- উচ্চ রক্তচাপ নীরব ঘাতক
উচ্চ রক্তচাপ একটি নীরব ঘাতক। সাধারণত উচ্চ রক্তচাপের কোনো লক্ষ্মণ থাকে না, তবে অনেক মরণঘাতী রোগের কারণ ঘটায়। যেমন- হার্টএটাক, হার্ট ফেইলিউর, স্ট্রোক, চোখের দৃষ্টিশক্তি হারানো, কিডনি ফেইলিউর, রক্তনালির রোগ ইত্যাদি। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) উচ্চ রক্তচাপ ও হাইপার এল্ডোস্টেরনিজম বিষয়ক সচেতনতা মূলক ‘‘স্ক্রিনিং ফর প্রাইমারি অ্যালডোসটেরোনিসমঃ দ্যা লিডিং কস অব সেকেন্ডারি এইচটিএন” একটি বৈজ্ঞানিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ ব্লক মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এন্ডোক্রাইন হাইপারটেনশন স্টাডি গ্রুপ সেমিনারে এসব তথ্য উঠে আসে।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপ এর কোনো কারণ পাওয়া না গেলেও শতকরা ৫-১০ জনের ক্ষেত্রে কারণ নির্ণয় করা যায় এবং এই রোগী পূর্ণ নিরাময়যোগ্য। যাকে সেকেন্ডারি হাইপারটেনশন বলা হয়। সেকেন্ডারি হাইপারটেনশনের এক তৃতীয়াংশ রোগী হাইপার এল্ডোস্টেরনিজম এ আক্রান্ত। যার রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা পদ্ধতি আমাদের দেশে এখনো শুরু হয়নি।
সেমিনারে বলা হয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এন্ডোক্রাইনোলোজি বিভাগ অস্ট্রেলিয়ার মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যৌথভাবে এ সংক্রান্ত গবেষণা কার্যক্রম শুরু করেছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের হৃদরোগ বিভাগ ও এন্ডোক্রাইনোলোজি বিভাগ পৃথক উচ্চ রক্তচাপ ক্লিনিকের মাধ্যমে এ রোগীদের বিশেষ সেবা দিয়ে যাচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে ৩০-৭৯ বছর বয়সী জনগোষ্ঠীর ১.৪ শতাংশ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন, যার দুই তৃতীয়াংশ নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশের জনগণ। উচ্চ রক্তচাপ এর রোগীদের ৪৫ শতাংশই নিয়ন্ত্রণের বাইরে।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, বিএসএমএমইউ রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দানের জন্য বদ্ধপরিকর। রোগীদের সেবার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা দিন দিন বৃদ্ধি পেয়েছে। গবেষণার গুণগতমান বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এ ধরণের সেমিনার বেশ ভূমিকা রাখে।
ডা. শারফুদ্দিন বলেন, বর্তমান সময়ে হাইপার টেনশন রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে হাইপারটেনশনে আক্রান্ত রোগীরা নিজেরাও বুঝতে পারেন না। বুঝলেও সচেতনতার অভাবে তারা দিন দিন মৃত্যুর দিকে ধাবিত হন। হাইপার টেনশনকে একারণে নীরব ঘাতক ব্যাধি বলা হয়ে থাকে। কারণ উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপার টেনশনে লক্ষ্মণ থাকে না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপ এর কোন কারণ পাওয়া না গেলেও শতকরা ৫-১০ জনের ক্ষেত্রে কারণ নির্ণয় করা যায় এবং তাদের রোগ পূর্ণ নিরাময়যোগ্য।
সেমিনারে এন্ডোক্রাইনোলোজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শারমিন জাহান ও হৃদরোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. ফখরুল ইসলাম খালেদ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। সেমিনারের সভাপতিত্ব করেন এন্ডোক্রাইনোলোজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মুহম্মদ আবুল হাসানাত।