ঢাকা | মঙ্গলবার
১৮ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
৪ঠা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পিসিওএস রোগে নারীদের ১০ ভাগ আক্রান্ত

পিসিওএস রোগে নারীদের ১০ ভাগ আক্রান্ত

বিশ্বে প্রতি ১০ নারীর মধ্যে একজন পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম বা পিসিওএস রোগে আক্রান্ত।প্রজনন ক্ষমতাসম্পন্ন ১৫ থেকে ৪৫ বছর বয়সী নারীরা সাধারণত এ রোগে ভুগছেন। আক্রান্তের মধ্যে ১৫ থেকে ২০ বছর বয়সী কিশোরীর সংখ্যাই বেশি। গতকাল বৃহস্পতিবার এক বিএসএমএমইউ সেমিনারে এসব তথ্য উঠে আসে। বাংলাদেশ এন্ড্রোক্রাইন সোসাইটি গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) এ ব্লক অডিটোরিয়ামে বৈজ্ঞানিক সেমিনারের আয়োজন করে। সেখানে এসব তথ্য উঠে আসে।

এর আগে বিএসএমএমইউ পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (পিসিওএস) সচেতনতা মাস উপলক্ষে শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল সাড়ে ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় এ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় পিসিওএস একটি হরমোন জনিত সমস্যা। জানুন, চিকিৎসা নিন।

সেমিনারে বলা হয়, বিশ্বে প্রতি ১০ নারীর মধ্যে একজন পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম বা পিসিওএস রোগে আক্রান্ত। প্রজনন ক্ষমতাসম্পন্ন ১৫ থেকে ৪৫ বছর বয়সী নারীরা সাধারণত এ রোগে ভুগছেন। আক্রান্তের মধ্যে ১৫ থেকে ২০ বছর বয়সী কিশোরীর সংখ্যাই বেশি। দেশে শিশু ও মাতৃমৃত্যুর অন্যতম কারণ এ রোগ। এ ছাড়া ডায়াবেটিস, হেপাটাইটিস-বি, হেপাটাইটিস-সি, বন্ধ্যত্ব, জরায়ু ক্যান্সারসহ দীর্ঘস্থায়ী অসংক্রামক রোগ বাড়াতে বড় ভূমিকা রাখে পিসিওএস। এ পরিস্থিতিতে পিসিওএস নির্মূলে ওজন নিয়ন্ত্রণ, খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনসহ নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন জরুরি বলে মনে করছেন সংশ্নিষ্ট চিকিৎসকরা।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, পিসিওএস নারীর বহুমুখী রোগ সৃষ্টির অন্যতম কারণ। পিসিওএস নিয়ন্ত্রণে দৈহিক ওজন কমানোসহ নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন জরুরি। অনেকে অনেক ধরণের রোগে ভুগেন। কিছু উপসর্গ দেখে সুনির্দিষ্ট পরীক্ষার মাধ্যমে কোনটি পলিসিস্টিক, কোনটি হরমোন জনিত রোগ সেটি জানা যাবে। সে অনুযায়ী চিকিৎসা নিলে সুস্থ হওয়া যাবে। পলিসিস্টিক একটি হরমোন জনিত রোগ। এ রোগের ফলে নারীদের পিরিয়ডের অনিয়মতা, ইনফারলিটি ও বন্ধ্যাত্ব হয়ে থাকে। এটি বহুমাত্রিক রোগের সৃষ্টি করতে পারে। এ রোগটির হরমোন জনিত হলেও জীবনাচার পরিবর্তন করে সুস্থ থাকা যায়।

ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাসেবা ও গবেষণায় আন্তর্জাতিক মানের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। গবেষণায় ভাল করার অনুপ্রেরণা দেবার জন্য আমরা পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছি। ইতোমধ্যে আমরা পিএইচডি গবেষণার জন্য ২৬টি থিসিস পেয়েছি। আমাদের প্যানেল অব এক্সাপার্টরা সেগুলো পরীক্ষা নিরীক্ষা করছেন। আশা করছি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার মান আরো অনেক বৃদ্ধি পাবে ।

সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. জাহিদ হোসেন, উপ উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন, উপ উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, বাংলাদেশ এন্ড্রোক্রাইন সোসাইটির মহাসচিব সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাহজাদা সেলিম ও বাংলাদেশ পিসিওএস টাস্কফোর্সের মহাসচিব সহকারী অধ্যাপক ডা. এবিএম কামরুল হাসান।

প্যানেল অব এক্সাপার্ট হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ এন্ড্রোক্রাইন সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. ফারুক পাঠান, বিশ্ববিদ্যালয়ের এন্ড্রোক্রাইনোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মুহম্মদ আবুল হাসানাত, অধ্যাপক ডা. এস এম আশরাফুজ্জামান, অধ্যাপক ডা. মো.ফরিদ উদ্দিন, মা ও প্রসূতি বিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ডা. রেজাউল করিম কাজল, রেডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মোছা. সাঈদা শওকত , ইউনাইটেট হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট অধ্যাপক ডা. হাফিজুর রহমান।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন