অ্যাকুরিয়ামে কয়েকটি রঙিন মাছ দেখে ভালো লাগা। সেখান থেকেই রঙিন মাছ চাষের পরিকল্পনা মাথায় আসে। ২০১৮ সালের দিকে বাড়ির আঙ্গিনায় একটি পরিত্যাক্ত জমিতে গড়ে তুলেছিলেন ছোট্ট পরিসরে ওরনামেন্টাল ফিস ফার্ম। প্রথমের দিকে মানুষের হাঁসাহাসি। এ যেন এক ছেলে খেলা। মানুষের এসব কথাতে হার না মেনে তবুও চালিয়ে যান তার ইচ্ছা ও শখ পূরণের আশায়। বাসাবাড়ির কাচের ছোট অ্যাকুরিয়ামে যেসব মাছ শোভা পায় তা এখন পুকুরের পানিতেই চাষ করছেন ঝিনাইদহের শিহাব উদ্দিন (২৩)। লাল, নীল, বাদামী, কালো, কমলা, রং-বে’রংয়ের মাছের ছড়াছড়ি। গোল্ড ফিস, কমেট, কৈ কার্ভ, সিল্কি কৈ, রেপটিকা, মৌলি, মলি, গাপটি, এ্যানজেলসহ প্রায় ১৬ জাতের এসব চাষ পুকুরেই চাষ করছেন।
শিহাব উদ্দিন কালিগঞ্জ উপজেলার রাখালগাছি ইউনিয়নের হাসানহাটি গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে। সে যশোর এমএম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের অনার্সের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তিনি জানান, এই রঙিন মাছের চাষ আমার জীবনকেই রাঙিয়ে দিয়েছে। আমার বাবার কষ্ট করে এখন আর আমাকে পড়ার খরচ দিতে হচ্ছে না। বর্তমানে আমি এই মাছের চাষের মাধ্যমে আমার লেখা-পড়ার খরচ চালাচ্ছি। আমার এই মাছ চাষে প্রথম সময় হাসাহাসি করলেও ইতোমধ্যে অনেকে এ মাছের চাষ করবেন বলে ইচ্ছা পোষণ করেছেন। এছাড়া তাদের আমার মতো বেকারত্ব দূর হতে পারে এই রঙিন মাছ চাষে।
তিনি জানান, বছরের শুরুতে মাটিতে গর্ত করে পলিথিন বিছিয়ে একটি চৌবাচ্চা তৈরি করে অল্প কয়েকটি রঙিন মাছ ছাড়েন। দুই মাছের মধ্যে ছোট মাছ গুলো বড় হয়ে যায়। পরে সাতক্ষীরা থেকে ১৬০টি বিভিন্ন প্রজাতির মাছ নিয়ে আসেন। পরবর্তীতে তিনি পোনা উৎপাদন করে বাজারে বিক্রি করেন। তিনি আশা করছেন এবার তিনি কয়েক লাখ টাকার মাছ বিক্রি করতে পারবেন।
শিহাব আরও জানান, প্রথমে যারা আমার চাষ দেখে হাসাহাসি করতেন তারাই আজ আমার পুকুরে এসে মাছ দেখেন ও খাওয়ার জন্য কিনে নিয়ে যান। প্রথমে আমাকে একটা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আর্থিক ভাবে সহযোগীতা করেছিলেন। যে কারণে ভালোভাবে চাষ করতে পারছি। সরকারীভাবে এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও সহজ ঋণের ব্যবস্থা থাকলে ভালো হয়। সব ঠিকঠাক থাকলে এই খামারই আমার জীবনকে বদলে দিবে।
আনন্দবাজার/শাহী