শীত এলেই শরীরে অনেক রোগ জেঁকে বসে। ঠাণ্ডা-কাশিসহ সব সমস্যা যেন শীতকালে বেড়ে যায়। এগুলোর সাথে বাড়তে থাকে চুল পড়ার বিড়ম্বনা। এছাড়া চুলের বৃদ্ধি কমে যাওয়ার মতো সমস্যাতেও দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েন অনেকে। অন্তর্নিহিত স্বাস্থ্য সমস্যা, ঋতু পরিবর্তন, ক্ষতিগ্রস্ত চুলের ফলিকল বা সঠিক পুষ্টির অভাবে পড়তে পারে চুল। চুল পড়ারোধী শ্যাম্পু বা প্রসাধনী সাময়িক সমাধান দিতে পারলেও চুলের বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে সঠিক পুষ্টি গ্রহণ করার বিকল্প নেই।
যে কারণে চুলের বৃদ্ধির জন্য জিঙ্ক অপরিহার্য: জিংক একটি অপরিহার্য খনিজ যা কোষ বিভাজন, ডিএনএ সংশ্লেষণ এবং চুলের ফলিকলসহ টিস্যুগুলোর মেরামতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি হরমোনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে, বিশেষ করে অ্যান্ড্রোজেন, যা চুলের বৃদ্ধির ধরণ উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।
এছাড়া, জিঙ্ক খাওয়ার ফলে সেবাম তৈরি হয়। এটি প্রাকৃতিক তেল যা মাথার ত্বককে ময়শ্চারাইজ করে এবং চুল স্বাস্থ্যোজ্জ্বল রাখে। জিঙ্ক অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মতো কাজ করে এবং চুলের কোষগুলোকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে, অকাল বার্ধক্য এবং সম্ভাব্য চুল পড়া রোধ করে।
জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবার খেলে যেমন সুস্থ থাকবেন, তেমনি সম্ভব হবে চুল পড়া রোধ করাও। জিঙ্কের সাথে যুক্ত পুষ্টির মধ্যে রয়েছে প্রোটিন, কারণ জিঙ্ক সাধারণত প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারে পাওয়া যায়। এছাড়া নির্দিষ্ট বি ভিটামিন (বি৬ এবং বি১২) চুলের সর্বোত্তম বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন বিপাকীয় প্রক্রিয়ায় জিঙ্কের সাথে কাজ করে।
চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে জিংক সমৃদ্ধ যেসকল খাবার খাবেন:
১) পালং শাক এবং অন্যান্য গাঢ় পাতাযুক্ত সবুজ শাকসবজিতে জিঙ্কের সাথে বিভিন্ন ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান রয়েছে। চুলের বৃদ্ধি বাড়ানোর পাশাপাশি আপনাকে সুস্থ রাখবে এগুলো।
২) ডিমে প্রচুর জিঙ্ক, প্রোটিন এবং বায়োটিন থাকে। বায়োটিন একটি বি-ভিটামিন যা চুল, ত্বক এবং নখের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বায়োটিনের অভাব চুল পড়া বাড়াতে পারে। ডিমের মতো জিঙ্ক এবং বায়োটিন সমৃদ্ধ খাবার চুলের যত্নে দারুণ কার্যকরী।
৩) কুমড়োর বীজ জিঙ্ক সমৃদ্ধ। এগুলো সালাদ, দই বা স্ন্যাক হিসেবে যোগ করে ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন।
৪) মসুর ডাল জিঙ্কের উদ্ভিদভিত্তিক উৎস। এগুলো প্রোটিন, আয়রন এবং অন্যান্য পুষ্টিতেো সমৃদ্ধ যা চুলের পাশাপাশি ভালো রাখে শরীরও।
৫) ছোলা জিঙ্কের আরেকটি উদ্ভিদভিত্তিক উৎস। এগুলো সালাদ, স্যুপে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। এছাড়া সাইড ডিশ হিসেবেও পরিবেশন করতে পারেন ছোলা।
৬) কাজু হলো এক ধরনের বাদাম যা জিঙ্ক সমৃদ্ধ। এগুলো আয়রন এবং বায়োটিনের মতো অন্যান্য পুষ্টিরও একটি ভালো উৎস।
৭) দইসহ দুগ্ধজাত পণ্যে জিঙ্ক থাকে। দই প্রোবায়োটিকও সরবরাহ করে, যা মাথার ত্বক ভালো রাখে।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া