ঢাকা | শনিবার
২৪শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
১০ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আড়িয়াল বিলে জীবন

আড়িয়াল বিলে জীবন

আড়িয়াল বিল দেশের মধ্যাঞ্চলের সবচেয়ে বড় ও প্রাচীন বিল হিসেবে পরিচিত। বোরো ধান, মৌসুমী সব আগম শাক সবজি, ডাঙার তাজা মাছ, জীববৈচিত্রময় আড়িয়াল বিল হলো হাজার হাজার মানুষের জীবন জীবিকার অন্যতম মাধ্যম। এছাড়া বর্ষায় ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে আড়িয়াল বিলটি নিজস্ব প্রকৃতিক সৌন্দর্য তুলে ধরছে। বির্স্তীণ আড়িয়াল বিলটি পর্যটকদের কাছে দিনদিন বিখ্যাত হয়ে উঠেছে। বিলজুড়ে শাপলা ফুলের ছড়াছড়ি, সবুজ গাছগাছালি ঘেরা বিশাল ডাঙা/পুকুর, বিভিন্ন পন্থায় জেলেদের মাছ ধরা, বিলের পানিতে পানকৌড়ি, বালি হাঁসসহ অন্যান্য নানান পাখিদের আনাগোনা ও গ্রাম্য পরিবেশ ভ্রমণ পিপাসুদের নজর কাড়ছে। নানা কারণেই আড়িয়াল বিলের জৌলুস ছড়িয়ে পড়ছে চারদিকে। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অসংখ্য মানুষের আগমন হচ্ছে এখানে। ময়ূরপঙ্খী নাউ, ট্রালার ও ডিঙ্গি কোষা নৌকায় করে আড়িয়াল বিল ঘুরে নয়নাভিরাম সৌন্দর্য উপভোগ করছেন তারা। মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা গেছে, আড়িয়াল বিলের সঙ্গে এ অঞ্চলের মানুষের রয়েছে জীবন জীবিকার সম্পর্ক।

উপজেলার গাদিঘাট বাজার, শ্রীনগর দেউলভোগ, আলামপুর, বাড়ৈখালী, শ্রীধরপুর এলাকার বিভিন্ন খালের ঘাটে ও সড়কের পাশে ভ্রমণকারীদের জন্য নৌকা ও ট্রলার অপেক্ষা করছে। ভাড়ায় এসব ট্রলার ও নৌকার মাঝিরা ভ্রমণ ভ্রমণকারীদের নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আলমপুর এলাকায় দেখা যায়, আড়িয়াল বিলে কুড়ানো শাপলা স্থানীয় পাইকারের কাছে বিক্রি করছেন স্থানীয়রা। গুনেগুনে শাপলার আটি পিকআপ ভ্যানে তুলা হচ্ছে। অপরদিকে বিল থেকে কুড়ানো শামুক বস্তাবন্দি করা হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, এসব শামুক খুলনার বিভিন্ন চিংড়ির ঘেরে নিয়ে বিক্রি করা হবে। এছাড়াও আড়িয়াল বিলে অসংখ্য ভেসালে মাছ শিকারের দৃশ্য দেখা গেছে। বিভিন্ন প্রজাতির মিঠা পানির এসব মাছ স্থানীয় রাস্তা ও হাটবাজারে বিক্রি করছেন মৎজীবিরা। মানুষ তাজা টাটকা পছন্দের এসব মাছ কিনে আনন্দ মনে বাড়িতে ফিরছেন। 

নৌকার মাঝিরা জানায়, সারাদিনের জন্য ট্রলার প্রতি ভাড়া নেওয়া হয় ২ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা। অল্প সময়ের জন্যও দরদাম ঠিক করে ভাড়ায় নৌকা ছাড়া হয়। বর্ষা মৌসুমে আড়িয়াল বিলের শ্রীনগর অংশে প্রায় দেড় শতাধিক ছোট বড় নৌকা ভাড়ায় কাজ করে। তবে সপ্তাহের শুক্রবার ও শনিবার ভ্রমণ পিপাসুদের চাপ বেশি থাকে। বর্ষা মৌসুমে এ অঞ্চলের ফসলিজমি পানিতে ডুবে যায়। এতে কৃষিপ্রধান এ অঞ্চলের নিম্নআয়ের মানুষগুলো বিপাকে পড়েন। সম্ভাবনাময় আড়িয়াল বিল এ সময় মানুষের নানাবিধ কর্মসংস্থানের যোগান দিয়ে থাকে। হাজারো মানুষ বিলে ভাড়ায় নৌকা চালান, মৎস্য শিকার, শামুক ও শাপলা কুড়ানোর কাজে জীবন নির্বাহ করে থাকে।

আলিফ, জায়ান, তৌহা, আরমান, জয়াসহ বেশ কয়েকজন ভ্রমণকারী জানায়, তারা ঢাকা থেকে আড়িয়াল বিল ভ্রমণে এসেছেন। তারা গাদিঘাট এলাকা থেকে ট্রলারে করে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত আড়িয়াল বিলে বিভিন্ন স্থান ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তারা এখন ঢাকায় ফিরে যাচ্ছেন। তারা বলেন, আড়িয়াল বিল প্রকৃতির মাঝে তার সৌন্দর্য তুলে ধরেছে। সুযোগ পেলে আবার আসবেন বলেন তারা।

সংবাদটি শেয়ার করুন