প্রচলিত নিয়মে বদল আনছে সৌদি সরকার। আগে সৌদি আরবে শুধু কূটনৈতিক মেইল করলেই মিলতো অ্যালকোহল বা মদ। এবার প্রথমবারের মতো অমুসলিম কূটনীতিকদের কাছে মদ বিক্রির অনুমতি দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি।
এএফপি’র বরাত দিয়ে একটি সূত্র জানিয়েছে, এর আগে কূটনৈতিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মদ আমদানি করতে হতো। এবার থেকে অমুসলিম কূটনীতিকদের কাছে সরাসরি তা বিক্রি করা হবে। তবে সৌদি কর্মকর্তাদের দাবি, এভাবে দোকান চালু হলে দেশটিতে অবৈধভাবে মদ কেনাবেচা বন্ধ হবে।
উল্লেখ্য, ১৯৫২ সাল থেকে এ নিয়ে সৌদি আরবে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। বাদশাহ আব্দুল আজিজের এক ছেলে মদ্যপ অবস্থায় একজন ব্রিটিশ কূটনীতিককে গুলি করে হত্যা করেছিলেন। তারপরই এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, রাজধানী রিয়াদের পশ্চিমে কূটনৈতিক এলাকায় একটি ‘অ্যালকোহল স্টোর’ খোলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। সেখানে শুধু অমুসলিম কূটনীতিকদের কাছেই মদ বিক্রি করা হবে। এর জন্য গ্রাহকদের একটি মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করতে হবে। এরপর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একটি ক্লিয়ারেন্স কোড পেতে হবে। এর ভিত্তিতে মাসিক কোটা মেনে কেনা যাবে মদ। ২১ বছরের কম বয়সী কাউকে দোকানে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না এবং ভেতরে সবসময় ‘সঠিক পোশাক’ পরে থাকতে হবে। মদ্যপানকারীরা মদ কেনার জন্য কোনো প্রতিনিধিকে (যেমন- গাড়িচালক) পাঠাতে পারবেন না।
প্রতি মাসে একেকজন গ্রাহক সর্বোচ্চ ২৪০ পয়েন্ট অ্যালকোহল কিনতে পারবেন। এক লিটার স্পিরিট ছয় পয়েন্ট, এক লিটার ওয়াইন তিন পয়েন্ট এবং এক লিটার বিয়ারে এক পয়েন্ট কাটা যাবে। তবে কূটনীতিকদের বাইরে অন্যান্য অমুসলিম প্রবাসীদের জন্য মদের দোকানে প্রবেশাধিকার থাকবে কি না, তা স্পষ্ট নয়।
সৌদি আরবের ভিশন-২০৩০-এর অংশ হচ্ছে মদের দোকান খোলার এই পরিকল্পনা। রক্ষণশীল দেশটি সাম্প্রতিককালে পর্যটন ও ব্যবসায় আরও বেশি নজর দিয়েছে। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নেতৃত্বে পদক্ষেপটি বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে। ইসলাম ধর্মে মদ্যপান নিষিদ্ধ। সৌদি আরবেও মদ্যপানের বিরুদ্ধে কঠোর আইন রয়েছে। সূত্র: এএফপি, বিবিসি, ডয়েচে ভেলে