ঢাকা | সোমবার
৭ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
২২শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমায় ব্রয়লার মুরগি

অতিথি আপ্যায়নে মুরগির আধিপত্য রয়েছে আদিকাল থেকেই। আজকাল ব্রয়লার মুরগির ব্যবহার সবচেয়ে বেশি। এর মাংস ও হাড় সহজেই সিদ্ধ হয় বলে দিন দিন এর চাহিদাও বাড়ছে। এছাড়াও স্বল্প ব্যয়ে যায় এই মুরগি।
অনেকেই ব্রয়লার মুরগি খেতে পছন্দ করে সপ্তাহে দুই-তিন দিন খাবারের তালিকায় রাখেন। এছাড়া ফাস্ট ফুড গুলোতেও ব্রয়লার মুরগি দিয়ে তৈরি করা হয় সুস্বাদু সব খাবার।

তবে মুরগির স্বাদ পেতে যেয়ে জীবন যখন ঝুঁকির মুখে পড়ে, তখন ব্যাপারটি অবশ্যই দ্বিতীয়বার ভাবার মত। অনেকেই জানেন না, এই ‘ব্রয়লার প্রীতি’ মানবদেহের মারাত্মক বিপদ ডেকে আনছে।

ব্রয়লার মুরগি নিয়মিত খেলে অধিকাংশ অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ শরীরে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঠেকাতে ব্যর্থ হয়। শুধু তাই নয়, আমাদের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও নষ্ট করে দিতে পারে ধীরে ধীরে। দীর্ঘদিনের গবেষণায় এমনটাই দাবি করেন ভারতের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস।

অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, আসলে ইদানীং আমরা যত মুরগি খাই তার সবই প্রায় আসে বিভিন্ন পোল্ট্রি খামার থেকে। আর প্রায় সব পোল্ট্রি খামারেই মুরগির স্বাস্থ্য দ্রুত বাড়াতে এবং বেশি মাংস পেতে মুরগির খাবারের সঙ্গে এক ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ দেয়া থাকে। এই অ্যান্টিবায়োটিকের প্রভাবে মানুষের শরীরে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের কার্যক্ষমতা প্রতিনিয়ত হ্রাস পেতে থাকে। এই ভাবে চলতে থাকলে একটা সময় অধিকাংশ অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধই শরীরে কোনো রকম ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হলে তা ঠেকাতে পারবেনা।

সম্প্রতি লন্ডনের ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজিম-এর চালানো একটি সমীক্ষায় একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। এই সমীক্ষার রিপোর্টে বলা হয়েছে, বাংলাদেশসহ ভারত, ভিয়েতনাম, দক্ষিণ কোরিয়া, রাশিয়ার মতো একাধিক দেশে পোল্ট্রি খামারে মুরগির খাবারের সঙ্গে উচ্চ মাত্রায় কোলিস্টিন নামের একটি অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী, বাজারে উপলব্ধ প্রায় সব প্রক্রিয়াজাত মুরগির মাংসেই উচ্চ মাত্রায় কোলিস্টিনের উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন এর (ডব্লিউএইচও) যে বিধি-নিষেধ রয়েছে, তা যে কোনো ভাবেই মানা হচ্ছে না তারই প্রমাণ মিলেছে এই সমীক্ষায়।

কীভাবে বিপদ এড়িয়ে চলা যাবে এ বিষয়ে চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, পোল্ট্রি বা ব্রয়লারের মুরগি যতটা সম্ভব কম খান। আর যদি খেতেই হয়  তাহলে ভালো করে ফুটিয়ে, সেদ্ধ করে খাওয়াই শ্রেয়।

আনন্দবাজার/তা.তা

সংবাদটি শেয়ার করুন