ঢাকা | শনিবার
২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শ্রীপুরে করোনার প্রভাবে ৩০ টাকার পেঁয়াজ ৮০ টাকা

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় করোনাভাইরাসের আতঙ্কে কাঁচা বাজারের ঊর্ধ্বগতিতে বিপাকে স্বল্প আয়ের মানুষ। প্রশাসনের নজরদারির অভাবে অনেকটা বেসামাল হয়ে পড়েছে শ্রীপুরের বাজারগুলো। দ্রুতই বাজারে প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানোর দাবি সীমিত ভুক্তভোগীদের।

আজ শুক্রবার (২০ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টা। উপজেলার মাওনা চৌরাস্তায় অন্যান্য দিনের মতই কাঁচা বাজার করার উদ্দেশ্যে এসেছিলেন গার্মেন্টস শ্রমিক নাজমা বেগম। বাজারে ঢুকেই পেঁয়াজের দাম জিজ্ঞেস করেই দেখেন দাম তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

এছাড়াও রসুন, আদাসহ দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় সকল কাঁচামালের দামই বেড়েছে। প্রায় ঘণ্টা খানেক ঘুরেও তিনি বাজার থেকে কোনো ধরনের পণ্য ব্যাগ বন্দি করতে পারেননি। নাজমা বেগমের মত স্বল্প আয়ের মানুষগুলো হঠাৎ বাজারে এসে এভাবেই আটকে যাচ্ছেন।শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় গাজীপুরের স্থানীয় বাজারগুলোতে কেনাকাটা হয় বেশী। বিশেষ করে শিল্প কারখানার শ্রমিকরা সপ্তাহের বাজার করে নেন এই ছুটির দিনে।

স্থানীয়রা জানান, করোনার প্রভাবে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক বিরাজ করছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেশজুড়ে লকডাউন বা শাটডাউনের খবরে বিভ্রান্ত হয়ে অনেকেই হঠাৎ করে কেনাকাটা বেশি করে নিচ্ছেন। আর এ সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে মুনাফালোভী ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। প্রথম ধাপে বিভিন্ন নিরাপত্তায় ব্যবহার্য স্বাস্থ্য সামগ্রীর দাম দ্বিগুণ হয়ে ওঠে। পরে সাধারণ মানুষের নিত্য ব্যবহার্য খাদ্যপণ্যের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়লেও এখন পর্যন্ত প্রশাসনের নজরদারি দেখা যায়নি স্থানীয় বাজারগুলোতে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই।

উপজেলার সবচেয়ে বড় পাইকারি আড়ত শ্রীপুরের মাওনা চৌরাস্তা। সেখানে গিয়ে দেখা যায় পেঁয়াজ মান ভেদে কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। যদিও দুই দিন আগে এই বাজারে মানভেদে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে। নতুন রসুন ৮০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। প্রতি কেজিতে চালের দাম বেড়েছে ৫-১০ টাকা।

এছাড়াও বেড়েছে সকল ধরনের সবজি ও মশলাজাতীয় পণ্যের দাম। পাইকারি বাজার ছাড়িয়ে খুচরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও দাম বাড়ানো হয়েছে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আড়তদার জানান, অনেক আড়তদার আমদানিকারকের কাছেই পেঁয়াজ মজুত করে রেখেছেন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের সাজা থেকে বাঁচতে তারা সব পেঁয়াজ আড়তে আনছেন না। প্রতিদিন দু-এক ট্রাক পেঁয়াজ এনে বাজারে ছাড়ছেন। এতে বাজারের চাহিদাপূরণ না হওয়ায় দাম বেড়েছে।

শ্রীপুরের মিজানুর রহমান মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক মাহফুজুল হক ইকবাল জানান, জাতির এই ক্রান্তিকালে প্রশাসনসহ সবাই যখন করোনা মোকাবেলায় ব্যস্ত ঠিক সেই সময়ের সুযোগ নিয়ে নিত্যপণ্যের দামবৃদ্ধি করে একটি ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট তৎপর হয়ে উঠছে। তারা ইচ্ছেমত দাম বৃদ্ধি করে সাধারণ মানুষদের ভোগান্তিতে ফেলছে।

স্থানীয় বাজারগুলোতে এখনই প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন।সার্বিক বিষয়ে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এসএম তরিকুল ইসলাম জানান, বিভিন্ন জায়গা থেকে দাম বৃদ্ধির খবর পাওয়া যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতেই তিনি বিভিন্ন এলাকায় মোবাইল কোর্টের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। স্থানীয় বাজারগুলো কঠোরভাবে নজরদারি করা হবে। এ মুহূর্তে দেশে কোনো ধরনের পণ্যের সংকট নেই। তাই দাম বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই।

 আনন্দবাজার/এফআইবি

সংবাদটি শেয়ার করুন