ঢাকা | রবিবার
২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রতি লিটার বোতলজাত পানিতে গড়ে আড়াই লাখ প্লাস্টিক কণার উপস্থিতি

প্রতি লিটার বোতলজাত পানিতে গড়ে আড়াই লাখ প্লাস্টিক কণার উপস্থিতি

বোতলজাত পানির মধ্যে দুশ্চিন্তার অনেক কারণ রয়েছে। নতুন একটি গবেষণা অনুযায়ী, ১ লিটারের একটি সাধারণ পানির বোতলে গড়ে প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার মাইক্রো ও ন্যানো প্লাস্টিকের কণা থাকে। আর এসব কণার অনেকগুলোকেই এখনো শনাক্ত করা যায়নি।

সোমবার (০৮ জানুয়ারি) প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস জার্নালে ওই গবেষণাটি প্রকাশিত হয়।

উক্ত গবেষণায় বোতলজাত পানিতে ‘ন্যানো প্লাস্টিকস’ বা মানুষের চুলের প্রস্থের এক মাইক্রোমিটারের নিচে প্লাস্টিক কণার উপস্থিতি মূল্যায়ন করা হয়। অনুসন্ধানগুলো দেখায়—বোতলজাত পানিতে অতীতের ধারণার চেয়েও ১০০ গুণ বেশি প্লাস্টিক কণা থাকতে পারে। কারণ আগের একটি গবেষণায় প্রতি লিটার পানিতে গড়ে ১ থেকে ৫ হাজার প্লাস্টিক কণা শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা।

ন্যানো প্লাস্টিকগুলো মাইক্রোপ্লাস্টিকের চেয়ে মানব স্বাস্থ্যের জন্য আরও বড় হুমকি। কারণ যথেষ্ট ছোট হওয়ায় এসব কণা মানব কোষ ও রক্ত প্রবাহে প্রবেশ করতে পারে এবং বিভিন্ন অঙ্গের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। আরও দুশ্চিন্তার বিষয় হলো—ন্যানো প্লাস্টিক কণাগুলো মায়ের জরায়ুর মাধ্যমে অনাগত সন্তানের শরীরেও প্রবেশ করতে পারে। বিজ্ঞানীরা বহু বছর ধরেই বোতলজাত পানিতে এ ধরনের কণার উপস্থিতি নিয়ে সন্দেহ করে আসছিলেন। তবে আলাদাভাবে অতি ক্ষুদ্র কণাগুলোকে শনাক্ত করার প্রযুক্তির অভাব রয়েছে।

জানা যায়, গবেষকেরা যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের ২৫টি বোতলের পানি বিশ্লেষণ করেন। এতে তারা বোতলগুলোতে সর্বনিম্ন ১ লাখ ১০ হাজার থেকে ৩ লাখ ৭০ হাজার পর্যন্ত ক্ষুদ্র প্লাস্টিকের কণা খুঁজে পেয়েছেন। এসব কণার ৯০ ভাগই আবার ন্যানো প্লাস্টিক। এ নিয়ে কলম্বিয়ার রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ওয়েই মিন বলেন, মাইক্রোপ্লাস্টিক মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য যা-ই করুক না কেন, ন্যানো প্লাস্টিক আরও বিপজ্জনক হতে যাচ্ছে। গবেষকেরা বলেছেন, তাদের গবেষণা বোতলজাত পানিতে থামবে না। তারা পশ্চিম অ্যান্টার্কটিকা থেকে সংগ্রহ করা কলের জল এবং তুষার নমুনাগুলোতে ন্যানো প্লাস্টিকগুলোর অস্তিত্ব অনুসন্ধান করবেন।

উল্লেখ্য, বিশ্ব প্রতি বছর ৪৫ কোটি টনেরও বেশি প্লাস্টিক উৎপাদন করে। এই প্লাস্টিকের বেশির ভাগই শেষ পর্যন্ত বর্জ্য ক্ষেত্রগুলোতে স্থান করে নেয়। প্লাস্টিকের বেশির ভাগ অংশ প্রাকৃতিকভাবে ক্ষয় হয় না। তবে সময়ের ব্যবধানে ছোট ছোট টুকরো হয়ে যায়।

সংবাদটি শেয়ার করুন