ঢাকা | বুধবার
২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নেপালে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা এত কম কেন

নেপালের প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগীর সংক্রমণ খুব একটা মারাত্মক কিছু ছিল না। নেপালে প্রথম করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তি ছিলেন ৩২ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থী। চীনের উহান ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিতে পড়াশোনা করছিলেন তিনি। তবে পূর্ণ পরিচর্যা ও যথোপযুক্ত চিকিৎসার পর তাকে সুস্থ করতে সময় লেগেছে ১৩ দিন।

ওই শিক্ষার্থীর পর এখন পর্যন্ত দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে আর মাত্র তিনজন। গতকাল পর্যন্ত দেশটিতে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত মোট রোগী পাওয়া গেছে সবমিলিয়ে চারজন।

যেখানে উহানে প্রথম সংক্রমণের অল্প কিছুদিনের মধ্যেই নেপালে প্রথম করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে, সেখানে পরের দুই মাসে আর মাত্র দুজন শনাক্ত হওয়ার বিষয়টি নিসন্দেহে আশ্চর্যজনক।

এ প্রসঙ্গে ইমিউনোলজি অ্যান্ড বায়োটেকনোলজির পোস্টগ্র্যাজুয়েট সমীর দীক্ষিত জানান, মানুষ ভয়াবহ পর্যায়ে আক্রান্ত না হওয়ার কারণ হচ্ছে, নেপালে ভাইরাসটির স্ট্রেইন তুলনামূলক দুর্বল অথবা নেপালিদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা অনেক বেশি।

তিনি বলেন, পরীক্ষা না করানোটাও আক্রান্তের সংখ্যা না বাড়ার একটি বড় কারণ হতে পারে। আমি মনে করি, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা উন্নয়নশীল দেশগুলোয় একটি বড় ভূমিকা রাখছে।

অন্যদিকে নেপালিদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতার তত্ত্বকে সরাসরি বাতিল করে দিয়েছেন দেশটির পাতান হাসপাতালের চিকিৎসক বুদ্ধ বাসনিয়াত। তিনি জানান, আমরা যে কোনোভাবে রোগ প্রতিরোধী, তা এ মুহূর্তে ভাবাটাই বোকামি। এর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। আমি মনে করি, এটি এক ধরনের অনুমাননির্ভর ভিত্তিহীন ধারণা।

তিনি বলেন, আশা করি এখানে মহামারীর প্রকোপ দেখা দেবে না। আমি আশা করি, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা নিয়ে এসব তত্ত্ব সত্যি প্রমাণ হোক। কিন্তু এটি কোনো একবার প্রাদুর্ভাব ঘটিয়ে চলে যাওয়া ভাইরাস নয় বলে আমার আশঙ্কা। আমাদের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা এমনিতেই বেশ দুর্বল। আমি মনে করি, আমাদের এখন দুর্যোগ মোকাবেলার পরিকল্পনা করা উচিত।

ভাইরাসের উপস্থিতি নিয়ে শঙ্কিত হলেও গণহারে করোনা পরীক্ষা করানোর কোনো প্রয়োজনীয়তা আছে বলে মনে করছেন না সমীর দীক্ষিত। তিনি বলেন, নেপালের মতো উন্নয়নশীল দেশের পরীক্ষা করানোর সামর্থ্য সীমিত। ৮০-৮৫ শতাংশের মতো লোক, যাদের মধ্যে মৃদু লক্ষণ দেখা দেবে; তাদের সবাইকে পরীক্ষা করানোর সম্ভাব্যতা ধোপে টেকানো মুশকিল। এদের আমরা খুঁজে পাব কীভাবে। এক্ষেত্রে একটা কাজ করা যায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরীক্ষা করানো, কিন্তু সেটা কতটা বাস্তবসম্মত। আমাদের জীবন বাঁচানো প্রয়োজন। গোয়েন্দাগিরি নয়।

আনন্দবাজার/ টি এস পি

সংবাদটি শেয়ার করুন