ঢাকা | মঙ্গলবার
২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সারের দ্বিগুণ দামে বিপাকে চাষি

কৃষিবিমুখ হচ্ছেন উত্তরের চাষিরা

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে আমনের ভরা মৌসুমে অনুমোদিত ডিলারদের কাছে গিয়ে সার পাচ্ছেন না কৃষকেরা। এমতাবস্থায় দালালদের কাছ থেকে দ্বিগুণ দামে সার কিনতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। নিয়মিত বাজার নজরদারির অভাবে ব্যবসায়ীরা অসৎ পন্থা অবলম্বনের সুযোগ পাচ্ছেন বলে মনে করেন স্থানীয়রা। তবে তদারকি নিয়মিত করা হচ্ছে বলে দাবি প্রশাসনের।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় মোট ৩৩ জন সারের ডিলার রয়েছেন। এর মধ্যে ৮ ইউনিয়নে ৮ জন বিসিআইসি সার ডিলার এবং অন্য ২৫ জন বিএডিসি সার ডিলার আছেন। মোট সার বরাদ্দ আছে টিএসপি ১৫৮, এমওপি ২৯৪ ও এমপি ১০৪ মেট্রিক টন। অন্যদিকে অভিযোগ রয়েছে, বেশির ভাগ অনুমোদিত ডিলারের নিজস্ব দোকান কিংবা গুদাম নেই। তাঁদের কার্যক্রম পরিচালনা করেন ভাড়া দোকানে বা গুদামে। অনেকেই আবার বছরের পর বছর লাইসেন্স নবায়ন করে অন্যত্র ভাড়া দিয়ে দেন। দীর্ঘদিন ধরে এমনটা চলে এলেও দেখার কেউ নেই।

এ ছাড়া সরকার-নির্ধারিত মূল্যে বাজারে ইউরিয়া ও টিএসপি সার প্রতি বস্তা ১ হাজার ১০০ টাকা, ডিএপি ৮০০ টাকা এবং এমওপি ৭৫০ টাকায় বিক্রির কথা থাকলেও অসাধু ব্যবসায়ীরা কৃষকদের অসহায়ত্বকে পুঁজি করে দেড় থেকে দ্বিগুণ দামে এসব সার বিক্রি করেন।

ভানোর ইউনিয়নের দূর্গাপুর গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, ৭৫০ টাকার এমওপি সার কিনতে হচ্ছে ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকায়। তা-ও আবার রসিদ ছাড়া। রসিদ চাইলে সেখানে সরকার-নির্ধারিত মূল্যই লেখা থাকে। প্রতি বস্তায় ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা অতিরিক্ত নিলেও কৃষকেরা অসহায়।

চাড়োল ইউনিয়নের সাদ্দাম হোসেন বলেন, ভোক্তা অধিকারের অভিযানের আগে হরিণমারী বাজারে এমওপি (পটাশ) সার ১ হাজার ৪০০ টাকা করে বিক্রি হয়।

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবোধ চন্দ্র রায় বলেন, সারসংকট যেন আমন চাষাবাদে ব্যাঘাত সৃষ্টি না করে, সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমরা পুরো টিম মাঠে কাজ করছি। ডিলারদের সার গুদামে ঢুকতে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রতিনিধি উপস্থিত রেখে সেগুলো কৃষকদের মাঝে সরকার-নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা যোবায়ের হোসেন বলেন, ‘কিছু অসাধু ডিলার বাইরে থেকে সার নিয়ে এসে বেশি দামে বিক্রির চেষ্টা করছেন। আমরা নিয়মিত বাজারে অভিযান পরিচালনা করছি। এর মধ্যে কয়েকজন ব্যবসায়ীকে জরিমানার আওতায় আনা হয়েছে। অন্যদের সতর্ক করা হয়েছে। নিয়ম ভাঙলে তাঁদেরও শাস্তির আওতায় আনা হবে।’

সংবাদটি শেয়ার করুন