বগুড়া জেলার ধুনট উপজেলা ও সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার অর্ধাংশের বেশিরভাগ সবজির যোগান দেয় গোসাইবাড়ি ইউনিয়নের ছোটদিয়ার বাজার থেকে। ভোর ৫টায় শুরু করে ৭টা পর্যন্ত জমজমাট পাইকারি ও খুচরা বেচাকেনা শেষে বাজারের সমাপ্তি হয়। সপ্তাহের প্রতিদিন চলে এ কর্মজজ্ঞ। উপজেলার গোসাইবাড়ি ইউনিয়নের যমুনা নদীর তীরবর্তী ধুনট-গোসাইবাড়ি সড়কের কোল ঘেঁষে ছোটদিয়ার নামক স্থানে বসে এ বাজার।
স্থানীয়দের তথ্যমতে, প্রতিদিন ১৫০ থেকে ২০০ জন চাষি সবজি বিক্রি করেণ এ বাজারে। বাজার চলাকালিন সময়ে গড়ে ৭০ থেকে ৮০ মণ সবজি বিক্রি হয়। বেচাকেনা হয় প্রায় তিন লাখ টাকার। ক্রেতা বা বিক্রেতা কাউকেই দিতে হয়না খাঁজনা। তারা সবাই উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের সবজি চাষি।
স্থানীয়রা আরো জানান, আগে এই ক্রেতা বিক্রেতারা গোসাইবাড়ি বাজারে কেনাবেচা করত। কিন্তু ওই বাজারে অতিরিক্ত খাজনা এবং তোলা আদায় করা হয়। স্থানীয় ক্ষুদ্র সবজিচাষীদের জন্য বিষয়টি কষ্টসাধ্য হয়ে দাড়ায়। ফলে তারা সকলে মিলে উদ্যেগ নিয়ে খাজনামুক্ত এই বাজার গড়ে তোলেন। ধীরে ধীরে এই বাজার ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে।
ছোটদিয়ার বাজারের আব্দুর রহমান বলেন, আমি এই বাজারে বিক্রি হওয়া সবজিগুলো ওজন করে দিই। কৃষকরা জমি থেকে সরাসরি বাজারে আসে তাই তাদের সবজি আমার ডিজিটাল ওজন পরিমাপক মেশিনের মাধ্যমে পরিমাপ করে দেই। ফরে প্রতি কেজি হিসাবে টাকা দেয়। আজ আমার মেশিনে ২০ মণ সবজি ওজন করেছি। আমার মতো আরো তিনজন ওজন মেপে দেই। প্রতিদিন গড়ে ২০-৩০মণ সবজি ওজন করে আমর মেশিনে।
উপজেলার কালেরপাড়া, গোসাইবাড়ি, ভান্ডারবাড়ি,চিকাশী,ও নিমগাছী ইউনিয়ন সহ আশেপাশের বিভিন্ন এলাকায় সবজি চাষ করেন চাষিরা। ফজর নামজের পর থেকে সবজি চাষি জমি থেকে তরতাজা সবজি তুলে নিয়ে কেউ পায়ে হেটে কেউবা ভ্যান সাইকেল যোগে পাইকারি বিক্রি করতে আসেন এই বাজারে। মৌসুমি ও বারোমাসি সব ধরনের সবজি পাওয়া যায় বাজারে। জেলা শহর থেকে শুরু করে আশেপাশের উপজেলা থেকে আসা ব্যাপারিরা পাইকারি এসব সবজি কিনতে আসেন এই বাজারে।ধুনট উপজেলা ও আশেপাশের উপজেলা শহরের সাথে যোগাযোগ ব্যাবস্থা উন্নত থাকায় ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পৌছাতে পারেন গন্তব্যে।
কাজিপুর উপজেলার নাটুয়ারপাড়া থেকে পাইকারি সবজি কিনতে আসা রফিকুল মিয়া জানান,এই বাজারে সবসময় নির্ভেজাল ও টাটকা তরতাজা সবজি পাওয়া যায়,দামেও অনেকটা সহজলভ্য খাজনা ও দিতে হয়না, তাই যমুনার ওপার থেকে এখানে সবজি কিনতে আসি।সবজি বিক্রি করতে আসা চিকাশী গ্রামের লুৎফর রহমানের সাথে কথা বলে যানা যায়, এই বাজারে অনেক দুর দুরান্ত থেকে পাইকার আসে, ভালো দাম ও খুব তারাতারি বিক্রি করতে পারি,কাওকে কোনো খাজনা ও চাঁদা দিতে হয়না।