বুধবার, ৬ই ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ২১শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

খরার সঙ্গে দরপতন

খরার সঙ্গে দরপতন
  • আড়াই বছরের মধ্যে নিম্ন লেনদেন
  • লেনদেন ১৯৮ কোটি টাকা
  • সেরা ডিএসইতে মুন্নু সিরামিক

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল সোমবার সব ধরনের সূচক পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। সূচক পতনের একই অবস্থা অপর পুঁজিবাজার চট্রগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। পতনের এদিন ডিএসইতে লোকসানের লাগাম টানতে শেয়ার বিক্রিতে হিড়িক পড়ে। এদিন ডিএসইতে ক্রেতার তুলনায় সাড়ে পাঁচ বিক্রেতা ছিল। আর সিএসইতে ক্রেতার তুলনায় দ্বিগুন বিক্রেতা ছিল। লেনদেন পরিমাণ ডিএসইতে কমলেও সিএসইতে বেড়েছে। ডিএসইর লেনদেন ১৯৮ কোটি টাকার ঘরে অবস্থান করেছে। এই লেনদেন আড়াই বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম। আর সিএসইতে বেড়ে ২৪ কোটি টাকার ঘরে অবস্থান করেছে।

পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলেন, পুঁজিবাজারের পতন ঠেকাতে চলতি বছরের জুলাই মাসের শেষে শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দিয়েছিল বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। প্রায় ৫ মাসেও পুঁজিবাজার স্বাভাবিক পরিবেশে ফিরতে না পারলেও ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করে নেয় বিএসইসি। ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের পরও পতন রয়েছে। তারই ধারায় গতকাল সোমবার সূচক পতন হয়েছে। এছাড়া টাকার পরিমাণে লেনদেন গত আড়াই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।

স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্র মতে, গত ছয় কার্যদিবস পতনে ডুবে থাকা পুঁজিবাজারে গতকালও সব সূচক কমেছে। এদিন অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে। গতকাল ডিএসইতে ১৯৮ কোটি ৮০ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। এই লেনদেন দুই বছর ৫ মাস ১৯ দিন বা ৬০২ কার্যদিবসের মধ্যে সবচেয়ে কম। এর আগে ২০২০ সালের ৭ জুলাই লেনদেন হয়েছিল ১৩৯ কোটি টাকার। এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১২ দশমিক ৫১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ১৮৯ দশমিক ৬৯ পয়েন্টে। এছাড়া ডিএসই-৩০ সূচক ৩ দশমিক ৫০ পয়েন্ট এবং ডিএসইএস সূচক ৩ দশমিক ৫১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ২ হাজার ১৯১ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ৩৫৪ দশমিক ১২ পয়েন্টে।

আরও পড়ুনঃ  দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উদ্বেগ

গতকাল ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩২৯টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ২৫টি এবং কমেছে ১৩৭টির। শেয়ার পরিবর্তন হয়নি ১৬৭টির। এদিন ডিএসইতে মুন্নু সিরামিকের শেয়ার কেনাবেচায় কদর সবচেয়ে বেশি ছিল। ফলে লেনদেন শীর্ষে কোম্পানিটির শেয়ার স্থান পায়। এদিন মুন্নু সিরামিক ১৭ কোটি ১৫ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।

লেনদেনের শীর্ষ অবস্থানে থাকা এদিন অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে ওরিয়ন ইনফিউশন ১৪ কোটি ৯৯ লাখ টাকা, ইন্ট্রাকো ১১ কোটি ৬৬ লাখ টাকা, ওরিয়ন ফার্মা ১০ কোটি ৪৪ লাখ টাকা, সী পার্ল বিচ ৯ কোটি ৭৬ লাখ টাকা, বসুন্ধরা পেপার ৭ কোটি ২০ লাখ টাকা, এডিএন টেলিকম ৬ কোটি ৫৫ লাখ টাকা, জেনেক্স ইনফোসিস ৫ কোটি ৮৮ লাখ টাকা, এডভেন্ট ৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা এবং মুন্নু এগ্রো এন্ড জেনারেল মেশিনারি ৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।

অপরদিকে, সিএসইতে গতকাল লেনদেন হয়েছে ২৪ কোটি ১৪ লাখ টাকার শেয়ার। আগের কার্যদিবস গত সোমবার ২০ কোটি ৬৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল। এদিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ১৩৭টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ১৯টি, কমেছে ৪১টি এবং পরিবর্তন হয়নি ৭৭টির। এদিন সিএসইর প্রধান সূচক সিএএসপিআই ২৩ দশমিক ৬২ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৩০৩ দশমিক ৮৮ পয়েন্টে। এছাড়া সিএসই-৫০ সূচক দশমিক ১১ পয়েন্ট, সিএসই-৩০ সূচক৩৯ দশমিক ২৯ পয়েন্ট, সিএসসিএক্স সূচক ১৪ দশমিক ৪৬ পয়েন্ট এবং সিএসআই সূচক দশমিক ১৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ৩২০ দশমিক ৮২ পয়েন্টে, ১৩ হাজার ১৭৬ দশমিক ২২ পয়েন্টে, ১০ হাজার ৯৬৬ দশমিক ৯৩ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ১৫৮ দশমিক ১৩ পয়েন্টে ।

আরও পড়ুনঃ  ঋণ পুনঃতফসিলে স্বাগত জানালেন বেসরকারি ব্যাংক মালিকরা

এদিন বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার কেনাবেচায় কদর সবচেয়ে বেশি ছিল। ফলে লেনদেন শীর্ষে কোম্পানিটির শেয়ার স্থান পায়। এদিন বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স ১৫ কোটি ১২ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। লেনদেনের শীর্ষ অবস্থানে থাকা এদিন অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে ইউসিবি ৪ কোটি ২৮ লাখ টাকা, সী পার্ল বিচ ৫০ লাখ টাকা, স্কয়ার ফার্মা ৪৫ লাখ টাকা, ওরিয়ন ফার্মা ৪০ লাখ টাকা, বেক্সিমকো গ্রীন সুকুক ৩৭ লাখ টাকা, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন ২২ লাখ টাকা, এসিআই ফর্মুলেশনস ১৮ লাখ টাকা, বিডি কম ১৫ লাখ টাকা এবং নাভানা ফার্মা ১৩ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন