শীতের আগমনী বার্তা বইছে প্রকৃতিতে। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে শুরু করেছে কুয়াশা। রাতে কুয়াশার সুবাদে শীত অনুভূত হতে শুরু করেছে। আর সেই শীতের আগমনীতে শীতের সবজি চাষে কৃষকের ব্যস্ততা বেড়েছে মাঠে।
কৃষক কৃষাণির নিবিড় পরিচর্যায় মাঠে মাঠে শোভা পাচ্ছে সবুজের সমারোহ। মাচানে দুলছে শসা, লাউ, কুমড়ার ডগা। বাতাসে দোল খাচ্ছে শিমের লোভনীয় ফুলের ছড়া। ঈশ্বরদী উপজেলায় সবচেয়ে বেশি শিম উৎপাদিত হয় মুলডুলি ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে। সেখানে কৃষাণ কৃষাণিরা সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি শিম গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, অতিরিক্ত পোকা মাকড় দমণে সকাল সন্ধ্যা নানা প্রকার কিটনাশক প্রয়োগে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। এতে করে মাঠের পর মাঠ যেমন শিমের ফুলে ছেয়ে গেছে তেমনি সেই ফুল এবং ফলকে টিকিয়ে রাখতে স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি মাত্রায় বিষ প্রয়োগ করতে হচ্ছে গাছে। এতে করে ওই সবজির পাশাপাশি এলাকার বাতাস ও ভারি হচ্ছে বিষের গন্ধে।
বাঘহাছলা এলাকার শিমচাষি ওলি আকবর বলেন, শিমকে ভালো রাখতে এবং শিমের ভালো ফলন পেতে প্রতিদিন সকাল এবং বিকাল দুই বেলা নিয়মিত কিটনাশক স্প্রে করতে হয়।
পতিরাজপুর এলাকার কৃষক মো. হামিদ বলেন, আমরা কেবল যেদিন শিম তুলব কেবল সেদিন সকালে বিষ দেই না, নইলে প্রতিদিন নিয়ম করে দু-বেলাতেই স্প্রে করি।
রাজাপুর ডিগ্রী কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক রাশিদুল আউয়াল রিজভী বলেন, রাতে বিষ প্রয়োগ করা সবজি সকালে কৃষক নিয়ে আসছে বাজারে। সেই বিষে চোবানো সবজি দুপুরেযোগ হচ্ছে আমাদের খাবার প্লেটে। যাতে করে আমরা আমাদের প্রতি ওয়াক্তের খাবারের সঙ্গে বিষ খাচ্ছি। ফলশ্রুতিতে গ্যাস, হৃদরোগ, ক্যান্সারসহ নানাবিধ রোগ এখন আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী।
তিনি আরও বলেন, ইদানিং খাদ্যের পাশাপাশি শ্বাস প্রশ্বাসের মাধ্যমেও আমাদের শরীরে নানাভাবে এ বিষ প্রবেশ করছে। যত্রতত্র বিষ প্রয়োগের লাগাম যদি আমরা না টানতে পারি তাহলে আমাদের ভবিষৎ প্রজন্মের জন্যেও সেটা হতে পারে ভয়ঙ্কর এবং দুর্বিষহ।
আনন্দবাজার/শহক