ঋণ গ্রাহকের প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ ঘোষনা করার অভিযোগ উঠেছে পটুয়াখালী পৌরসভার নির্বাচনে রিটানিং কর্মকর্তা বিরুদ্ধে। এমনকি জামিনদারের প্রার্থীতাও বৈধ ঘোষনা করেছে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। গত ১৫ ফেব্রæয়ারী মনোনয়ন পত্র যাচাই-বাছাইয়ের শেষ দিনে খেলাপী ঋন উল্লেখ করে পটুয়াখালী পদ্মা ব্যাংক শাখা ব্যবস্থাপক একটি চিঠি দিলেও তা গোপন করে ঋণ গ্রহীতা ও জামিনদারের মনোনয়ন পত্র বৈধ ঘোষনা করেছে জেলা রিটানিং কর্মকর্তা ও নির্বাচন কর্মকর্তা খান আবি শাহানুর খান। এ ঘটনায় আজ ১৭ ফেব্রæয়ারী শনিবার নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা আপীল কর্তৃপক্ষ ও পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক বরাবর আপীল করেছেন নির্বাচনে প্রতিদ্ন্দ্বিতাকারী মেয়র পদ-প্রার্থী মোঃ শফিকুল ইসলাম।
পদ্মা ব্যাংক পটুয়াখালী শাখার অফিসার মেহেদী হোসাইন এবং সিনিয়র অফিসার ও শাখা অপারেশন ম্যানেজার শাহিনুর আক্তার স্বাক্ষরিত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, আগামী ০৯ মার্চ, ২০২৪ ইং তারিখে অনুষ্ঠিতব্য মেয়র পদে নির্বাচনে পটুয়াখালী জেলায় যে সকল প্রার্থীগন অংশগ্রহন করতে যাচ্ছেন তাদের মধ্যে জনাব মহিউদ্দিন আহম্মেদ, (জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর-৬৮৬২২৭৮৯০৭/পিন- ১৯৭৬৭৮২৯৫০৫১১৯৬৭৩), পিতা: মোয়াজ্জেম হোসেন, মাতা- সাফিয়া বেগম, বর্তমান ঠিকানাঃ মুসলিম পাড়া, পটুয়াখালী সদর, পটুয়াখালী, একজন সম্ভাব্য মেয়র পদপ্রার্থী।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, আবুল কালাম আজাদ, প্রোপাইটর মেসার্স আবুল কালাম আজাদ, আমাদের পদ্মা ব্যাংক পিএলসি (তৎকালীন দি ফার্মার্স ব্যাংক লিমিটেড), পটুয়াখালী শাখার একজন খেলাপী গ্রাহক। যিনি ২৮.১০.২০১৪ ইং তারিখ হতে পদ্মা ব্যাংক লিমিটেড, পটুয়াখালী শাখা হতে সর্বমোট ২৪.৫০ কোটি টাকা ঋণ গ্রহণ করেছেন যা ১৬.১০.২০২২ ইং তারিখ মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে।
ঋণ’র হিসাবটি নিয়মিত না করায় বিগত ০১.০২.২০২৪ ইং হতে মন্দ ও ক্ষতিজনক মানে শ্রেণিকৃত হয়ে যায় এবং উক্ত ঋণ হিসাবে জনাব মহিউদ্দিন আহম্মেদ একজন জামিনদার। তিনি ঋণ গ্রহণ এর সময় ব্যাংক বরাবর এই মর্মে অঙ্গীকার করেছিলেন যে, “আবুল কালাম আজাদ, প্রোপাইটর: মেসার্স আবুল কালাম আজাদ উক্ত ঋণ প্রদানে ব্যার্থ হলে আমি জামিনদার হিসাবে ঋণের সমুদয় টাকা প্রদান করব”। খেলাপি ঋণ আদায়ের গ্রাহক ও জামিনদারের কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ এবং জামিনদার মহিউদ্দিন আহম্মেদ প্রার্থী হয়ে থাকলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এর জন্য আবেদন জানাচ্ছি। পটুয়াখালী জেলা প্রশাসকসহ ব্যাংকের ও নির্বাচন কমিশন’র উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অনুলিপি দেয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় প্রতিদন্দি মেয়র পদ-প্রার্থী মোঃ শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোঃ শাহাবুদ্দিন’র মাধ্যমেএকটি আপীল মোকদ্দমা দাখিল করেছেন আজ ১৭ ফেব্রুয়ারী।
এ বিষয়ে পদ্মা ব্যাংকের পটুয়াখালী শাখা ম্যানেজার মোঃ শামীম আহমেদ বলেন, এ বিষয়ে আমরা কোন কথা বলতে চাই না। প্রয়োজন হলে আমাদের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেন।
পদ্মা ব্যাংক ঋন’র টাকা পাওয়ার কথা স্বীকার করে আবুল কালাম আজাদ বলেন, কিস্তি বাকি আছে কিন্তু তারা ঋন খেলাপী নয় । আর মহিউদ্দিন তো জামিনদার।
পদ্মা ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর (এমডি) ফয়সাল আমীন বলেন, আমরা চিঠি দিয়েছি সব ঠিকই আছে। উনি ওনার ঋনটা পরিশোধ করলেইতো শেষ হয়ে যাবে।
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা খান আবি শাহানুর খান বলেন, পদ্মা ব্যাংকের যে বাপ বাংলাদেশ ব্যাংক সেই রিপোর্ট দিয়েছে। একজন কাউন্সিলর প্রার্থী ছাড়া কেউই ঋণ খেলাপী না। মেয়র প্রার্থী মহিউদ্দিন আহমেদ ঋণ খোলাপী কি না? তা আমার জানা নাই। আমার যাছাই-বাছাই ছিল দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই বাছাইয়ের পরে পদ্মা ব্যাংক থেকে চিঠি নিয়ে আসায় তা খুলেই দেখি নাই। কারন তার পর আমার কোন কিছু করার নাই। পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মোঃ নূর কুতুবুল আলম জানান, আমি ছুটিতে আছি। এবিষয়ে আমার ধারনা নাই। কালকে বলতে পারবো।