মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারে ইসরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ভারতীয় নৌবাহিনীর সাবেক আট কর্মকর্তার ফাঁসির সাজা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর পরিবর্তে তাঁরা এখন লঘু দণ্ডের মুখোমুখি হবেন।
বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। ভারত সরকারের পক্ষ থেকে এ খবরে কী ধরনের দণ্ডের মুখোমুখি হবেন, সেই বিষয়ে এখন পর্যন্ত বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়নি। নয়াদিল্লি জানিয়েছে, ভারতের রাষ্ট্রদূত এবং নৌ কর্মকর্তাদের পরিবারের সদস্যরা আপিল শুনানির জন্য আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
ইসরায়েলের পক্ষে কাতারে গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে গ্রেপ্তারকৃত ভারতীয় নৌবাহিনীর কর্মকর্তারা হলেন পূর্ণেন্দু তিওয়ারি, সুগুনাকর পাকালা, অমিত নাগপাল ও সঞ্জীব গুপ্ত। তাঁরা ভারতীয় নৌবাহিনী কমান্ডার ছিলেন। এ ছাড়া বাকি চারজন হলেন ক্যাপ্টেন নাভতেজ সিং গিল, বীরেন্দ্র কুমার ভার্মা এবং সৌরভ বাসিস্ত। অন্যজন হলেন নাবিক রাজেশ গোপাকুমার। উল্লেখ্য, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে কয়েকজন অত্যন্ত প্রশিক্ষিত সামরিক কর্মী, যাঁরা একসময় ভারতীয় যুদ্ধজাহাজ পরিচালনা করতেন। কাতারের সশস্ত্র বাহিনীকে প্রশিক্ষণ ও সংশ্লিষ্ট পরিষেবা প্রদানকারী একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত ছিলেন তাঁরা। এই সুযোগে তাঁরা কাতারের সশস্ত্র বাহিনীর বিভিন্ন স্পর্শকাতর তথ্য ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর কাছে গোপনে সরবরাহ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ নিয়ে ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার বলেছে, পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আইনি দলের পাশাপাশি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ করছে সরকার। আমরা শুরু থেকেই তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছি। সাবেক নৌ কর্মকর্তাদের জন্য আমরা সব ধরনের কনস্যুলার এবং আইনি সহায়তা অব্যাহত রাখব। আমরা কাতার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনাও চালিয়ে যাব। ‘বিভিন্ন প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, তাঁরা ইসরায়েলের জন্য গুপ্তচরবৃত্তি করেছেন।’ বলে টাইমস অব ইন্ডিয়া উল্লেখ করেছে। তবে ইসরায়েল সরকার মামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে অভিযুক্ত আট নৌ কর্মকর্তার পরিবার গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ অস্বীকার করেছে। পরিবারগুলো বলেছে, তাঁরা ইসরায়েলের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তিতে জড়িত ছিলেন না। তাঁরা কাতার নৌবাহিনী এবং দেশটির নিরাপত্তাব্যবস্থা গড়ে তুলতে কাজ করেছিলেন। তাঁরা কখনই গুপ্তচরবৃত্তি করতে পারে না। এই অভিযোগের কোনো প্রমাণ নেই।
২০২২ সালের আগস্ট থেকে কাতারে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এসব ভারতীয় কারাবন্দী রয়েছেন। দেশটিতে চলতি বছরের মার্চে তাঁদের বিরুদ্ধে বিচার শুরু হয়। কারাবন্দী থাকা অবস্থায় একাধিকবার তাঁদের জামিনের আবেদন করা হয়। তবে সেসব আবেদন প্রত্যাখ্যান করে তাঁদের আটক রাখার সময় বৃদ্ধি করা হয়। গত ২৬ অক্টোবর ওই ভারতীয়দের মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন কাতারের একটি আদালত।