সোমবার, ২৩শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৮ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিনিয়োগ ও অর্থনীতি বৃদ্ধিতে দূর হবে সব বাধা

বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বাধাসমূহ দূর করতে একটি জয়েন্ট ওয়াকিং গ্রুপ গঠনে ঐক্যমত হয়েছে বাংলাদেশ-উজবেকিস্তান। একই সঙ্গে দ্রুততম সময়ের মধ্যে চলমান সমস্যাগুলো সমাধানের আশ^াসও দেয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে ২০২৩ সালে উজবেকিস্তানে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, এমপি।

তিনি বলেন, উজবেকিস্তান বাংলাদেশের বন্ধু রাষ্ট্র। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে তাসখন্দ সফর করেছিলেন। উভয় দেশের মানুষের মধ্যে সংস্কৃতি ও ধর্মীয় বিষয়ে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। উজবেকিস্তানের সাথে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির অনেক সুযোগ রয়েছে।
তিনি বলেন, এ সুযোগকে কাজে লাগানোর জন্য ঢাকায় উজবেকিস্তানের একটি দূতাবাস স্থাপনের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে, আশা করা যায় খুব কম সময়ের মধ্যে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাবে। যোগাযোগ সহজ করতে উভয়দেশের মধ্যে আকাশপথ চালুর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তখন মাত্র সাড়ে চার ঘণ্টায় ঢাকা থেকে উজবেকিস্তান যাওয়া যাবে। এখন অনেক ঘুরে প্রায় ১২ ঘণ্টা জার্নি করে সেখানে যেতে হয়।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে উজবেকিস্তান বরাবরই বাংলাদেশের পক্ষে কথা বলেছে, আগামীতের এ সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। ডাবল টেক্সেশন পদ্ধতি উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা। এ বিষয়ে উজবেকিস্তান সরকার পদক্ষে নেয়ার আশ্বাস দিয়েছে, এ সমস্যারও সমাধান হবে। উজবেকিস্তান থেকে সার আমদানি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। চলতি বছরের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং বাণিজ্য ক্ষেত্রে বাধাসমূহ দূর করার জন্য একটি জয়েন্ট ওয়াকিং গ্রুপ গঠন করা হবে এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে চলমান সমস্যাগুলো সমাধান করা হবে। আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে উজবেকিস্তানে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে।

আরও পড়ুনঃ  পর্যটন শিল্পে বিনিয়োগ করবে তুরস্ক

বাণিজ্যমন্ত্রী শুক্রবার (২৯ জুলাই) ঢাকায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত বাংলাদেশ ও উজবেকিস্তানের মধ্যে ‘থার্ড ইন্টারগভার্মেন্টাল কমিশন মিটিং অন ট্রেড এন্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন বিটুইন বাংলাদেশ এন্ড উজবেকিস্তান’ বিষয়ক সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

মিটিংয়ে সাতটি বিষয়ের উপর আলোচনা করা হয়। এগুলো হলো- উভয় দেশে মধ্যে বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক বিষয়, টেক্সটাইল এবং কটন সেক্টর, এগ্রো ফুড এন্ড ফ্রুইটস সেক্টর, ফার্মাসিটিকেল সেক্টর, মিউচ্যুয়াল ট্রেড বেরিযার রিমুভ, মিউচুয়াল এ্যাট্রাকশন অফ ফরেন ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট এবং ট্রান্সপোর্ট সেক্টরে সহযোগিতা বৃদ্ধি। মিটিং শেষে একটি জয়েন্ট স্টেটমেন্ট ঘোষণা করা হয়। এতে বলা হয়, আলোচ্য বিষয়গুলোর উপর উভয় পক্ষের মধ্যে আন্তরিক পরিবেশে আলোচনা করা হয়েছে। উভয় দেশের বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে পদক্ষেপ নিতে উভয় দেশ একমত পোষণ করে। এজন্য যে সকল ট্রেড বেরিয়ার রয়েছে সেগুলো দূর করতে উভয় দেশের সরকার পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। সভায় বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং সক্ষমতা তুলে ধরা হয়। বাংলাদেশের তৈরী পোশাক, ঔষধসহ রপ্তানি পণ্য আমদানি করার জন্য উজবেকিস্থানের প্রতি আহবান জানানো হয়। এছাড়া মেডিকেল পণ্য রপ্তানির বিষয়ে উভয় দেশের মধ্যে একটি এমওইউ স্বাক্ষরের প্রস্তাব দেয়া হয়। উজবেকিস্তান টেকনোলজি ট্রান্সফার, স্কিল ডেভেলপমেন্ট, টেক্সটাইল সেক্টরে ট্রেইনিং একটিভিটিজ এর জন্য প্রস্তাব দেয়। উভয় দেশ এগুলো বাস্তবায়নে আগ্রহ প্রকাশ করে। ঢাকায় উজবেকিস্তানের একটি দূতাবাস স্থাপন এবং আকাশ পথে যোগাযোগ স্থাপনের বিষয়ে উভয় পক্ষ আগ্রহ প্রকাশ করে। মিটিং শেষে উভয় দেশের মধ্যে এ তৃতীয় সভায় কার্যবিবরণী স্বাক্ষর করা হয়।

আরও পড়ুনঃ  দুই স্টক এক্সচেঞ্জেই নতুন এমডি

মিটিংয়ে আগত উজবেকিস্তনের উপ-প্রধানমন্ত্রী জামশেদ কাদজায়েভের নেতৃত্বে ২২ প্রতিনিধি দলে ছিলেন ট্রান্সপোর্ট মিনিস্টার ইখম মাকামোভ, ফার্স্ট ডেপুটি মিনিস্টার অফ ইনভেস্টমেন্ট এন্ড ফরেন ট্রেড লাজিজ কদরাতোভ, ডেপুটি মিনিস্টার অফ এগ্রিকালচার আলিসার সুকোরোভ, ডেপুটি মিনিস্টার অফ ট্রান্সপোর্ট জাসুরবেক ছোরিভ।

বাংলাদেশ পক্ষে ১৫ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি, এমপি। প্রতিনিধি দলে অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি(বিডা) এর নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন, পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রউফ, কৃষি মন্ত্রণাালয়ের সচিব মো. সাঈদুল ইসলাম, উজেকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জাহাঙ্গীর আলম, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যরোর ভাইস-চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) নুসরাত জাবিন বানু , বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি-২) মো. আব্দুর রহিম খানসহ সংশিল্ষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ মিটিং এ যোগদান করেন।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন