ঢাকা | শুক্রবার
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাগরে ভাসছে থাকা ২০০ রোহিঙ্গাকে বাঁচাতে আসিয়ানের আহ্বান

সাগরে ভাসছে থাকা ২০০ রোহিঙ্গাকে বাঁচাতে আসিয়ানের আহ্বান

ভারতের আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের কাছাকাছি এলাকার সাগরে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ভাসতে থাকা প্রায় ২০০ রোহিঙ্গাকে বাঁচাতে আহ্বান জানিয়েছে দক্ষিণপূর্ব এশীয় দেশগুলোর জোট আসিয়ান।

মালয়েশিয়াগমী এই নৌকার যাত্রীদের সবাই কক্সবাজার শরণার্থী শিবিরে আশ্রিত ছিলেন। মাঝসাগরে বিপদগ্রস্ত এই রোহিঙ্গাদের বাঁচাতে ভারতীয় মহাসাগরের উপকূলবর্তী চার দেশ থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও ভারতকে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে আসিয়ানের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা আসিয়ান পার্লামেন্টারিয়ানস অব হিউম্যান রাইটস (এপিএইচআর)। এ প্রসঙ্গে সংস্থার পক্ষ থেকে মঙ্গলবার একটি বিবৃতিও দেওয়া হয়েছে।

আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১ ডিসেম্বর দিকে বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার টেকনাফ থেকে নারী ও শিশুসহ ২০০ রোহিঙ্গাকে নিয়ে মালয়েশিয়ার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছিল ইঞ্জিনচালিত নৌকাটি; কিন্তু মালাক্কা প্রণালী পার হয়ে আন্দামান-নিকোবর দ্বীপুঞ্জের কাছাকাছি আসার পর সেটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। ফলে গত তিন সপ্তাহে সেই ইঞ্জিন মেরামত করতে পারেননি নৌকার মাঝি-মাল্লারা। এদিকে টানা ২০ দিন সমুদ্রে ভাসতে থাকা নৌকাটির খাবার ও পানির মজুত শেষ হয়ে গেছে কয়েকদিন আগেই। ক্ষুধা ও পানিশূন্যতায় ইতোমধ্যে কয়েকজন যাত্রীর মৃত্যুও হয়েছে।

দ্য কুইন্ট নিউজের বরাত দিয়ে আলজাজিরা আরো বলছে, রোববার নৌকাটির প্রধান মাঝি তার আত্মীয় এবং কক্সবাজার রোহিঙ্গা শিবিরে আশ্রিত শরণার্থী মোহাম্মদ খান রেজওয়ানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে বলেন, ‘আমরা এখানে মারা যাচ্ছি, আমাদের বাঁচান।’ ফোন পাওয়ার পর রেজওয়ান শরণার্থী শিবির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে এ সম্পর্কে অবহিত করেন।

‘সেখানকার পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক। তাদের খাদ্য-পানি সব ফুরিয়ে গেছে।’ এমনই তথ্য ভারতের দৈনিক দ্য প্রিন্টকে জানান রেজওয়ান।

২০০ মানুষ নিয়ে দিনের পর দিন ধরে একটি নৌকা সমুদ্রে ভাসছে এবং খাবার ও পানির অভাবে সেই নৌকার লোকজন মৃত্যুর প্রহর গুণছে- ন্যূনতম বিবেকসম্পন্ন লোকজনের জন্যও এটা অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক একটি ব্যাপার। এই ক্ষুধার্ত-নিরাশ্রয় লোকজনদের অবহেলা করা মনুষ্যত্বকে অপমান করার শামিল বলে মত প্রকাশ করেন এপিএইচআরের বোর্ডসদস্য ইভা সুন্দারি।

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলেছে, রোহিঙ্গাদের নিশ্চিহ্ন করে দিতে পরিকল্পিতভাবেই তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছিল তাতমাদৌ নামে পরিচিতি মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী।

সৈন্যদের অত্যাচারের মুখে টিকতে না পেরে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমারের আরাকান থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। বাংলাদেশের সরকার জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থাকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে ২০২০ সাল থেকে আর কোনো রোহিঙ্গা শরণার্থীকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়া সম্ভব নয়। ২০১৭ সালে যেসব রোহিঙ্গা শরণার্থী এসেছিল, তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতেও আন্তর্জাতিক তৎপরতা শুরু করেছে বাংলাদেশের সরকার।

আনন্দবাজার/কআ

সংবাদটি শেয়ার করুন