দেশের ৫৭% নারীর প্রাতিষ্ঠানিক আর্থিক সেবার অ্যাকাউন্ট নেই একইসাথে ৮০% নারী কখনও মোবাইল ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলেননি বলে এক গবেষণাপত্র প্রকাশ অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন বক্তারা।
এটুআই এবং লাইটক্যাসেল পার্টনারস-এর যৌথ আয়োজনে সোমবার (১৭ অক্টোবর) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘জেন্ডার ইনক্লুসিভ ফিনান্সিয়াল ইকোসিস্টেম: বাংলাদেশ সিম্পোজিয়াম’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে ‘অ্যাসেসিং দি কারেন্ট ইকোসিস্টেম অব ফিন্যান্সিয়াল প্রোডাক্টস ফর উইম্যান ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রকাশনাটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়। এতে বাংলাদেশে বর্তমান আর্থিক ইকোসিস্টেমে নারীদের অবস্থান তুলে ধরা হয়েছে।
গবেষণায় বলা হয়, বাংলাদেশে বিগত কয়েক বছরে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীদের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি পেয়েছে। উদ্যোক্তা থেকে সেবা খাত এবং প্রাতিষ্ঠানিক-অপ্রাতিষ্ঠানিক বিভিন্ন সেক্টরে নারীরা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন। বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে শ্রমশক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ ৩৫%।
তবে, এখনো নারীরা প্রথাগত পদ্ধতি ব্যবহার করে তাঁদের আর্থিক কার্যক্রম পরিচালনা করে যা সাধারণত অনিরাপদ, ঝুঁকিপূর্ণ ও বেশি ব্যয়বহুল হতে পারে। ফিনডেক্স-২০২১ অনুসারে, বাংলাদেশের ৫৭% নারীর এখনো পর্যন্ত কোনও প্রাতিষ্ঠানিক আর্থিক সেবার অ্যাকাউন্ট নেই এবং ৮০% নারী কখনও মোবাইল ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলেননি।
অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে বাংলাদেশে নারীদের আর্থিক অন্তর্ভূক্তিকরণে করণীয় বিষয়ে প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। নারীবান্ধব আর্থিক সেবা ডিজাইন ও এসকল সেবাসমূহের বহুল প্রচারে সংশ্লিষ্ট রেগুলেটরস, আর্থিক সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাসমূহের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
এটুআই-এর প্রকল্প পরিচালক (যুগ্মসচিব) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর-এর সভাপতিত্বে প্যানেল আলোচনায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) জনাব ফরিদা পারভীন, বাংলাদেশ ব্যাংক-এর নির্বাহী পরিচালক জনাব মোঃ আবুল বশর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হান, ব্যাংক এশিয়া-এর সাবেক প্রেসিডেন্ট ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আরফান আলী, বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার ও ডব্লিউইই-এফআই-এর জেন্ডার অ্যাডভাইজর জনাব স্নিগ্ধা আলী এবং মেঘনা ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক শ্যামল বি. দাশ।
দেশের শীর্ষস্থানীয় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো বর্তমানে নারীদের জন্য বিশেষ কিছু আর্থিক সেবা চালু করেছে। নারীদের জন্য বিশেষ আর্থিক সেবা চালু করা হলেও এখনো পর্যন্ত নারীদের একটা বড় অংশ এর বাইরে রয়েছেন। যার ফলে এসকল আর্থিক সেবার সুফল পেতে তারা ব্যর্থ হচ্ছেন এবং এতে আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে দৃশ্যমান জেন্ডার গ্যাপ থেকে যাচ্ছে। আর্থিক সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের আর্থিক সেবাসমূহকে আরো নারীবান্ধব করা এবং এসকল সেবার বিষয়ে নারীদের সাক্ষরতা বৃদ্ধি করা সরকারের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি কার্যক্রমের একটি অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে এটুআই ও লাইটক্যাসেল পার্টনার্স এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এবং গণমাধ্যমকর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন।
আনন্দবাজার/কআ