ঢাকা | মঙ্গলবার
১৩ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
৩০শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জলাবদ্ধতায় দুশ্চিন্তা

জলাবদ্ধতায় দুশ্চিন্তা

মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে বোরো মৌসুমকে সামনে রেখে ধান চাষের প্রস্তুতি চলছে। ধানের বীজতলা প্রস্তুত করার পাশাপাশি জমি পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন স্থানীয় কৃষকরা। বিশাল এ কৃষি কর্মযজ্ঞে হাজার হাজার শ্রমিক কৃষি জমিতে কাজ করছেন। তবে এ অঞ্চলে অসংখ্য ফসলিজমিতে দীর্ঘ জলাবদ্ধতায় কৃষকদের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। অপরদিকে উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের মধ্যে আটপাড়া, বীরতারা, তন্তর ও কুকুটিয়া ইউনিয়নে ধান চাষের পাশাপাশি ব্যাপক আলুর চাষ করা হয়। এসব ফসলিজমির পানি নিস্কাশন না হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত আলু চাষিরাও বিপাকে পড়েছেন। গেলো বছর শতশত আলু চাষিরা তাদের ফসলের কাঙ্খিত মূল্য পাননি। এ বছরও নানা প্রতিকূলতা কাটিয়ে জমিতে আলু চাষের স্বপ্ন দেখছেন তারা। তবে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে জলাবদ্ধতা। সিত্রাংয়ের প্রভাবে এ অঞ্চলের ফসলিজমিতে হঠাৎ পানি বৃদ্ধির ফলে বিপাকে পড়েছেন। এমনটাই মনে করছেন ভুক্তভোগীরা।

তারা বলছেন, অপরিকল্পিতভাবে ফসলিজমি ভরাট করা ও গুরুত্বপূর্ণ খালসহ পানি প্রবাহের জন্য নির্মিত সেতু/কালভার্টের মুখ ভরাট ও দখল হয়ে যাওয়ার ফলে দিনদিন এ অঞ্চলে জলাবদ্ধতার শঙ্কা বাড়ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অবৈধভাবে ফসলী জমি ভরাট, খাল দখল ও ভরাট বাণিজ্য বন্ধের জন্য উপজেলা প্রশাসন নজরদারি করছে।

জানা যায়, প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ধান চাষের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন স্থানীয় কৃষকরা। এর মধ্যে আড়িয়াল বিলের শ্রীনগর অংশে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে আগাম ধান চাষের জন্য কৃষক মাঠে কাজ করছেন। এছাড়া এ বছর উপজেলায় প্রায় ২ হাজার ৩শ’ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে। তবে আবাদি জমিতে জলাবদ্ধতায় বিড়ম্বনার শঙ্কা করা হচ্ছে।

সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার কামার খোলা, সমষপুর, পাটাভোগ, বাড়ৈগাঁও, উত্তর কোলাপাড়া, ব্রাহ্মণ পাইশা, কুকুটিয়া, বিবন্দী, পাঁচলদিয়া, রানা-সিন্দুরদী, বনগাঁও, তন্তর, সিংপাড়া, পাড়াগাঁও, তাঁরাটিয়া, হাঁসার গাঁও, বীরতারা, সাতগাঁও, রাঢ়িখাল তিন দোকান, বালাশুর নতুন বাজারসহ বিভিন্ন ধানি জমিতে এখনও হাঁটু কিংবা কোমর পানি জমে থাকতে। এ জলাবদ্ধ পানি যেন সরার কোন রাস্তাই খুঁজে পাচ্ছে না। এ অবস্থায় কৃষি জমি পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে। প্রস্তুত করা হচ্ছে বিভিন্ন ধানের বীজতলা।

শ্রীনগর উপজেলা কৃষি অফিসার শান্তনা রানী এ ব্যাপারে জানান, কৃষি জমির জলাবদ্ধতা নিরসনে মাসিক সমন্বয় সভায় আলোচনা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রতিটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে নিজনিজ এলাকার ফসলিজমির জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য তাগিদ দিয়েছেন। প্রয়োজনে দ্রুত প্রবল্প বাস্তবায়ের জন্য বলা হয়েছে। উপজেলায় চলতি বছর প্রায় ৯ হাজার ৯৬৫ হেক্টর জমিতে ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন