ঢাকা | সোমবার
১৭ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
৩রা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লেনদেন কমেও সুবাতাস

লেনদেন কমেও সুবাতাস
  • ২০০৫ কোটি থেমে নেমে ১৮৮৯
  • দুই স্টকের সূচক উত্থান
  • লেনদেন সেরা বেক্সিমকো

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল বৃহস্পতিবার সব ধরনের সূচক উত্থান হয়েছে। বেড়েছে দুই স্টকের বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার দর। এদিন ডিএসইর লেনদেন ১৯শ’ কোটি টাকার ঘরের কাছাকাছিতে অবস্থান করেছে।

সরকারের নতুন সময় সূচির প্রথম কার্যদিবস গত ২৪ আগস্ট পতন হয়েছিল। যা আগের টানা ছয় কার্যদিবস উত্থানের পর এই মন্দা। পতন পরের গত দুই কার্যদিবস (বৃহস্পতিবার ও রবিবার) ধরে উত্থানে রয়েছিল পুঁজিবাজার। এসময় লেনদেন দুই হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছিলো। পরের দিন গত সোমবার লেনদেনে কিছুটা ভাটা পড়ে। সেই অবস্থান থেকে গত দুই কার্যদিবস লেনদেন বাড়ে। এর মধ্যে গত বুধবার লেনদেন দুই হাজার কোটি টাকা ছাড়ায়। সেখান থেকে গতকাল লেনদেন কিছুটা কমে ১৯শ কোটি টাকার কাছাকাছিতে অবস্থান করেছে। সপ্তাহজুড়ে এধরনের উর্ধ্বমুখী, পুঁজিবাজারের জন্য ইতিবাচক বলে জানিয়েছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

উত্থান পুঁজিবাজার প্রসঙ্গে বিজ্ঞ বিনিয়োগকারীরা বলেন, কিছুদিন আগেও জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি, লোডশেডিংসহ দেশের বিভিন্ন ইস্যুর নেতিবাচক প্রভাব পুঁজিবাজারে পড়েছিল। ফলে পুঁজিবাজার মন্দায় চলে আসে। ওইসময় বিনিয়োগকারীরা তাদের পুঁজি হারিয়ে নিস্তেজ হয়ে পড়ে। সেই অবস্থান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে পুঁজিবাজার। লেনদেনও বাড়ে ডাবল গতিতে। বেড়ে লেনদেন দুই হাজার কোটি টাকা ছাড়ায়। বেড়েছে সূচকসহ অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার দর। এ ধরনের উর্ধ্বগতি পুঁজিবাজার দেখে স্বস্তিতে রয়েছে বিনিয়োগকারীরা। তাদের মধ্যে অনেকেই নতুন করে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ আশা দেখছেন বলেও জানান তারা।

স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্রে জানা যায়, গত ৩১ জুলাই পুঁজিবাজারে বড় উত্থান হয়েছিল। ওইদিন রবিবারের মতো পরেরদিন পুঁজিবাজার উত্থান ছিল। এরপরের তিন কার্যদিবস (মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার) উত্থান ধারা অব্যাহত ছিল। উত্থান কারণে স্বস্তিতে ছিলো বিনিয়োগকারীরা। সেই স্বস্তি পরের চার কার্যদিবসের মন্দায় পুঁজিবাজারের কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল। টানা পতনে ক্রেতার সংখ্যা বহুগুণে হারায়। এরপর গত ছয় কার্যদিবস উত্থানে ফিরে আসলো। উত্থানের পর গত বুধবার পতনে ফিরেছিল পুঁজিবাজার। ওই পতন পরের ছয় কার্যদিবস উত্থানে পুঁজিবাজার।

আরও জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৮৮৯ কোটি ৫২ লাখ টাকার শেয়ার। আগের কার্যদিবস বুধবার লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৫ কোটি ৬৯ লাখ টাকার শেয়ার। এরও আগের মঙ্গলবার লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৭৬৯ কোটি টাকা, সোমবার ১ হাজার ৭৪৪ কোটি টাকা এবং রবিবার ২ হাজার ১০৫ কোটি টাকার শেয়ার। এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫১ দশমিক ৩৯ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৫০৮ দশমিক ৬০ পয়েন্টে।

এর আগে ডিএসইএক্স বাড়ে বুধবার ২৪ দশমিক ৩৮ পয়েন্ট, মঙ্গলবার ২৪ দশমিক ৮৪ পয়েন্ট, সোমবার ৬ দশমিক ১৭ পয়েন্ট এবং রবিবার ৪৬ দশমিক ৭৩ পয়েন্ট। এছাড়া গতকাল ডিএসই-৩০ সূচক ২২ দশমিক ৫৯ পয়েন্ট এবং ডিএসইএস সূচক ১০ দশমিক ৫১ পয়েন্ট বেড়ে যথাক্রমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৩০৫ দশমিক ৮৫ পয়েন্ট এবং ১ হাজার ৪০৯ দশমিক ১৮ পয়েন্টে।

গতকাল ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৮১টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ১৭২টি এবং কমেছে ১৩১টির। শেয়ার পরিবর্তন হয়নি ৭৮টির। এদিন ডিএসইতে বেক্সিমকোর শেয়ার কেনাবেচায় কদর সবচেয়ে বেশি ছিল। ফলে লেনদেন শীর্ষে কোম্পানিটির শেয়ার স্থান পায়। এদিন বেক্সিমকো ১২৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। লেনদেনের শীর্ষ অবস্থানে থাকা এদিন অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে ইস্টার্ন ব্যাংক ৫৫ কোটি ৭৯ লাখ টাকা, ওরিয়ন ইনফিউশন ৫৪ কোটি ৯২ লাখ টাকা, ওরিয়ন ফার্মা ৫৪ কোটি ৪২ লাখ টাকা, ন্যাশনাল পলিমার ৫৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা, লার্ফাজ-হোল্ডসিম ৫০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা, ফরচুন সুজ ৪৭ কোটি ৪৫ লাখ টাকা, জেএমআই হসপিটাল ৪২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন ৪১ কোটি ৮১ লাখ টাকা এবং সাইফ পাওয়ারটেক ৪১ কোটি ৪৬ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।

অপরদিকে সিএসইতে গতকাল বৃহস্পতিবার লেনদেন হয়েছে ৬৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা শেয়ার। আগের কার্যদিবস বুধবার ৭০ কোটি ৬৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল। এরও আগে মঙ্গলবার লেনদেন হয়েছিল ৪২ কোটি ৮৪ লাখ টাকা, সোমবার ৪২ কোটি ২ লাখ টাকা এবং রবিবার ৫৮ কোটি ২৭ লাখ টাকার শেয়ার।

এদিন সিএসইর প্রধান সূচক সিএএসপিআই ১৫০ দশমিক ২৬ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ হাজার ১৫৬ দশমিক ২০ পয়েন্টে। এর আগে সিএএসপিআই বাড়ে বুধবার ১০৭ দশমিক ৬৯ পয়েন্ট, মঙ্গলবার ৬৯ দশমিক ২১ পয়েন্ট, সোমবার ৫ দশমিক ৬১ পয়েন্ট এবং রবিবার ১৮০ দশমিক ৪৪ পয়েন্ট। এছাড়া গতকাল সিএসই-৫০ সূচক ১২ দশমিক ৪১ পয়েন্ট, সিএসই-৩০ সূচক ১৪১ দশমিক ৩৯ পয়েন্ট, সিএসসিএক্স সূচক ৯১ দশমিক ২০ পয়েন্ট এবং সিএসআই সূচক ১০ দশমিক ৯২ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ৩৮৪ দশমিক ৬৮ পয়েন্ট, ১৩ হাজার ৮৪৭ দশমিক ৩৯ পয়েন্টে, ১১ হাজার ৪৮০ দশমিক ৯৭ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ২১৯ দশমিক ৪৭ পয়েন্টে। এদিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩১১টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ১৫০টি, কমেছে ১০৬টি এবং পরিবর্তন হয়নি ৫৫টির।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন