রবিবার, ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশে দেখা দিয়েছে মানবিকতার অভাব

দেশে দেখা দিয়েছে মানবিকতার অভাব
  • পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর জন্য বিনিয়োগ করতে হবে
  • গ্রামে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা হচ্ছে না

বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্বব্যাংক যদিও বলেছে করোনাকালে দরিদ্রতা বাড়েনি তবে বাস্তবতা হচ্ছে দেশে দরিদ্রতা গভীর হয়েছে। কেননা আমি নিজে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল সফর করছি। তাছাড়া অসাধু ব্যবসায়ীদের কারণে বাজারে দাম বাড়ছে। গ্রামে দেখেছি মানুষ কতটা অসহায় হয়ে পড়েছে আয় কমে যাওয়ায় বলে মন্তব্য করেছেন প্রবীণ অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ।

তিনি বলেন, আমরা ১০ বছরে অনেক বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছি। এমনকি করোনাতেও। তবে করোনাকালে অনানুষ্ঠানিকখাতের মানুষ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমাদের অনানুষ্ঠানিক কর্মসংস্থানে মানুষের সংখ্যা ৮৫ ভাগ। আনুষ্ঠানিকখাতে ১৫ শতাংশ সরকারি ও বেসরকারিতে। দেশে কর্মসংস্থানের বড় সংকট। বিশেষ করে শিক্ষিত লোকদের। গ্রামে প্রয়োজন অনুযায়ী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা হচ্ছে না। এজন্য মানবকেন্দ্রীক বহুমাত্রিক ও সমন্বিত উন্নয়ন প্রয়োজন।

বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার অর্থনৈতিক বিষয়ক রির্পোটারদের প্রশিক্ষণ কর্মশালায় সমাপনী অনুষ্ঠানে সম্মানীয় অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

গতকাল শনিবার বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল বারকাতের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলামের সঞ্চালনায় দিনব্যাপী কর্মশালায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সম্মানীয় অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। রাজধানী ঢাকার ইস্কাটনে সমিতির অডিটোরিয়ামে কর্মশালায় ৩৭ জন সাংবাদিক অংশ নেন। বক্তব্য রাখেন কর্মশালার সমন্বয়ব অধ্যাপক ড. জহিরুল ইসলাম সিকদার।

ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, ২০২০-২১ প্রবৃদ্ধি ৭.৫ শতাংশ ও তার আগে ৮ শতাংশের ওপরে হয়েছে। আমাদের পিছিয়ে পড়া বা পিছিয়ে থাকা মানুষের জন্য বিনিয়োগ করতে হবে। কেননা দেশে ৩৬-৩৭ শতাংশ শ্রমিক কৃষিতে ও অতিক্ষুদ্র পেশায় জড়িত। করোনায় মাঝারি ও ক্ষুদ্রশিল্পে ২০ হাজার কোটি প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। সেখানে পিকেএসএফ প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা বিতরণ করেছে। এসব অর্থ প্রকৃত লোকজন পেয়েছে।
তিনি বলেন, কর্মসংস্থানের মাধ্যমে এগিয়ে যেতে হবে। এতে প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তির ব্যবহার করতে হবে। বঙ্গবন্ধু কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ করেছিলেন বর্তমানে তা বৃদ্ধি করা হচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ  লেনদেনের শীর্ষে বেক্সিমকো ফার্মা

ড. খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, আমাদের মূল্যবোধের সমস্যা রয়েছে। কেননা এখন মূল্যবোধ, নৈতিকতা, পরোপকারিতা ও মানবিকতা এসব জিনিসের অভাব দেখা দিয়েছে।

ড. আরেফিন সিদ্দিক বলেন, সত্যের পেছনে থাকা লোকদের শত্রুও বেশি হয়ে থাকে। সবচেয়ে বেশি শত্রুতার শিকার হয় সাংবাদিকরা। যেহেতু তারা সবসময় সত্যানুসন্ধান করতে থাকে। এক্ষেত্রে শহরের চেয়ে মফস্বল সাংবাদিকরা বেশি ঝুঁকিতে থাকে বলে মন্তব্য করেছেন।

ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, বর্তমানে অর্থনীতিবিষয়ক প্রতিবেদন বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। এটি দেশীয় ছাড়াও বৈশ্বিক প্রভাব নির্ভশীল হয়ে পড়ছে। স্বাস্থ্যখাতের বিপর্যয় অর্থনীতিতেও প্রভাব পড়েছে করোনায়। খাদ্যদ্রব্যের ওপর নির্ভর করেই অর্থনীতি ঘোরপাক খায়। কর্মশালায় অধ্যাপক আবুল বারকাত ‘বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং বাংলাাদেশ: সাম্প্রতিক বিষয়াবলী’র ওপর আলোচনা করেন। তিনি বলেন, কোভিড-১৯, যুদ্ধ ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে খাদ্যসংকট বিশ্বের ৫২টি দেশে চলছে। এ অবস্থায় আমাদের ভেবে-চিন্তে এগুতে হবে।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন