শুক্রবার, ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

আওয়ামী লীগের জন্ম: স্বাধিকার, স্বাধীনতা ও আত্নসম্মানবোধের বাংলাদেশ

বাংলাদেশের ইতিহাস ঐতিহ্য ও উন্নয়নের একমাত্র স্বপ্নের সারথী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আজ ৭৪তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী। শত সঙ্কট, সংগ্রাম আর চরম জুলুম নির্যাতন, নিপীড়ন অতিক্রম করে বীর দর্পে অদম্য গতিতে আওয়ামী লীগ এগিয়ে চলছে প্রগতি আর উন্নয়নের অগ্রযাত্রায়। বাঙ্গালীর স্বাধিকার, স্বাধীনতা আর আত্মসম্মানবোধের সাথে নিবিড়ভাবে মিশে আছে আওয়ামী লীগের ইতিহাস। বলা বাহুল্য, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও  আবুল হাশেমের নেতৃত্বাধীন তৎকালীন বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিম লীগের একাংশের সম্মেলনের মধ্য দিয়ে ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন ঢাকার টিকাটুলীর কে এম দাস লেন রোডের রোজ গার্ডেন প্যালেসে ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ’ প্রতিষ্ঠিত হয়। যার সভাপতি হন মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, সহ-সভাপতি হন আতাউর রহমান খান, শাখাওয়াত হোসেন ও অলী আহমদ এবং সাধারণ সম্পাদক হন শামসুল হক। শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রথমে যুগ্ন সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয় আর কোষাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব প্রাপ্ত হন ইয়ার মোহাম্মদ খান। এসময় শেখ মুজিবুর রহমান কারাগারে অন্তরীণ ছিলেন। অন্যদিকে, পুরো পাকিস্তানের ক্ষেত্রে সংগঠনটির নাম রাখা হয় ‘নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগ’। যার সভাপতি হন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। দল প্রতিষ্ঠার পরের দিন অর্থাৎ ১৯৪৯ সালের ২৪ জুন বিকেলে নবগঠিত ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ’ মওলানা ভাসানীর সভাপতিত্বে প্রায় চার হাজার লোকের উপস্থিতিতে ঢাকার আরমানিটোলা ময়দানে প্রকাশ্যে জনসভা করে। পরবর্তীকালে, ১৯৫৫ সালে মওলানা ভাসানীর উদ্যোগে ধর্মনিরপেক্ষতার চর্চা এবং অসাম্প্রদায়িক চেতনা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংগঠনটির নাম থেকে ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দেওয়া হয়, নাম রাখা হয়, ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ’।

১৯৫২ সালে শেখ মুজিবুর রহমান সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব প্রাপ্ত হন। পরের বছর ঢাকার ‘মুকুল’ প্রেক্ষাগৃহে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের সম্মেলনে তাকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত ১৩ বছর অসাধারণ যোগ্যতা ও নেতৃত্বের সাথে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন শেখ মুজিবুর রহমান। নেতৃত্বের ধারাবাহিকতার এক পর্যায়ে তিনি তার দক্ষতা ও যোগ্যতার নিরিখে আওয়ামী লীগের সভাপতির আসনে সমাসীন হন। আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসনের ওপর বিশেষ গুরুত্বসহ ৪২ দফা কর্মসূচি গ্রহণ করে। শুরুর দিকে দলটির প্রধান দাবিগুলোর মধ্যে ছিল রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলার স্বীকৃতি, গণতন্ত্র, সংবিধান প্রণয়ন, সংসদীয় পদ্ধতির সরকার, আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন এবং তৎকালীন পাকিস্তানের দু‘অঞ্চলের মধ্যে বৈষম্য দূরীকরণ। আওয়ামী লীগ আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে বাংলার আপামর জনতার অধিকার আদায়ের প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হয়। ১৯৬৬ সালে শেখ মুজিবুর রহমান সভাপতির দায়িত্ব পাবার পর জন মানুষের আধিকার আদায়ে আওয়ামী লীগ আরো শক্তিশালী ও বেগবান হয়। বলার অপেক্ষা রাখে না, আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে বাঙ্গালীর সব ধরনের অধিকার আদায়ের আন্দোলন-সংগ্রামের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। ফলে তাকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়।

আরও পড়ুনঃ  ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্ক জোরদারের প্রত্যয় হ্যাসের

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে পাকিস্তানের অপশাসন, নির্যাতন-নিপীড়ন ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে আন্দোলন, ভাষার মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ তে যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে বিজয়, ১৯৬৬ সালে ছয় দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, সর্বপরি শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে অধিকার আদায়ের সকল আন্দোলন এক পর্যায়ে স্বাধীনতা আন্দোলনের রূপ পরিগ্রহণ করে। এসব আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন বাঙ্গালী জাতির অবিসংবাদিত নেতা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান। এ মহান নেতার নেতৃত্বেই পরবর্তীতে মহান মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয় এবং বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে। তবে এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণার পর পাকিস্তান কারাগারে বন্দি থাকাবস্থায় তার অবর্তমানে ১৯৭১ সালে জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী ও এএইচএম কামরুজ্জামান মুজিবনগর সরকার গঠন, রণনীতি ও রণকৌশল প্রণয়ন, প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড ও মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা, কূটনৈতিক তৎপরতা ও শরণার্থীদের তদারকিসহ মুক্তিযুদ্ধকে জনযুদ্ধে পরিণত করত: মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অসামান্য অবদান রাখেন। অনেক ত্যাগ, অনেক রক্ত, অনেক প্রাণ ও অসংখ্য মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত হয় স্বাধীনতা। স্বাধীনতা লাভের পর বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সরকার দেশ গঠনে মনোনিবেশ করে। সদ্য স্বাধীনতা প্রাপ্ত যুদ্ধ বিধ্বস্ত একটি দেশকে পুনর্গঠন ও উন্নয়নে যখন বঙ্গবন্ধু কঠোর পরিশ্রম ও সংগ্রাম করে যাচ্ছেন, তখন অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী অপ-শক্তি বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। অবশেষে ষড়যন্ত্রকারীদের ঘৃণ্য চক্রান্তে ১৯৭৫ এর ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। তারপর দীর্ঘ সময় ধরে দেশে একের পর এক সামরিক স্বৈরশাসনের অভিশাপ নেমে আসে। এসব স্বৈরশাসকদের বিরুদ্ধে সব গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামেরও নেতৃত্ব দেয় বাংলার জনমানুষের হৃদয়ের ঐতিহ্যবাহী দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

সূচনালগ্ন থেকে সুদীর্ঘ রাজনৈতিক পথ পরিক্রমায় অনেক ঘাত প্রতিঘাতের মধ্যে কখনও বিরোধী দলে, কখনও সরকারে থেকে দেশ গঠনে অনন্য অসামান্য অবদান রেখে চলেছে মাটি ও মানুষের রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। ভাষা আন্দোলন, গণআন্দোলন, স্বাধিকার আন্দোলন, স্বাধীনতা যুদ্ধ, স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয়সহ সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ের সকল আন্দোলনের সংগ্রামী ইতিহাসের পাতায় পাতায় যে দলের নামটি স্বর্ণাক্ষরে লিখা, তা হলো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। সব পর্যায়ে রয়েছে বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগের হার না মানা অপরাজেয় বলিষ্ঠ নেতৃত্ব। দেশ গঠন ও উন্নয়নে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ত্যাগ তিতিক্ষা ও অঙ্গিকারদীপ্ত সংগ্রামী ভূমিকা ইতিহাসে সমাদৃত। আর এ কারণেই বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের জন্মদাতা রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের কাছে বাংলাদেশের জন-মানুষের আশা-আকাঙ্খা বা প্রত্যাশা অনেক বেশি।

১৫ আগষ্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নির্মমভাবে হত্যার পর যারা রাষ্ট্র পরিচালনায় ছিল, তারা ক্রমশ: মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী অনেক কিছুই রাষ্ট্রযন্ত্রে ফিরিয়ে আনার অপ-প্রয়াস পায়। দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের পর ১৯৯৬ সনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে এবং ২০০৮ এর নির্বাচনে আবার ক্ষমতায় আসার পর দীর্ঘদীন বিরতিহীন ক্ষমতায় থেকে আওয়ামীলীগ অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও উন্নয়নের রাজনীতির ধারা অব্যাহত রেখেছে। ফলে বাংলাদেশের গণমানুষের আস্থা ও নির্ভরতার রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে আওয়ামী লীগ। তার প্রমাণ হলো, জন্মের  পর থেকে আজোবধি দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল হলো ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ।

