ভারতে এক হাজার পণ্য রপ্তানির সুযোগ থাকলেও বাংলাদেশ কেন মাত্র ২০০-২৫০ পণ্য রপ্তানি করে থাকে? এই প্রশ্নের জবাবে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান এএইচএম আহসান দৈনিক আনন্দবাজারকে বলেন, ভারতের বাজারে মাত্র ২৫টি পণ্য ছাড়া বাকীগুলো ডিউটি ফ্রি। সমস্যা হচ্ছে ভারতের চাহিদা অনুযায়ী আমাদের পণ্য নেই। পণ্য বাড়াতে না পারলে রপ্তানি বাড়বে কীভাবে?
রপ্তানি বৃদ্ধিতে ইপিবি কী কাজ করছে জানতে চাইলে ইপিবি ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, আমরা বিভিন্ন সময় দেশটিতে বাণিজ্যপ্রতিনিধি দল পাঠাচ্ছি। তাদের বাণিজ্যমেলাতে অংশগ্রহণ করছি। একই সঙ্গে আমাদের বাণিজ্যমেলাতেও তাদের অংশগ্রহণ বাড়াতে পারস্পারিকভাবে কাজ করা হয়। সেখানে সভা, সেমিনারের আয়োজন করা হয়ে থাকে। তা ছাড়া আমাদের দেশের ব্যবসায়ীপ্রতিনিধি দলকেও ভারতে পাঠিয়ে বাজার খোঁজার কথা বলা হয়। একইসঙ্গে আমাদের দূতাবাসগুলো সেখানকার বাজারে কি ধরনের পণ্যের চাহিদা আছে তা খোঁজছে।
এএইচএম আহসান বলেন, পাট, পাটজাত পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যসহ ১০-১২টি পণ্যই ভারতে সবচেয়ে রপ্তানি হয়ে থাকে। তবে এখন থেকে নন-ট্রেডিশনাল পণ্য রপ্তানি বৃদ্ধিতে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
ইপিবি সূত্রমতে, ১৯৭২ সালের ১৯ মার্চ ২৫ বছর মেয়াদী ‘ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী, সহযোগিতা ও শান্তি চুক্তি’ মৈত্রী চুক্তি ঢাকায় স্বাক্ষরিত হয়। বাংলাদেশের পক্ষে রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান এবং ভারতের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলেন। ১২ দফাভিত্তিক চুক্তিটি ২৫ বৎসর মেয়াদী হলেও নবায়নযোগ্য ছিল। যার মেয়াদ ১৯৯৭ সালের ১৯ মার্চ শেষ হয়েছে এবং এ চুক্তির আর নবায়ন করা হয়নি।
চুক্তিটির ৫নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, চুক্তি সম্পাদনকারী উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন উভয়পক্ষ অর্থনৈতিক, বৈজ্ঞানিক ও কারিগরি ক্ষেত্রে পারস্পরিক সুবিধা এবং সর্বাত্মক সহযোগিতা শক্তিশালী ও সম্প্রসারিত করে যাবে। উভয় দেশ সমতা, পারস্পরিক সুবিধা এবং সর্বোচ্চ আনুকূল্যপ্রাপ্ত রাষ্ট্রের বেলায় প্রযোজ্য নীতির ভিত্তিতে বাণিজ্য, পরিবহন ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে সহযোগিতা সম্প্রসারিত করবে।
তা ছাড়া ১৯৭৩ সালে ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্যচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্যমতে, ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরে ভারতে রপ্তানি হয়েছে ৩৪৮ কোটি টাকার পণ্য। ১৯৮২-৮৩ অর্থবছরে ৬৮৭, ১৯৯২-৯২ এ ২ হাজার ৩৮৩, ২০০২-৩ অর্থবছরে ৬ হাজার ৫৪৮.৪৪, ২০১২-১৩ অর্থবছরে ২৭ হাজার ২৭.৩৬ ও ২০২০-২১ অর্থবছরে ৫২ হাজার ৮২.৬৬ কোটি টাকার পণ্য ভারতে রপ্তানি হয়েছে।
আনন্দবাজার/শহক