পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ড্রাগন চাষ করে ভাগ্যবদল হয়েছে মোস্তফা জামান নামে এক চাষি। শুধু ড্রাগন চাষ নয় তার বাগানে এখন স্বমন্বিত ফলের বাগানে। কলাপাড়া উপজেলার বালিয়াতলী ইউনিয়নের কানকুনিপাড়া গ্রামের তার বাগানে রয়েছে কলা, লিচু, পেয়ারা, মাল্টা, পেঁপে, এলাচসহ নানান ফলের গাছের সমাহার। এছাড়া বাগানের মধ্যে রয়েছে মাছের ঘের, গরু, দেশি মুরগীর খামার। তার সফলতা দেখে এ ইউনিয়নসহ উপজেলায় একাধিক খামার গড়ে উঠেছে।
ড্রাগন চাষি মোস্তফা জামান জানান, মাত্র চার একর জমিতে তার নিজ বাড়িতে ২০১২ সালে ড্রাগন চাষ শুরু করেন। এরপর ২০১৮ সালে তিনি বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন চাষে সফল হন। বর্তমানে ড্রাগনের এ বাগানটি তিনি সমন্বিত বাগান হিসেবে গড়ে তুলেছেন। তার বাগানে ভিয়েতনামের ড্রাগন (বারি-১) এবং স্থানীয় দেশি প্রজাতির লাল, সাদা, হলুদ এবং গোলাপি এই চার রংয়ের ড্রাগন ফলন দিচ্ছে। এর মধ্যে লাল রংয়ের ড্রাগনের চাহিদা রয়েছে সবচেয়ে বেশি। বর্তমানে আরও ৯টি নতুন প্রজাতির ড্রাগন চারা সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়া কৃষি খামারে সাগর, অগ্নিসাগর, সবরি, মোঁচাবিহীন লাল রংয়ের একাধিক প্রজাতির কলাগাছ রয়েছে। বাগান তৈরির প্রথম দিকে পটুয়াখালী হর্টিকালচার, উপজেলা কৃষি অফিস সহায়তা প্রদান করেছেন বলে তিনি জানান। বাগান তৈরিতে প্রথমে প্রায় দুই লাখ টাকার মতো ব্যয় হয়। কোনো প্রকার রাসায়নিক সার ব্যবহার ছাড়াই আট মাসের মাথায় ফলন আসে। আর সেই ফল বিক্রি করে তিনি লাভের মুখ দেখেছেন। এ বাগান থেকে এখন লাখ লাখ টাকা আয়ের স্বপ্ন দেখছেন।
তিনি আরও জানান, পরিবারের সদস্যদের উৎসাহ উদ্দীপনায় এবং উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে ড্রাগনের এ বাগান গড়ে তুলেছেন। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ ড্রাগন চাষে নূতন উদ্যোক্তাদের সকল ধরনের কারিগরি সহায়তা দিয়েছেন। তার দেখাদেখি এখন অনেক বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।
বালিয়াতলী ইউনিয়নের বাসিন্দা শাহ আলম গাজী জানান, তার এ বাগান আমি ঘুরে দেখেছি। খুব সুন্দর এ বাগানটি। এখানে ড্রাগন ফলের বাগানসহ নানান ধরনের ফলের গাছ রয়েছে। ড্রাগন ফল একটি সুস্বাদু ফল এটি না খেলে জানতাম না।
একই ইউনিয়নের বাসিন্দা মাসুদ হাওলাদার জানান, আমি ড্রাগন ফলটি খেয়েছি। এটি খেতে ভালো ও দেখতে খুবই সুন্দর। আমি ড্রাগন গাছের কার্টি আমার বাড়িতে লাগিয়েছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এ আর এম সাইফুল্লাহ বলেন, ড্রাগন একটি জনপ্রিয় ফল। এ উপজেলা এসএসবি প্রকল্পের আওতায় সাতটি ড্রাগন বাগান গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে মোস্তফা জামানের বাগানটি উল্লেখযোগ্য। আমরা তাকে সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি।