিককে ১ হাজার ১৪৬ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন থাইল্যান্ডের আদালত। দোষী রেস্তোরাঁ মালিকেরা প্রায় ২০ হাজার মানুষের সাথে থাই মুদ্রায় ৫ কোটি বার প্রতারণা করেছে। বিবিসির একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
রেস্টুরেন্টটির নাম ‘লায়েমগেট ইনফিনিট’, সামুদ্রিক খাবারের রেস্তোরাঁ। গত বছর রেস্তোরাঁটি অনলাইনে অগ্রিম অর্থ দিলে ছাড়ের সুযোগ দিয়ে খাওয়ার এক লোভনীয় অফার দেয়।
তারা ভোক্তার কাছ থেকে অগ্রিম অর্থ নিয়ে নানাধরনের ফুড ভাউচার বিক্রি করা শুরু করে।
একটি অফার ছিল এরকম- ৮৮০ বাথ (২৮ ডলার) দিয়ে সামুদ্রিক খাবারের একটি পুরো মিল খেতে পারবে দশ জন মানুষ। সাধারণত এই খাবারের খরচের থেকেও অনেক সস্তা ছিল এর দাম।
থাই সংবাদমাধ্যম পিবিএস বলেন, প্রথমে যারা ভাউচার কিনেছিল, তারা ওই দামে রেস্তোরাঁটিতে খেতেও পেরেছিল। তারপরে এত লোক অফার বুকিং করা শুরু করে দিল যে, পরবর্তীতে ভোক্তারা অগ্রিম বুকিং করতে গেলে তাদের বলা হয় বুকিং পেতে কয়েক মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
এরপর মার্চ মাসে লায়েমগেট ইনফিনিট হুট করে বলেন, তারা ব্যবসা বন্ধ করে দিবে। তারা জানায় চাহিদা মেটানোর জন্য যথেষ্ট সামুদ্রিক খাবার তারা সংগ্রহ করতে পারছে না।
এরপর যেসব ভোক্তা অগ্রিম ভাউচার কিনেছিল রেস্তোরাঁটি তাদের অর্থ ফিরিয়ে দেবে বলেন রেস্তোঁরাটি। ৮১৮জন খদ্দের যারা অভিযোগ করেছিল তাদের মধ্যে ৩৭৫জন তাদের অর্থ ফিরে পেয়েছে।
পরে আরও কয়েকশ মানুষ প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করে প্রতিষ্ঠান এবং এর দুই মালিকের বিরুদ্ধে।
কয়েকশ মানুষ অভিযোগ করার পর রেস্তোরাঁর দুই মালিক আপিচার্ট বোওয়ার্নবানচারাক ও প্রাপাস্যর্ন বোওয়ার্নবানচাকে ভুয়া বার্তা দিয়ে মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেবার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়।
তারা ৭২৩টি ভিন্ন অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয় ও তাদের দুজনকেই ১,৪৪৬ বছর করে কারাদণ্ড দেয় দেশটির আদালত।
কিন্তু তারা দোষ স্বীকার করেছিল বলে আদালত তাদের সাজার মেয়াদ প্রত্যেকের ক্ষেত্রে অর্ধেক কমিয়ে একেক জনের ক্ষেত্রে ৭২৩ বছর করে।
কিন্তু থাই আইনে জনগণের সাথে প্রতারণার অভিযোগে সর্বোচ্চ কারাদণ্ডের মেয়াদ বিশ বছর।
তাদের ৭২৩ বছর করে কারাদণ্ড হলেও তাদের আসলে কারাবাস করতে হবে থাই আইন অনুযায়ী বিশ বছরের সর্বোচ্চ মেয়াদ পর্যন্ত।
আনন্দবাজার/এফআইবি