আরও পড়ুনঃ  সবুজ পাহাড়ে বৈসাবির আমেজ

বাংলাদেশের চারবারের প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা ১৯৮১ সনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের হাল ধরেন। তার নেতৃত্বে কঠিন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দলটি এগিয়ে চলেছে প্রতিনিয়ত। আজ দলের যে সফলতা, সেইসাথে বাংলাদেশের যে উন্নয়ন, তার অবদান দেশরত্ন শেখ হাসিনার-এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উন্নত জীবনাচরণ, বিজ্ঞোচিত কথা-বার্তা ও বহুমাত্রিক কার্যক্রম-তার স্বাক্ষর বহন করে। দেশরত্ন শেখ হাসিনা প্রায়ই বলেন, “কি পেলাম, কী পেলাম না, সে হিসাব মিলাতে আমি আসিনি। কে আমাকে রিকোগনাইজ করল, আর কে করল না, সে হিসাব আমার নেই। একটাই হিসাব, এই বাংলাদেশের মানুষ ও তাদের পরিবর্তনে কিছু করতে পারলাম কি না, সেটাই আমার কাছে বড়।” বঙ্গবন্ধু কন্যা সত্যিকার অর্থেই কী জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন। চোখ বন্ধ করে নিজেকে এই প্রশ্ন করলে যা উত্তর মিলবে, তা হলো বিগত ৫৩ বছরের পথচলায় বাংলাদেশ আজ তার নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছে। তথাকথিত বুদ্ধিজীবীদের ভাষায়, তলাবিহীন ঝুড়ি আজ আধুনিক কৃষি, তৈরি পোশাক শিল্প, দারিদ্র্য দূরীকরণ, অর্থনীতি, রেমিটেন্স, গড় আয়ু বৃদ্ধি, আমদানি, রপ্তানি, রিজার্ভ, মাথাপিছু আয়, জিডিপি, প্রবৃদ্ধিরহার, নারী শিক্ষা, কলকারখানায় উৎপাদনসহ অনেক সূচকে বিশ্বের অনেক দেশের চেয়ে এগিয়ে। অর্থনৈতিক ও সামাজিক অনেক সূচকে অনেক ক্ষেত্রে পাশের দেশ ভারত এবং পাকিস্তানকে ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ। শেখ হাসিনা জানেন কিভাবে উন্নয়ন করতে হয়, কিভাবে বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য বদলাতে হয়। তাই তো সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের যতগুলো ধাপ রয়েছে, বাংলাদেশ একের পর অতিক্রম করে চলছে। দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে মেগা প্রকল্পসমূহ।

স্বপ্নের পদ্মা সেতু দিয়ে আজ লাখো মানুষ চলাচল করছে প্রতিনিয়ত। নগরজুড়ে অনুরণিত হচ্ছে মেট্রোরেলের ঝম্ঝম্ ধ্বনি। অন্তরীক্ষে শোভা পাচ্ছে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট। জল-স্থল আর অন্তরিক্ষের পর পাতালে হচ্ছে বিশাল উন্নয়নযজ্ঞ। আশা জাগাচ্ছে পাতাল রেল। মাত্র এক যুগের ব্যবধানে বাংলাদেশে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়া, অর্থনীতিতে দ্রুত বর্ধনশীল পাঁচ দেশের তালিকায় জায়গা করে নেওয়া, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা, এমডিজি বাস্তবায়ন, পদ্মা সেতু নির্মাণ, রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর, ঢাকা মেট্রোরেল, চট্টগ্রামের কর্ণফুলি টানেল ও ১০০ টি অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণসহ দেশের মেগা প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়নÑসবই দেশরত্ন জননেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনে ক্যারিশমেটিক ও দূরদর্শী সফল নেতৃত্বের ফল। শুধু তাই নয় শিক্ষা, স্বাস্থ্য, লিঙ্গ সমতা, কৃষি, দারিদ্র্যসীমা হ্রাস, গড় আয়ু বৃদ্ধি, রফতানি মুখী শিল্পায়ন, তথ্যপ্রযুক্তি, অর্থনৈতিক সূচকে দেশ যেভাবে দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, তাতে সহজেই অনুমেয় আগামির বাংলাদেশ ২০৪১ সালের আগেই উন্নত দেশের সারিতে কাঁধ মেলাতে সক্ষম হবে।

আরও পড়ুনঃ  অ্যালুমিনিয়ামের দাম দেড় বছরের সর্বোচ্চে

শেখ হাসিনা আজ বাংলাদেশের তো বটেই বরং তিনি গোটা বিশ্বের রোল মডেল। তিনি শুধু রাজনীতিতেই স্থিতিশীলতা আনেননি, নারীর অধিকার, সুশাসন নিশ্চিতকরণ ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে ধারাবাহিকতা রক্ষায় গোটা বিশ্বে সমাদৃত হয়েছেন এবং হচ্ছেন। সততা ও বিশ্বের ক্ষমতাধর নারী সমাজের মাঝেও আজ তাঁর অবস্থানঅনেক উচুঁতে। যে আশা ও ভরসা দিয়ে চার দশকের বেশি সময় আগে বাংলাদেশে ফিরেছিলেন, তা আজ শতভাগ বাস্তবে রূপ দিতে পেরেছেন। তিনি এখন বাংলার আপামর জনগণের কাছে নন্দিত-সমাদৃত।

১৯৭১-এ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে জাতির পরিচয় দিয়েছেন, ভিত্তি রচনা করেছিলেন; আজ স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর এক সুবর্ণলগ্নে সেই জাতিকে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর শক্তি দিয়েছেন তাঁরই উত্তরসূরি শেখ হাসিনা। পিতার অসমাপ্ত কাজকে তিনি পরম মমতায় নিজ হাতে সমাপ্ত করে যাচ্ছেন। তাঁর ভাষায় শুনি আমরা ,“বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে বাংলাদেশ আরও আগেই উন্নত দেশে পরিণত হতো।” হেনরি কিসিঞ্জারের তলাবিহীন ঝুড়ি আজ বিশ্বের দরবারে নিজের অস্তিত্বকে জানান দিচ্ছে সদর্পে। সম্প্রতি মে, ২০২৩ সালের বিশ্ব ব্যাংক সদর দপ্তরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুর অংকন চিত্র বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিডম্যালপাস এর নিকট উপহার হিসেবে প্রদানের মাধ্যমে জাতি হিসেবে আমাদের আত্মবোধ ও সম্মানবোধকে উজ্জীবিত করেছেন। এই তলাবিহীন ঝুড়ি আজ আলাদীনের আর্শ্চয প্রদীপ, যেথায় দেশরত্ন শেখ হাসিনার যোগ্য হাতের স্পর্শে চারিদিক উন্নয়ন উৎকর্ষের আলোয় উদ্ভাসিত আজকের এই বাংলাদেশ। সকল রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ডের প্রতিযোগিতার মধ্যে জনগণের নিকট একান্ত কাছের, হৃদয়ের দল হচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। আর সত্যিকার সংসদীয় গণতন্ত্রই হচ্ছে আমাদের জনগণের নিকট ঈস্পিত। জনগণের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমেই আগামী পাঁচ বছরের জন্য দেশের শাসনভার যোগ্যতম রাজনৈতিক দলেরই প্রাপ্য হবে-এই প্রত্যাশা রইলো।

পরিশেষে একটাই কথা, একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা হলো বাঙ্গালী জাতির শ্রেষ্ঠতম অর্জন। এই অর্জনকে অর্থবহ করতে স্বাধীনতার মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সম্পর্কে সবাইকে জানতে ও জানাতে হবে। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পৌঁছাতে হবে। আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর মাহেন্দ্রক্ষণে এই হোক আমাদের দৃঢ় অঙ্গিকার।

লেখক: উপাচার্য, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা ও সাবেক উপাচার্য, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট এবং অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।  

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন