দেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৫-১৬ বছর বয়সী ২ কোটি ৬০ লাখ শিক্ষার্থীদের এক ডোজ করে কৃমির ওষুধ খাওয়ানো হবে। রবিবার (২২ জানুয়ারি) থেকে শুরু হয়ে এ কর্মসূচি চলবে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, প্রাথম পর্বে ৪৪ জেলায় কৃমিনাশক ওষুধ খাওয়ানো হবে। বাকি ২০ জেলা ও তিন সিটি করপোরেশনে আগামী মার্চে খাওয়ানো হবে। বাকি ২০ জেলা হলো নরসিংদী, মুন্সীগঞ্জ, রাজবাড়ী, চট্টগ্রাম, ফেনী, কুমিল্লা, চাঁদপুর, নাটোর, জয়পুরহাট, বগুড়া, খুলনা, ঝিনাইদহ, নড়াইল, মাগুরা, যশোর, সাতক্ষীরা, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী, লালমনিরহাট ও পঞ্চগড়।
এ কর্মসূচির আওতায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে স্কুলগামী, স্কুল বহির্ভূত, স্কুল থেকে ঝরে পড়া, পথশিশু, কর্মজীবী শিশুসহ সব শিশুকে এক ডোজ কৃমিনাশক ওষুধ বিনামূল্যে খাওয়ানো হবে। সেইসঙ্গে কৃমির পূর্ণসংক্রমণ রোধ করার জন্য শিশুদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন করা হবে বলে জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম।
ডা. নাজমুল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য তুলে ধরে বলেন, কৃমির সংক্রমণ বয়স্ক মানুষের চেয়ে শিশুদের মধেই বেশি হয়ে থাকে। মোট কৃমি সংক্রমণের ৩২ শতাংশই ৫-১৪ বছর বয়সী ও ১৫ শতাংশ ১৫-২৪ বছর বয়সী। এ ছাড়া শূন্য থেকে ৪ বছর বয়সী ৭ শতাংশ, ২৫-৪৪ বছরের ৭ শতাংশ, ৪৫-৫৪ বছরের ৫ শতাংশ ও ৫৫ বছরের বেশি বয়সী ৪ শতাংশ মানুষ সংক্রমিত হচ্ছেন। এই জরিপের ওপর ভিত্তি করেই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শিশুদের মধ্যে কৃমি নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে।
কৃমির কারণে শিশু অপুষ্টিতে আক্রান্ত হয় উল্লেখ্য করে তিনি জানান, কৃমি অন্ত্রে রক্তপাত ঘটিয়ে একদিকে শিশুকে রক্তশূন্য করে, আবার অন্ত্রে পুষ্টি উপাদানের পরিপাক ও শোষণে বাধার সৃষ্টি করে ডায়রিয়া ঘটায়। এভাবে দীর্ঘমেয়াদি সংক্রমণের ফলে শিশুর খাদ্যে অরুচি হয় এবং সে ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ে। এতে শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়।
দেশের প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং প্রায় ৩৩ হাজার মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কৃমিনাশক ওষুধ খাওয়ানো হবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
আনন্দবাজার/কআ