ঢাকা | শুক্রবার
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পশ্চিম তীরে বসতি সম্প্রসারণ শীর্ষ অগ্রাধিকার দিচ্ছে নতুন ইসরায়েলি সরকার

পশ্চিম তীরে বসতি সম্প্রসারণ শীর্ষ অগ্রাধিকার দিচ্ছে নতুন ইসরায়েলি সরকার

ইসরায়েল কর্তৃক ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনকে সর্বচ্চো অগ্রাধিকারের তালিকার রেখেছে কট্টরপন্থি নতুন ইসরায়েলি সরকার। নতুন সরকারের আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ নেওয়ার একদিন আগে তারা এই তথ্য জানিয়েছে।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বুধবার এই তথ্য জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, নেতানিয়াহুর লিকুদ পার্টি বুধবার নতুন সরকারের নীতি নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে। যেখানে প্রথমেই গ্যালিলি, নেগেভ, গোলান হাইটস এবং জুডিয়া ও সামারিয়াসহ ‘ইসরায়েলের ভূখণ্ডে সকল অংশে বসতি সম্প্রসারণ আরও এগিয়ে নেওয়া ও বিকাশের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। মূলত গ্যালিলি, নেগেভ, গোলান হাইটস এবং জুডিয়া ও সামারিয়া অধিকৃত ফিলিস্তিনি পশ্চিম তীরের এলাকা এবং বাইবেলের নামানুসারে ইসরায়েল এসব ফিলিস্তিনি অঞ্চলকে এই নামেই ডেকে থাকে।

প্রতিবেদন বলছে, এই ধরনের প্রতিশ্রুতি নতুন সরকারকে ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্রদের সঙ্গে দেশটিকে সংঘর্ষের পথে ফেলতে পারে। কারণ যুক্তরাষ্ট্রসহ ইসরায়েলের অনেক ঘনিষ্ঠ মিত্রই অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলে বসতি নির্মাণের বিরোধিতা করে থাকে।

উল্লেখ্য, গাজা উপত্যকা এবং পূর্ব জেরুজালেমসহ পশ্চিম তীর ইসরায়েল ১৯৬৭ সালে দখল করে নেয়। যদিও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ পশ্চিম তীরকে তাদের ভবিষ্যৎ স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে চায়।

গত ১ নভেম্বরের নির্বাচনে জয় পায় দেশটির সাবেক কট্টরপন্থি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। ক্ষমতায় যেতে চরম কট্টরপন্থি এবং অবৈধ বসতি স্থাপনের পক্ষে থাকা দলের সঙ্গে জোট বেঁধেছেন তারা। নেতানিয়াহুর জোটে থাকা উগ্রপন্থি এসব দলগুলোর মধ্যে রিলিজিয়াস জায়োনিজম নামে একটি দলও রয়েছে। ইতিহাসে সবচেয়ে ধর্মীয় এবং কট্টরপন্থি অতি-অর্থোডক্স দল হিসেবে পরিচিত নেতানিয়াহুর নতুন এই সরকার। অতি-ডান-আল্ট্রান্যাশনালিস্ট ধর্মীয় উপদল এবং তার লিকুদ পার্টি নিয়ে গঠিত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) এই সরকারের শপথ নেওয়ার কথা রয়েছে।

নেতানিয়াহু একটানা ১২ বছর (২০২১ সাল পর্যন্ত) ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন এবং ওই সময়কালে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলি অবৈধ বসতির রেকর্ড সম্প্রসারণ হয়েছিল। ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে এই ধরনের ইসরায়েলি অবৈধ বসতি আন্তর্জাতিক আইনে বেআইনি বলে বিবেচিত হয় এবং সংকট সমাধানে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের অংশ হিসাবে ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠার প্রতিবন্ধক হিসাবে মনে করা হয়। অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েল কয়েক ডজন ইহুদি বসতি নির্মাণ করেছে এবং সেগুলো এখন প্রায় ৫ লাখ ইসরায়েলির আবাসস্থল।

এছাড়া আনুমানিক ২৫ লাখ ফিলিস্তিনি অধিকৃত পশ্চিম তীরে বাস করে এবং ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী তাদের চলাচল ও গতিবিধি কঠোরভাবে সীমিত করে রেখেছে। নেতানিয়াহুর অধীনে ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেমে সম্ভবত আরও অবৈধ ইসরায়েলি বসতি গড়ে উঠবে বলে যে ধারণা ফিলিস্তিনিদের সেই আশঙ্কাই বুধবারের ঘোষণায় সত্যি হলো।

বাইডেন প্রশাসন বলেছে, তারা অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে বসতি সম্প্রসারণের তীব্র বিরোধিতা করে এবং অতীতে এর জন্য ইসরায়েলি সরকারকে তিরস্কার করেছে। সূত্র: আল জাজিরা

আনন্দবাজার/কআ

সংবাদটি শেয়ার করুন