ইউরোপজুড়ে প্রচণ্ড তাপদাহ ও খরার কারণে খাল-বিলের পানির স্তর এতটাই নিচে নেমে গেছে যে, বহুকাল ধরে পানিতে নিমজ্জিত থাকা প্রবাল, পাথর ও জাহাজের ধ্বংসাবশেষ ভেসে উঠতে দেখা যাচ্ছে। ইউরোপে বিগত কয়েক দশকে সবচেয়ে খারাপ খরার সম্মুখীন হয়েছে স্পেন। দেশটির প্রত্নতাত্ত্বিকরা পানির নিচ থেকে সম্প্রতি ‘স্প্যানিশ স্টোনহেঞ্জ’ নামে পরিচিত একটি প্রাগৈতিহাসিক পাথরবৃত্ত ভেসে উঠতে দেখেছেন। অপরদিকে রেকর্ড তাপমাত্রা ও খরার কারণে শুকিয়ে যাচ্ছে চীনের সবচেয়ে বড় মিঠা পানির লেক পোয়াং।
সম্প্রতি তীব্র দাবদাহে অতিষ্ঠ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাধারন জনজীবন। একদিকে গরম অন্যদিকে দাবানলে চরম বিপর্যয়ে মানুষ। ইতোমধ্যে তীব্র খরায় শুকিয়ে গিয়েছে বিভিন্ন দেশের নদ-নদীর পানি। যার ধারাবাহিকতায় শুকিয়ে যাওয়ার পথে চীনের মিঠা পানির সবচেয়ে বড় লেক পোয়াং।
স্যাটেলাইটের তোলা ছবিতে দেখা যায়, চলতি বছরের গত এপ্রিল মাসেও জিয়াংজি প্রদেশে অবস্থিত ৪ হাজার বর্গকিলোমিটার আয়তন থাকা এ লেকটি এ মাসে নেমে এসেছে মাত্র ৬০০ বর্গকিলোমিটারে। যার ফলে পর্যাপ্ত সেচের পানির অভাবে বিপাকে পড়েছেন প্রদেশটির কৃষকসহ সাধারণ মানুষরা।
জিয়াংজি প্রদেশের কৃষকরা বলছেন, লেকের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় আমরা জমিতে সেচ দিতে পারছি না। এ পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পেতে পানির বিকল্প উৎস খুঁজতে হচ্ছে। আমাদের অনেক ফসল এখন নষ্ট হওয়ার পথে রয়েছে।
স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ বলছে, জিয়াংজি চীনের শস্য উৎপাদনকারী প্রদেশের মধ্যে অন্যতম। আর সেচের জন্য তাদের প্রধান উৎস পোয়াং লেকের পানি। তবে খরার কারণে লেকের পানির স্তর এখন অনেকটা তলানিতে। ফলে উৎপাদন ঠিক রাখতে নির্দিষ্ট সময়ে পানি সরবরাহের জন্য কূপ খননের কথা ভাবছেন কৃষকরা।
পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা এমন পরিস্থিতির জন্য জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবকেই দায়ী করছেন। তারা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের মূল্য দিতে হচ্ছে বিশ্বকে। গত কয়েক দশকে আমরা না বুঝেই অনেক কিছু করে ফেলেছি, এখনও করছি। যা থেকে সরে আসা খুবই জরুরি। তা না হলে হয়তো সামনে এর চেয়েও খারাপ অবস্থা মোকাবিলা হতে হবে।