শেয়ারের ক্রয়মূল্যের ভিত্তিতে পুঁজিবাজারে তফসিলি ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগের পরিমাণ নির্ধারণ চালু হতে যাচ্ছে। এ সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে অর্থমন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। গত মঙ্গলবার আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ একটি চিঠি দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে তাদের সম্মতির কথা জানায়।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উপসচিব মো. জেহাদ উদ্দিন স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, ব্যাংক কোম্পানি আইন,১৯৯১ এর ২৬ক ধারায় ব্যাংক কোম্পানি কর্তৃক অন্য কোনো কোম্পানির শেয়ার ধারণের হিসাবায়নে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের উর্ধসীমা নির্ধারণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্তৃক ক্রয় মূল্যকেই ‘বাজার মূল্য’ হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।
এদিকে, গত ১৭ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংক এক চিঠিতে অর্থমন্ত্রণালয়ের কাছে শেয়ারের বাজার মূল্যের পরিবর্তে ক্রয় মূল্যে ব্যাংকের এক্সপোজার গণনার ব্যাপারে তাদের আগ্রহের কথা জানিয়ে এ বিষয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের মতামত চেয়েছিল। এর প্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এ বিষয়ে তাদের ওই সম্মতির কথা জানায়।
দীর্ঘসময় ধরে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা শেয়ারের বাজারমূল্য, নাকি ক্রয়মূল্যে গণনা হবে সেটি নিয়ে তর্ক-বির্তক চলছিল। বাংলাদেশ ব্যাংক চেয়েছে বাজারমূল্যে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা হিসাব থাকুক। তবে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) চাচ্ছিল ক্রয়মূল্যে এই বিনিয়োগসীমা হিসাব করা হোক। দীর্ঘ তর্ক-বিতর্কের পর নির্ধারন হলো পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ হবে ক্রয়মূল্যে।
বাজারমূল্যে বিনিয়োগসীমা গণনাতে ব্যাংকগুলো দীর্ঘ মেয়াদে বিনিয়োগ করতে পারে না জানিয়ে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলেন, বাজারমূল্যের ভিত্তিতে বিনিয়োগসীমা গণনা হলে শেয়ারের দাম বেড়ে গেলে সেই শেয়ার বিক্রি করে দিতে বাধ্য ব্যাংকগুলো। তবে ক্রয়মূল্যে ভিত্তিতে গণনা করলে শেয়ারের দাম বেড়ে গেলেও তা বিক্রি করতে বাধ্য নয় ব্যাংকগুলো।
এ প্রসঙ্গে গত রবিবার ‘সিএমজেএফ টক উইথ অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, অবশেষে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগের হিসাব বাজার মূল্যের বদলে ক্রয়মূল্যে হচ্ছে। এ বিষয়ে সিদ্ধান্তও হয়েছে। এখন প্রক্রিয়া শেষে শিগগির বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন শিগগিরই জারি করা হবে।
আরও বলেন, পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগের হিসাব সংক্রান্ত বৈঠকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব ছিলেন, আমি ছিলাম, গভর্নর উপস্থিত ছিলেন। আমরা আলাপ-আলোচনা করেই করেছি। এখন যেটা হচ্ছে, সেটা প্রসিডিউর। আমাদের আলোচনা হয়েছে, হয়ে যাবে। আমরা তিনজনই একমত। এই গভর্নর যখন সচিব ছিলেন, তখন ফাইলটা গেছে বাংলাদেশ ব্যাংকে। ওনার সুপারিশ নিয়েই বাংলাদেশ ব্যাংকে ফাইল যায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের ওপরের লেভেল ঠিক ছিল। কারণ ডেপুটি গভর্নর উপস্থিত ছিলেন মিটিংয়ে। কিন্তু ওখানে (বাংলাদেশ ব্যাংক) যাওয়ার পর জুনিয়র অফিসার কেউ হয়তো নেগেটিভ দিয়ে ফাইলটা এমনভাবে করে ছিলেন, যাতে গভর্নর করতে পারেননি। যাই হোক, নতুন গভর্নর আসার দুদিন পরই আমরা ওনার সঙ্গে দেখা করি। তিনি সঙ্গে সঙ্গে ফাইলটি মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছেন। এখন জাস্ট এটা প্রসিডিউরে আছে।