ঢাকা | বৃহস্পতিবার
১২ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
২৭শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শ্রীনগরের কৃষকরা আলু চাষে লাভের স্বপ্ন দেখছেন

শ্রীনগরের কৃষকরা আলু চাষে লাভের স্বপ্ন দেখছেন

শ্রীনগরে আলুর জমিতে পরিচর্যার মধ্যদিয়ে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন স্থানীয় কৃষকরা। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আলুর কাঙ্খিত ফলন ও মূল্যে লাভের স্বপ্ন দেখছেন। তবে গেলো ২ বছর আলুর কাঙ্খিত বাজার মূল্য না পাওয়ায় লোকসানের মুখে পরেন তারা। লোকসানের কিছুটা কাটিয়ে উঠতে এবারও ফের আলুর চাষ করেছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা।

এরই ধারাবাহিকতায় আলু জমির সার্বিক পরিচর্যা ও যত্ন নিচ্ছেন তারা। বাম্পার ফলনের লক্ষ্যে পানি সেচ, আগাছা-জঙ্গল পরিস্কার ও ফসলের রোগ প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় কীটনাশক স্প্রেসহ নানা কর্মযজ্ঞ করছেন তারা। এ বছর প্রায় ২৪শত’ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কৃষক মাঠে কাজ করছেন।

জানা গেছে, উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের মধ্যে বীরতারা, আটপাড়া, তন্তর ও কুকুটিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন জমিতে ব্যাপক আলুর চাষাবাদ করা হচ্ছে। তবে এ অঞ্চলে আলু চাষের ভরা মৌসুমে ফসলী জমিতে জলাবদ্ধতায় বিপাকে পড়েন সাধারণ কৃষক। এতে কিছুটা বিড়ম্বনার শিকার হলেও সব বিপত্তি শেষে এবার আলু চাষে লাভের আশা করা হচ্ছে। উপজেলা কৃষি অফিসার শান্তনা রানী জানিয়েছেন, উপজেলা প্রশাসনের সহযোগীতায় জলাবদ্ধতা নিরসনে কয়েক স্থানে দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। বিভিন্ন ইউনিয়নে স্থানীয় জন প্রতিনিধিদের নিয়ে পানি স্কিাশনের জন্য শাখা খাল পুনঃখননের লক্ষ্যে আলোচনা চলমান আছে। উচ্চ ফলনশীল জাতের আলু চাষে স্থানীয় কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আশানুরূপ ফলনের সম্ভাবনা আছে।

সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, কৃষকের আলু জমিতে পানি সেচ করতে শ্রমিক মজুরী গুনতে হচ্ছে প্রতি কানিতে (১৪০ শতাংশ) ২ হাজার টাকা করে। সমপরিমান জমিতে কীটনাশক স্প্রে করার কাজে ব্যায় হচ্ছে ৫শত’ থেকে ৬শত’ টাকা। নিড়ি কাজে রোজ ৩ বেলা খাবারসহ একজন কৃষি শ্রমিককে মজুরী দিতে হচ্ছে সর্বনিম্ন ৫শত’ টাকা। প্রতি কানি আলু চাষে খরচ পরেছে (এলাকা ভিত্তিক) ১ লাখ থেকে ৩০ হাজার থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। সব খরচ বাদে জমিতে কৃষকের প্রতিমণ উৎপাদিত আলুর দাম ধরা হচ্ছে প্রায় ৪শত টাকার অধিক। খোলা বাজারে আগাম আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা দরে।

কুকুটিয়ার বিবন্দী এলাকার আলম মোল্লা বলেন, গত বছর ১২ কানি জমিতে আলুর চাষ করে ফসলের কাঙ্খিত দাম না পাওয়ায় আমার ১০ লাখ টাকা লোকশান হয়েছে। চলতি বছর মাত্র ২ কানি জমিতে আলুর চাষ করেছি। আলু চাষের প্রথম দিকে জমিতে জলাবদ্ধতায় বিড়ম্বনার শিকার হন তিনি।

আমজাত হোসেন বলেন, কয়েক বছরের আলু চাষে আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি। এখন ঢাকায় অন্য ব্যবসা করছি। বীরতারা এলাকার দয়হাটার গ্রামের কৃষক মো. আজাহার বলেন, ৮ কানি আলুর চাষ করছেন। ভালো ফলনের আশায় জমির যত্ন নিচ্ছি। এখন কীটনাশক স্প্রে করা করছি। গেলো ২ বছর আলু চাষে প্রায় ২০ লাখ টাকা লোকশান হয়েছে। মাথায় দুশ্চিন্তা নিয়ে এবারও এগ্রিমেন্ট জমিতে আলুর চাষ করছি। দেখি ভাগ্যে কি লেখা আছে।

আনন্দবাজার/কআ

সংবাদটি শেয়ার করুন