ঢাকা | সোমবার
৩০শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
১৫ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ধান থেকেই মিনিকেট চাল

ধান থেকেই মিনিকেট চাল
  • নওগাঁয় চাষ হয় মিনিকেট ধান: সংবাদ সম্মেলনে দাবি

ভোক্তাদের চাহিদার প্রথম সারিতেই রয়েছে মিনিকেট চাল। এরপরও এ চাল নিয়ে রয়েছে নানা জল্পনা কল্পনা। সম্প্রতি এ জাতের কোনো ধান নেই বলে জানিয়েছে খাদ্য অধিদপ্তর। খাদ্য বিভাগের এমন মন্তব্যকে নাকচ করে দিয়েছে চালকল মালিক ও ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, নওগাঁয় মিনিকেট নামে ধান আছে। আর সেই ধান থেকে মিনিকেট চাল উৎপাদন হয়। চাল কেটে-ছেঁটে ছোট ও সরু করার ধারণা ভ্রান্ত বলে দাবি করেছেন তারা। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নওগাঁয় ধান্য চাউল আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতির নিজস্ব ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ধান্য চাউল আড়তদার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নিরদ বরন সাহা চন্দন বলেন, ৩০ বছর সময় ধরে বাজারে কমবেশি মিনিকেট চাল আছে। অথচ কখনো কখনো বলা হচ্ছে মিনিকেট নামে কোনো ধান নাই। আমরা দেশের নওগাঁ, নাটোর ও কুষ্টিয়ার বেশ কিছু অঞ্চলে মিনিকেট জাতের ধান পাওয়া যায়। তাহলে এটি কোন ধান?

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, প্রচার করা হচ্ছে ‘মোটা চাউল চিকন করে মিনিকেট চাল হিসাবে বাজারজাত করা হচ্ছে’ বর্তমান সময়ে কথাটি বদলে নতুনভাবে বলা হচ্ছে বি,আর-২৮, বি,আর-২৯ জাতীয় ধানের চাউল সুপার পালিশ করে মিনিকেট চাউল হিসাবে বিক্রি করা হচ্ছে। আমাদের দেশে মোটা বা অন্য জাতের কোনো চাউল বিনামূল্যে পাওয়া যায় না। মোটা চাউল ও সর্বোৎকৃষ্ট মানে শুরু চাউলের (মিনিকেট) বাজার মূল্য পার্থক্য প্রতি কেজি ১৫-১৭ টাকা। বি,আর-২৮ ও বি,আর-২৯ জাতীয় চাউলের দামের পার্থক্য ৭-১০ টাকা প্রতি কেজি।

চালকল মালিকরা আরও বলেন, মোটা চাউল ছাটার মাধ্যমে চিকন করে মিনিকেট চাউল হিসাবে বাজারজাত করা হচ্ছে বাস্তব চিত্রটি এ বক্তব্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। বিভিন্ন সময় সরকারের বিভিন্ন মহল ব্যবসায়ীদের ওপর দায় চাপিয়ে বলেন, মোটা জাতের চাউল কেটে মিনিকেট চাউল তৈরী করা হয়। কিন্তু দেশ-বিদেশে চাউল কাটা কিংবা সরু করার কোন মেশিন আবিষ্কার হয়নি। এভাবে প্রতিনিয়তই ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে কিছু ব্যক্তির স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করছে।

নিরদ বরন সাহা চন্দন অভিযোগ করে বলেন, বলা হয় মিল মালিকরা মজুদ করে চাউলের দাম বৃদ্ধি করছে। আপনারা জানেন চাউল উৎপাদনের কাঁচামাল হচ্ছে ধান। ধানের দাম ও আনুষঙ্গিক উৎপাদন মিলিয়ে চাউলের দাম নির্ধারিত হয়ে থাকে। ধানের দাম বৃদ্ধি পেলে চাউলের দাম স্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায় এটাই বাস্তবতা। সরকারের পর্যায়ে থেকে ভোক্তা পর্যায়ে আমাদের সকলেরই চিন্তা ভাবনা কৃষক তাদের উৎপাদিত ধানের ভালো দাম পাবে।

অপরদিকে চালের দাম সস্তা হবে। আমরা মিল মালিক ও ব্যবসায়ীরা কোন রেশনের দোকান বা দাতব্য খানা খুলি নাই। বর্তমানে চলমান ইরি মৌসুমের শুরুতে ধানের দাম বৃদ্ধি পেতে থাকে। স্বাভাবিক ভাবে চালের দামও বৃদ্ধি পেতে থাকে। এই অবস্থায় খাদ্য বিভাগ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাসহ নিজস্ব জনবল নিয়োগ করে সারাদেশে মিল মালিক ব্যবসায়ীদের গুদামে মজুদ বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে। ফলাফলে দেখা যায় দু-একটি প্রতিষ্ঠান ব্যতীত কোথাও কোনো বাড়তি মজুদ বা অবৈধ মজুদ পায়নি। যা দিয়ে খোলা বাজারে চালের মূল্য নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। তাই চালের দাম উঠানো-নামানোর বিষয়ে বাজার মনিটরিং জোরদারের দাবি জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে বৃহত্তর চাল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বেলকন গ্রুপের মালিক বেলাল হোসেন, জেলা অটোমেটিক মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক তৌফিকুল ইসলামসহ বিশিষ্ট চাল ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, মিনিকেট চাল নিয়ে সরকারের বিভিন্ন মহলের বক্তব্য ও সম্প্রতি একটি পত্রিকায় ‘মোটা চাল কেটে মিনিকেট বানানো হচ্ছে’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদেই এই সংবাদ সম্মেলন ডাকেন নওগাঁর বৃহত্তর ব্যবসায়ীরা।

সংবাদটি শেয়ার করুন