ঢাকা | রবিবার
২৫শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
১১ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ডলার সংকটে ভাটায় রপ্তানি

ডলার সংকটে ভাটায় রপ্তানি

 মাসিক আমদানি ব্যয় ৮ থেকে নেমে ৭ বিলিয়ন ডলার

  • আগামীতে ৬ বিলিয়ন ডলারে ঠেকবে: সালমান এফ রহমান

ডলার সংকটের কারণে রপ্তানি কমে যাচ্ছে। মাসিকভিত্তিকে ৮ বিলিয়ন রপ্তানির জায়গা কমে ৭ বিলিয়নে দাঁড়িয়েছে। এটি আগামীতে ৬ বিলিয়নে এসে ঠেকবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান। তিনি বলেন, শুধু দেশে নয় আন্তর্জাতিকভাবে বেশি লাভের লোভে ডলার সংকট হচ্ছে। মানি এক্সচ্যাঞ্জাররা বেশি লাভের জন্য ডলার জমাচ্ছে। এতে দেশে ও আন্তর্জাতিক বাজারে ডলারে সংকট দেখা দিয়েছে।

গতকাল শুক্রবার রাজধানী ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে উজবেকিস্তানের ডেপুটি প্রাইম মিনিস্টার  জামশেদ কাদজায়েভের সঙ্গে আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকও উপস্থিত ছিলেন। কাজাকিস্তানের পরিবহন মন্ত্রী ইখম মাকামোভ, ফার্স্ট ডেপুটি মিনিস্টার অব ইনভেস্টমেন্ট এন্ড ফরেন লাজিজ কুদরাতোভ, ডেপুটি মিনিস্টার অব ফরেন অ্যাফেয়ার্স ফুরকাত সিদিকোভ, ডেপুটি মিনিস্টার অব এগ্রিকালচার আলিসার সুকোরোভ প্রমুখ।

সালমান এফ রহমান বলেন, বিশ্বের সব দেশেই ডলারের দামের বিপরীতে স্থানীয় মুদ্রার দরপতন হচ্ছে। সেটি বাংলাদেশেও বিদ্যমান। আন্তর্জাতিকভাবে ডলারের চাহিদা বেড়েছে। মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকও জানিয়েছে এখন ডলারের যেভাবে দাম বাড়ছে তাতে আগামীতে তারাই ক্ষতির মুখোমুখি হবে।

তিনি বলেন, সবাই ব্যবসাতে লাভ করতে চায়। এক্ষেত্রে ডলার জমানো দোষের কিছু নয়। কেননা ব্যবসার চিন্তাই হচ্ছে লাভ।

এদিকে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেছেন, অনেক শেয়ার ব্যবসায়ী এখন ডলার ব্যবসায় জড়িত হয়েছেন। ডলার কারসাজিতে যারাই জড়িত থাকুক না কেন, তাদের শক্ত হাতে ধরা দরকার। দেশে ব্যাংকগুলোকে ব্যবসা করার লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে, কিন্তু ১ ডলারে ১০ টাকা মুনাফা করার লাইসেন্স দেওয়া হয়নি। এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৯৪ টাকায় ডলার দেবে, আর অন্যান্য ব্যাংক তা ১০৫-১১০ টাকায় বিক্রি করবে, আমরা তা চাই না।

উল্লেখ্য, ডলারের দাম গত বছর ৩ আগস্ট থেকে বাড়তে শুরু করে। দীর্ঘদিন ৮৪ টাকায় স্থির থাকার পর ২২ আগস্ট ৮৫ টাকা ছাড়ায়। চলতি বছরের ৯ জানুয়ারিতে বেড়ে ৮৬ টাকায় পৌঁছে ২২ মার্চ পর্যন্ত স্থির ছিল। ডলারের দাম বাড়তে থাকায় গত ৩১ মে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলারে ৮৯ টাকা নির্ধারণ করে দেয়। এই দর ৫ দিনও টিকেনি। ৪ জুন দাম বেড়ে দাঁড়ায় ৮৯ টাকা ৯০ পয়সা। ২১ জুলাই আরও ৫০ পয়সা ও ২৬ জুলাই ২৫ পয়সা দাম বেড়ে সর্বশেষ ডলারের বিক্রয় দর দাঁড়ায় ৯৪ টাকা ৭০ পয়সা। বাংলাদেশ ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে এ দরে ডলার বিক্রি করছে। কিন্তু ব্যাংকগুলোতে এবং খোলাবাজারে এ দাম মানা হয়নি কখনও। বৃহস্পতিবার খোলা বাজারে ডলার বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ১১২ টাকায়। ব্যাংকগুলোতেও ডলার বিক্রি হয়েছে ১০৫ টাকায়।

সালমান এফ রহমান বলেন, ২০২১ সালে ৩৩ জন প্রতিনিধি নিয়ে আমরা উজবেকিস্তানে সফরে গিয়েছিলাম। সেখানে ভালো সাড়া পড়েছিল। এ ছাড়া আজকের (শুক্রবার) বৈঠকে টেক্সটাইল, তৈরি পোশাক রপ্তানির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। কেননা এসব তৈরির কাঁচামাল তাদের এখন থেকে আনা যাবে। ফার্মাসি ক্ষেত্রেও বড় বাজার রয়েছে সেখানে। এক্ষেত্রে আমাদের এখান থেকে সরাসরি রপ্তানি অথবা সেখানে কারখানা স্থাপন করে উৎপাদন করে রপ্তানির বিষয়েও কথা হয়েছে।

আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ থেকে আইসিটি সহযোগিতা চাচ্ছে উজবেকিস্তান। কেননা তারা ২টি হাইটেক পার্ক তৈরিতে হাত দিয়েছে। আর আমাদের দেশে ৯২টি হাইটেক পার্কের কাজ শুরু হয়েছে। তারমধ্যে কয়েকটির কাজ শেষও হয়েছে। তিনি বলেন, গ্রামীণ ডিজিটালাইজেশনে আমাদের সহযোগিতা চেয়েছে দেশটি। কথা হয়েছে স্টার্ট-আপের ব্যাপারেও। সালমান এফ রহমান বলেন, বর্তমানের সংকটের কারণে ইউরোপ, জার্মানিতে মূল্যস্ফীতিতে নতুন বাজার নিয়ে চিন্তা করতে হচ্ছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন