লেবাননে ইসরায়েলের পদাতিক বাহিনী প্রথমবারের মতো মুখোমুখি প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়েছে। লেবাননে স্থল হামলা শুরুর পর বুধবার (২ অক্টোবর) ভোরে ওদাইসেহ শহরে অনুপ্রবেশেরন চেষ্টাকালে লেবাননের যোদ্ধারা তাদের গতিরোধ করে। সর্বশেষ তথ্যপ্রাপ্তি পর্যন্ত সেখানে ব্যাপক আকারে সম্মুখ যুদ্ধ চলছে।
এ ব্যাপারে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার কাছে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছে হিজবুল্লাহ। অঞ্চলটিতে থাকা সাংবাদিকরাও যুদ্ধের বিষয়টি অবগত করেছেন।
হিজবুল্লাহর দাবি, লড়াইয়ে এখন পর্যন্ত তারা সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনায় তারাই জয়ের পথে। ইসরায়েলি পদাতিক বাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে এবং তারা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীনও হয়েছে।
অসমর্থিত সূত্রের বরাতে আলজাজিরার সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, আহতদের হেলিকপ্টারে করে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে সরিয়ে নিচ্ছে ইসরায়েল। তাদের উত্তর ইসরায়েলের সামরিক ঘাঁটিতে একে একে স্থানান্তর করা হচ্ছে। সেখানে অন্তত ২০টি অ্যাম্বুলেন্স অবস্থান করছে এবং অন্যান্য কর্মযজ্ঞ বড় ক্ষয়ক্ষতির ইঙ্গিত দিচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত হতাহতের সংখ্যা নিশ্চিত করা যায়নি।
ইসরায়েল স্থল হামলা শুরুর ঘোষণা দেয়ারপরই সীমান্তবর্তী তিনটি অঞ্চলে আর্টিলারি ইউনিট থেকে তীব্র গোলাবর্ষণ শুরু করে। এর একটি এলাকা ওদাইসেহ। তারা এলাকাটিতে নির্বিঘ্নে প্রবেশের পথ তৈরী করার চেষ্টা চালিয়েছিলো বলে ধারনা করা হচ্ছে।
কিন্তু পদাতিক বাহিনী প্রবেশের চেষ্টাকালেই লেবাননের যোদ্ধাদের অপ্রত্যাশিত কঠোর প্রতিরোধের মুখে পড়ে। লেবাননে এটিই এবারের প্রথম মুখোমুখি যুদ্ধ।
পেজার বিস্ফোরণ পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহে ইসরায়েল লেবাননে পূর্ণমাত্রায় হামলা শুরু করে। জবাবে হিজবুল্লাহ ইসরায়েলে রকেট নিক্ষেপ করে আসছে। কিন্তু তাতে তেমন সফলতা আসেনি। এরপর ইসরায়েলের স্থল অভিযানের ঘোষণায় হিজবুল্লাহ প্রতিরোধের প্রস্তুতির কথা জানায়। ইসরায়েল সেই প্রস্তুতিরই সম্মুখীন হলো।
এদিকে ইসরায়েলে মঙ্গলবারের (১ অক্টোবর) ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ইতি টানতে চাইছে ইরান। দেশটি বলছে, যা হওয়ার হয়েছে; নতুন করে তারা আর ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়বে না। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি যখন এ কথা বলছেন তখন ইরানের সশস্ত্র বাহিনী ‘কিন্তু যদি’ রেখে হুঁশিয়ারি দিচ্ছে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি বুধবার (২ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ এক পোস্টে বলেছেন, লেবাননে হিজবুল্লাহ এবং গাজায় আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়ায় তেহরান ইসরায়েলে হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলি সরকার প্রতিশোধ নেওয়ার সিদ্ধান্ত না নিলে আমাদের পদক্ষেপ এখানেই শেষ। যদি ইসরায়েল পাল্টা কিছু করে বসে তবে আমাদের প্রতিক্রিয়া আরও শক্তিশালী হবে।
ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর যুগ্ম প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি তেহরানের বিরুদ্ধে আর কোনো প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নিলে ইসরায়েলের সব অবকাঠামোকে লক্ষ্যবস্তু করার হুমকি দিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, যদি ইসরায়েল তার অপরাধগুলো চালিয়ে যেতে চায় বা আমাদের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার বিরুদ্ধে কিছু করতে চায়, তাহলে আজকের রাতের অভিযানের চেয়ে আরও কয়েকগুণ শক্তিশালী হামলা হবে। তাদের সব অবকাঠামোকে লক্ষ্যবস্তু করা হবে। ইরানের বিপ্লবী গার্ড কোর ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কয়েক গুণ বেশি শক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য প্রস্তুত বলে জানান তিনি।