- সখীপুর হামিদুলের ভাগ্যবদল
টিলাজুড়ে শুধু আনারস গাছের সারি। প্রতিটি গাছের মাথা উঁচু করে আছে আনারস। সবুজ আর হলুদ আনারসের মিষ্টি গন্ধে মাতোয়ারা বাতাস। এখানকার বাতাসই যেন বয়ে বেড়াচ্ছে আনারস সুমিষ্ট সুভাস। এমন দৃশ্য মিলেছে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কৈয়ামধু গ্রামের হামিদুলের আনারস বাগানে।
২০২০ সালে হামিদুল আত্মীয় বাড়ী বেড়াতেন যান টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলায়। যদিও আনারস চাষে রাজধানী’ নামে খ্যাত মধুপুর। সারি সারি আনারস বাগান দেখে শখ জাগে বাগান করার। বাড়িতে এসে আলোচনা করে উদ্যোগ নেন বাগান সৃজনের। মধুর থেকেই সংগ্রহ শুরু হয় আনারসের চারা। আনারস চাষের কথা শুনে পরিবার ও এলাকাবাসীর তাচ্ছিল্য ছাড়া সহযোগিতা মেলেনি। পৈত্রিক সম্পত্তি ৪ একর এবং নিকট আত্মীয় ২ একর জমি লিজ নিয়ে মোট ৬ একর জমিতে প্রথমে ঝুকিনিয়ে ৬০ হাজার আনারস লাগান।
প্রথম বছরে বাম্পার ফলন হয়েছে। সবুজ আর হলুদ আনারসের মিষ্টি গন্ধে মাতোয়ারা পুরো এলাকা। বাগানের মনোরম দৃশ্য আর সুমিষ্ট আনারসের টানে দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলেই ঢল নামে সেলফিবাজ পর্যটকদের ভিড়। এ বছর প্রায় ৬০ হাজার আনারস বাজার মূল্যে বিক্রি করে ৯ লক্ষ টাকা আয়ের সম্ভাবনা রয়েছে ।
স্থানীয় মাসুদ রানা বলেন, উপজেলা জুড়ে হামিদুলের বিষমুক্ত আনারস বাগানের সুনামও ছড়িয়ে পড়েছে। সফলতা দেখে এখন আমি ভাবছি নিজেদের অনাবাদি টিলায় আনারসের বাগান করাবো।
আনারস চাষি হামিদুল হক জানান, এ উপজেলায় আম, পেয়ারা, মালটা ও কাঁচামরিচ (দাড়িয়াপুরের কাচামরিচ) চাষের জন্য সুনাম থাকলেও আমি আশা করছি এবার বিষমুক্ত আনারস আবাদের জন্য সুনাম ছড়াবে। ৬০ হাজার আনারস চারা লাগাতে আমার সকল খরচ বাবদ লেগেছে প্রায় ১৩ লাখ টাকা। প্রথমবারেই বাম্পার ফলন হয়েছে। বর্তমান বাজারে পাইকারি মূলেবিক্রি করলে আমার প্রায় ৯ লাখ টাকা লাভ হবে। কৃষি অফিস সহযোগিতা করলে আগামীতে আরো জমিতে আনারস চারা করবো।
উপজেলা কৃষি অফিসার নিয়ন্তা বর্মণ বলেন, এ উপজেলার মাটি ফল চাষের জন্য ব্যাপক উপযোগি। কলা, আম, মাল্টা, ড্রাগন আবাদের সঙ্গে এ উপজেলায় নতুন করে যুক্ত হচ্ছে আনারস চাষ। আমরা বিভিন্ন কৃষকদের আনাবাদি উচু জমিতে আনারস চাষে উৎসাহ দিচ্ছি। তবে আমার অনুসন্ধানে এ উপজেলায় হামিদুল প্রথম প্রায় ৬ একর জমিতে উচ্চ ফলনশীল জাংয়ান্ট কিউ জাতের আনারস চাষ করেছেন। ফলন ভাল হয়েছে।