দেশে চলমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে ধান উৎপাদন ধরে রাখতে সর্ব চেষ্টা করেছে কৃষকরা। শ্রমিকের অভাবে নিজেরাই করেছেন ধানের পরিচর্যা। অবশেষে তারা বোরো ধান ঘরে তুলতে সক্ষম হচ্ছেন। গতকাল বুধবার পর্যন্ত হাওরাঞ্চলে ৭৫ ভাগ ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। তবে ধানের মূল্য নিয়ে শঙ্কায় কৃষকরা।
সরকার প্রণোদনা ঘোষণা করলেও শর্তের বেড়াজালে আটকা পড়ছেন অধিকাংশ বর্গাচাষি। ধানের দাম না থাকায় ব্যাপক লোকসান হয়েছে গত মৌসুমে। সেই ক্ষতি এখনো পুষিয়ে উঠতে পারেনি অনেকে। এরইমধ্যে বেড়েছে সেচ খরচ। ফলে বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকার ঘোষিত প্রণোদনা যেন সর্বস্তরের কৃষকদের নিকট পৌঁছায় সেই পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান তারা।
এ প্রসঙ্গে কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক বলেন, প্রতিকূল পরিবেশে হাওরের কৃষক যাতে সহজে যন্ত্রপাতি কিনতে পারে সেজন্য যন্ত্রের দামের ৩০% দেয় কৃষক এবং ৭০% দেয় সরকার। একই সাথে, দেশের অন্য এলাকা থেকে হাওরের আগাম বোরো ধান কাটার জন্য কম্বাইন হারভেস্টার ও রিপার নিয়ে আসা হয়েছে। এর ফলে ইতোমধ্যে হাওরের ৬৫% বোরো ধান কৃষক ঘরে তুলতে পেরেছে। সুনামগঞ্জসহ অতি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় ৭৫ ভাগ ধান কাটা হয়েছে। আগামী মাস থেকে সরকার কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয় করবে। কৃষকরা যাতে ন্যায্যমূূল্য বঞ্চিত না হয় সেজন্য প্রয়োজনে ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আগামি ২৬ এপ্রিল থেকে বোরো ধান কেনা শুরু করবে সরকার, যার পরিমাণ ৬ লাখ মেট্রিক টন। কিন্তু বাজারে ধানের দাম ঠিক রাখতে এই লক্ষ্যমাত্রা আরো বাড়ানো দরকার বলে মনে করেন কৃষকরা।
কিশোরগঞ্জের চাষি আব্দুল হামিদ মিয়া বলেন, এবারে করোনা পরিস্থিতিতে বহুপ্রতিকূলতা উপেক্ষা করে ধান ঘরে তোলা হচ্ছে। এখন কাঁচা ধান বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা। আর ধান শুকানোর পরে সেটি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা। অথচ বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। করোনায় শ্রমিকও সঙ্কট দেখা গেছে। উচ্চমূল্য দিয়ে শ্রমিক নিতে হচ্ছে। এক্ষেত্রে সরকারকে বেশি বেশি ধান কিনে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার দাবি জানান তিনি।
আনন্দবাজার/ টি এস পি